
ছবি: প্রতীকী
গর্ভাবস্থায় শরীরে নানা রকমের পরিবর্তন আসে। এ অবস্থায়, খাদ্যাভ্যাসে সচেতন হওয়া অত্যন্ত জরুরি। অনেক সময় মাঝরাতে চিপস খাওয়ার ইচ্ছা হলেও মনে রাখা জরুরি, এই সময় শরীর শুধু নিজের জন্য নয়, গর্ভস্থ সন্তানের সুস্থ বিকাশের জন্যও কাজ করে।
এজন্য খাদ্য তালিকায় এমন উপাদান রাখা জরুরি যা মায়ের শক্তি জোগানোর পাশাপাশি শিশুর সঠিক বৃদ্ধি নিশ্চিত করে। ‘দুজনের জন্য খাওয়া’ মানে কখনোই দ্বিগুণ খাওয়া নয়, বরং দ্বিগুণ সচেতন হওয়া।
গর্ভাবস্থায় খাওয়ার জন্য উপযুক্ত ৮টি পুষ্টিকর খাবারের তালিকা নিয়ে এই নিবন্ধ।
পালং ও অন্যান্য শাকসবজি
শাকসবজি, বিশেষত পালংশাক ফোলেট, আয়রন, ক্যালসিয়াম ও ফাইবারে সমৃদ্ধ। এগুলো গর্ভাবস্থায় শিশুর মস্তিষ্ক ও স্নায়ুতন্ত্রের বিকাশে সহায়ক। পালংশাক ভাজি, পালক পরোটা বা স্মুদি আকারে সহজেই খাদ্যতালিকায় রাখা যায়।
ডাল ও মসুর
ডাল এক প্রকার প্রাকৃতিক প্রোটিনের ভাণ্ডার। এতে থাকে আয়রন, ফোলেট ও ফাইবার। এটি সহজপাচ্য হওয়ায় হজমে সাহায্য করে এবং গর্ভাবস্থায় রক্ত স্বল্পতা রোধে কার্যকর ভূমিকা পালন করে।
টক দই
টক দই ক্যালসিয়াম ও প্রোবায়োটিকে ভরপুর। যা হাড়ের গঠনে সহায়ক ও অন্ত্রের স্বাস্থ্য ঠিক রাখতে গুরুত্বপূর্ণ। এটি বুকজ্বলা কমায় ও গর্ভকালীন অস্বস্তি কমাতে সাহায্য করে। ফল বা সামান্য মধু দিয়ে টক দইকে আরও মজাদার করে তোলা যায়।
কলা
হজমে সহায়ক ও পটাশিয়ামে সমৃদ্ধ কলা গর্ভকালীন ক্র্যাম্প ও পা ফুলে যাওয়া রোধে কার্যকর। এটি দ্রুত খাওয়ার জন্যও উপযোগী। চাইলে দারুচিনি ছিটিয়ে স্বাদের বৈচিত্র্য আনতে পারেন।
বাদাম ও বীজ
আখরোট, কাঠবাদাম বা ফ্ল্যাক্সসিডের মতো বাদাম ও বীজে থাকে ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড, প্রোটিন ও ফাইবার, যা শিশুর মস্তিষ্কের গঠনে সাহায্য করে। এগুলো অল্প পরিমাণে নিয়মিত গ্রহণ করা স্বাস্থ্যকর।
মিষ্টি আলু
বিটা ক্যারোটিন ও ফাইবারসমৃদ্ধ মিষ্টি আলু শিশুর কোষ বৃদ্ধিতে সহায়তা করে এবং রক্তে শর্করার ওঠানামা নিয়ন্ত্রণে রাখে। এটি সিদ্ধ, ভাজা বা কাবাব আকারে খাওয়া যায়।
অ্যাভোকাডো
অ্যাভোকাডোতে রয়েছে স্বাস্থ্যকর ফ্যাট, ফাইবার ও ফোলেট। এটি শিশুর ব্রেইন ও টিস্যুর বিকাশে সহায়ক এবং গর্ভকালীন পটাশিয়ামের ঘাটতি পূরণে কার্যকর। এটি সালাদ, স্মুদি বা টোস্টে মিশিয়ে খাওয়া যায়।
বেরি জাতীয় ফল
স্ট্রবেরি, ব্লুবেরি, রাসবেরির মতো বেরিতে প্রচুর অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট, ভিটামিন ও ফাইবার থাকে। এগুলো রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় ও শরীরকে হাইড্রেট রাখে। বেরি খেতে যেমন সুস্বাদু, তেমন স্বাস্থ্যকরও।
এই খাদ্যগুলি শুধুমাত্র পুষ্টিকর নয়, বরং গর্ভাবস্থার শারীরিক ও মানসিক চাহিদার সঙ্গেও সামঞ্জস্যপূর্ণ। স্বাস্থ্যবান মা ও সুস্থ শিশুর জন্য প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় এই উপাদানগুলি রাখা উত্তম।
তথ্যসূত্র
টাইমস অব ইন্ডিয়া
সুরাইয়া