
ছবিঃ সংগৃহীত
বর্তমানে অনেক বাবা-মা ব্যস্ততা সামলাতে কিংবা সন্তানকে সাময়িকভাবে শান্ত রাখার জন্য তার হাতে মোবাইল তুলে দেন। বিশেষ করে পাঁচ বছরের নিচে শিশুদের মোবাইল ব্যবহারের প্রবণতা আশঙ্কাজনক হারে বেড়েছে। তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এটি শিশুর মানসিক এবং ভাষাগত বিকাশে মারাত্মক নেতিবাচক প্রভাব ফেলে।
মনোবিজ্ঞানীদের মতে, শিশুর জীবনের প্রথম পাঁচ বছর 'ব্রেন ডেভেলপমেন্ট'-এর জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই সময়কালকে বলা হয় ‘উইন্ডো পিরিয়ড অফ অপারচুনিটি’, অর্থাৎ এমন একটি সুযোগের সময়, যখন শিশু ভাষা শেখে এবং চারপাশের জগৎকে বুঝতে শেখে। এই সময় শিশুরা সাধারণত তার মায়ের কাছ থেকেই ভাষা শেখে। কিন্তু এই বয়সে যদি তাকে মোবাইল বা ট্যাবের মতো ডিভাইস হাতে ধরিয়ে দেওয়া হয়, তাহলে সে তার প্রাকৃতিক ভাষা শেখার সুযোগ হারিয়ে ফেলে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, “ভাষা শেখার একটি নির্দিষ্ট সময়সীমা রয়েছে। যদি সেই নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে শিশুকে ভাষা শেখানো না হয়, তাহলে ভবিষ্যতে তার জন্য ভাষা শেখা কঠিন হয়ে যায়।”
অভিভাবকেরা প্রায়ই দীর্ঘ ভ্রমণের সময় বা অন্য কোনো কাজে ব্যস্ত থাকার অজুহাতে শিশুদের হাতে মোবাইল তুলে দেন। তাদের ধারণা, এতে করে বাচ্চারা বিভিন্ন ভাষার ভিডিও দেখে শেখার সুযোগ পায়। কিন্তু বাস্তবতা হলো, এসব ভিডিওতে একবার বাংলা, একবার ইংরেজি, আবার কখনো হিন্দি বা চাইনিজ ভাষা থাকে—যা শিশুর মনে এক ধরনের বিভ্রান্তি তৈরি করে।
ফলে দেখা যায়, কোনো নির্দিষ্ট ভাষার প্রতি শিশু আগ্রহী হতে পারে না, বরং কখনো চাইনিজ, কখনো হিন্দি ভাষার আওয়াজে সে চিত্কার করে, যা তার স্বাভাবিক বিকাশে বাধা সৃষ্টি করে।
বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ, শিশুর হাতে মোবাইল তুলে না দিয়ে তার সঙ্গে বেশি সময় কাটানো, গল্প বলা, গান শেখানো কিংবা খেলনার মাধ্যমে শেখানোর চেষ্টা করা উচিত। মোবাইল বা ট্যাব নয়—মায়ের কণ্ঠই হোক শিশুর প্রথম শিক্ষক।
ইমরান