ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৩ এপ্রিল ২০২৫, ১০ বৈশাখ ১৪৩২

ইউরিক অ্যাসিড কমাতে খাদ্যতালিকায় রাখুন গ্রীষ্মের এই ১০টি ফল!

প্রকাশিত: ১০:৪৮, ২৩ এপ্রিল ২০২৫

ইউরিক অ্যাসিড কমাতে খাদ্যতালিকায় রাখুন গ্রীষ্মের এই ১০টি ফল!

গরমকালে শরীরের পানিশূন্যতা, খাদ্যাভ্যাসে পরিবর্তন ও ঘামের পরিমাণ বেড়ে যাওয়ায় ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রা হঠাৎ করেই বেড়ে যেতে পারে। বিশেষ করে যারা গাউট, জয়েন্টের ব্যথা কিংবা কিডনি সমস্যায় ভুগছেন, তাদের জন্য এটি বড় উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়ায়।

ভাগ্য ভালো, প্রকৃতি আমাদের হাতে এমন কিছু ফল তুলে দিয়েছে, যেগুলো গরমকালেও সহজলভ্য এবং প্রাকৃতিকভাবেই ইউরিক অ্যাসিড নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। চিকিৎসকদের মতে, এই ফলগুলো নিয়মিত খেলে কিডনি সচল থাকে, শরীরের টক্সিন বের হয় এবং ইউরিক অ্যাসিড জমে থাকা প্রতিরোধ হয়।

চলুন জেনে নিই, গরমে ইউরিক অ্যাসিড কমাতে কোন ১০টি ফলকে বলা হচ্ছে প্রকৃতির আশীর্বাদ-

 ১. চেরি – গাউটের বিরুদ্ধে প্রাকৃতিক যুদ্ধ ঘোষণা
চেরির মধ্যে থাকা অ্যান্থোসায়ানিন নামক অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট প্রদাহ কমায় এবং ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রা হ্রাস করে। গাউটের রোগীদের জন্য এটি এক রকম ওষুধসদৃশ।

 ২. তরমুজ – শরীর শীতল করে, টক্সিন বের করে
তরমুজে পানি ও পটাশিয়ামের পরিমাণ বেশি, যা কিডনির কার্যকারিতা বাড়িয়ে শরীর থেকে অতিরিক্ত ইউরিক অ্যাসিড অপসারণে সহায়তা করে। পাশাপাশি এটি শরীর ঠান্ডা রাখতেও দুর্দান্ত।

 ৩. বেরি জাতীয় ফল – ছোট ফল, বড় গুণ
স্ট্রবেরি, ব্লুবেরি কিংবা রাসবেরির মতো ফল অ্যান্টিঅক্সিডেন্টে ভরপুর। এগুলো কিডনি ফাংশন উন্নত করে এবং প্রদাহ রোধ করে ইউরিক অ্যাসিডের প্রভাব কমিয়ে দেয়।

 ৪. আনারস – এনজাইমে সমৃদ্ধ ফল
আনারসে রয়েছে 'ব্রমেলেইন' নামক প্রাকৃতিক এনজাইম, যা প্রদাহ কমায় ও ইউরিক অ্যাসিড গঠন হ্রাসে সহায়তা করে। এটি একাধারে মজাদার ও ওষুধের মতো কার্যকর।

৫. সাইট্রাস জাতীয় ফল – ভিটামিন C এর শক্তি
লেবু, মাল্টা, কমলা—এই জাতীয় ফল ইউরিক অ্যাসিড কমাতে সহায়ক ভিটামিন C এর ভালো উৎস। প্রতিদিন এক গ্লাস লেবুর শরবতই হতে পারে আপনার গাউটের প্রাকৃতিক সুরক্ষা।

 ৬. পেঁপে – হজম ভালো রাখে, কিডনিকে সহায়তা করে
পেঁপেতে রয়েছে প্যাপন নামক এনজাইম, যা হজমে সহায়তা করে ও শরীরের দূষিত পদার্থ অপসারণে সাহায্য করে। এটি ইউরিক অ্যাসিড জমার ঝুঁকি কমায়।

 ৭. আম – রসালো ফল, রোগ প্রতিরোধে সমৃদ্ধ
গ্রীষ্মের রাজা আম শুধু স্বাদের জন্যই নয়, এতে থাকা ভিটামিন A ও C শরীরের প্রদাহ রোধে সাহায্য করে। পরিমিত পরিমাণে খেলে এটি ইউরিক অ্যাসিড কমাতেও উপকারী।

৮. কলা – সহজলভ্য, পটাশিয়ামে ভরপুর
কলা শরীরকে হাইড্রেটেড রাখে, কিডনির কার্যকারিতা বাড়ায় এবং মূত্রনালীর মাধ্যমে ইউরিক অ্যাসিড বের করতে সহায়তা করে। গরমে প্রতিদিন এক থেকে দুইটি কলা খাওয়া যেতে পারে।

 ৯. শসা – শরীর ঠান্ডা করে, ইউরিক অ্যাসিড বের করে
শসায় রয়েছে প্রচুর পানি ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। এটি শরীর ঠান্ডা রাখে এবং ডিউরেটিক হিসেবে কাজ করে, অর্থাৎ প্রস্রাবের মাধ্যমে টক্সিন অপসারণে সহায়ক।

১০. পেয়ারা – শক্তি জোগায়, শরীর পরিষ্কার রাখে
পেয়ারাতে রয়েছে প্রচুর ফাইবার ও ভিটামিন C। এটি শরীরের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় এবং ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে।


ইউরিক অ্যাসিডের সমস্যা এখন শুধু বয়সভিত্তিক নয়, জীবনযাপনের কারণেও এটি দ্রুত বাড়ছে। তাই ওষুধের পাশাপাশি প্রাকৃতিক উপায়ে প্রতিরোধ গড়ুন। প্রতিদিনের ডায়েটে এই ১০টি ফল অন্তর্ভুক্ত করুন, আর শরীরকে দিন সুস্থ ও সচল থাকার সহজ সমাধান।


এই গ্রীষ্মে ফল কিনতে গেলে শুধু স্বাদ নয়, স্বাস্থ্যসচেতনতাও মাথায় রাখুন। ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখুন সুস্থ হৃদয় ও সচল জয়েন্টের জন্য।

 

 

সূত্র:https://tinyurl.com/kee28zb2

আফরোজা

×