ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ২২ এপ্রিল ২০২৫, ৯ বৈশাখ ১৪৩২

‘ব্রেন বুস্টার’ অশ্বগন্ধা! মাত্র এক ডোজেই মস্তিষ্কে ম্যাজিক!

প্রকাশিত: ০৭:৩৪, ২২ এপ্রিল ২০২৫

‘ব্রেন বুস্টার’ অশ্বগন্ধা! মাত্র এক ডোজেই মস্তিষ্কে ম্যাজিক!

টানা ক্লান্তি, মনোযোগে ঘাটতি কিংবা মাথা ঠিকঠাক কাজ না করায় ভুগছেন? আয়ুর্বেদে যার নাম বহু আগে থেকেই পরিচিত,সে অশ্বগন্ধাই এবার বৈজ্ঞানিক গবেষণায় প্রমাণ করল মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা আর মানসিক স্বাস্থ্যে এর তাৎক্ষণিক প্রভাব থাকতে পারে। গবেষকরা বলছেন, মাত্র এক ডোজ খেলেই শুরু হতে পারে পরিবর্তন।


‘নিউট্রিয়েন্টস’ জার্নালে প্রকাশিত এক গবেষণায় বলা হয়েছে, অশ্বগন্ধার মাত্র ২২৫ মিলিগ্রামের একটি মাত্র ডোজ গ্রহণের এক ঘণ্টার মধ্যেই উন্নতি দেখা গেছে তরুণ অংশগ্রহণকারীদের মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা এবং মুডে।

গবেষণাটি পরিচালনা করেছেন মেগান লিওনার্ড ও তার সহকর্মীরা। ৫৯ জন সুস্থ তরুণ-তরুণী অংশ নেন এতে, যাদের গড় বয়স ছিল ২৩ বছর। অংশগ্রহণকারীদের একটি দল প্রতিদিন একটি করে ক্যাপসুলে ২২৫ মিলিগ্রাম লিপোসোমাল অশ্বগন্ধা রুট ও পাতার নির্যাস গ্রহণ করেন। অন্য দলটি পান প্লেসেবো ক্যাপসুল।
সবাইকে একাধিক মানসিক কর্মক্ষমতা ও মুড মূল্যায়ন টেস্টে অংশ নিতে হয়।একবার প্রথম ডোজের এক ঘণ্টা পর, আরেকবার ৩০ দিনের শেষে।


ফলাফলে দেখা যায়, অশ্বগন্ধা গ্রহণকারীরা স্মৃতি, মনোযোগ, সচেতনতা ও মানসিক স্থিতি সংক্রান্ত পরীক্ষায় বেশি নম্বর পেয়েছেন এবং কম অনুভব করেছেন টেনশন ও ক্লান্তি।


অশ্বগন্ধা কীভাবে কাজ করে?
Withania somnifera, অর্থাৎ অশ্বগন্ধা, ভারতের প্রাচীন আয়ুর্বেদিক চিকিৎসা পদ্ধতিতে বহুল ব্যবহৃত একটি উদ্ভিদ। এটি একটি ছোট গুল্মজাতীয় গাছ, যার ফল দেখতে টমেটোর মতো। ‘ইন্ডিয়ান জিনসেং’ নামেও এটি পরিচিত—যদিও জিনসেং পরিবারের সঙ্গে এর কোনো জেনেটিক সম্পর্ক নেই।

অশ্বগন্ধাকে বলা হয় adaptogen, অর্থাৎ এটি শরীরের মানসিক চাপ মোকাবিলা ও ভারসাম্য বজায় রাখতে সাহায্য করে। মূলত এর মূল ও পাতার নির্যাস সাপ্লিমেন্ট আকারে ব্যবহার করা হয়, যা ঘুমের মানোন্নয়ন, স্ট্রেস হ্রাস, শক্তি বৃদ্ধি ও মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা বাড়াতে সহায়ক হিসেবে পরিচিত।

লিপোসোমাল প্রযুক্তিতে তৈরি অশ্বগন্ধা শরীর সহজে গ্রহণ করতে পারে বলে গবেষকদের ধারণা।


গবেষকের পর্যবেক্ষণ ও সাবধানতা
গবেষণাপত্রে বলা হয়েছে "অশ্বগন্ধা সাপ্লিমেন্ট স্মৃতি, মনোযোগ ও নির্বাহী ফাংশন উন্নত করতে পারে এবং মানসিক ক্লান্তি ও চাপ হ্রাসে সাহায্য করতে পারে তরুণ ও সুস্থ মানুষের মধ্যে।"
তবে গবেষণাটি ছিল সীমিত সংখ্যক তরুণ অংশগ্রহণকারীদের ওপর। তাই সব বয়স বা শারীরিক অবস্থার মানুষের জন্য এই ফলাফল প্রযোজ্য হবে কিনা, তা জানতে আরও বিস্তৃত গবেষণার প্রয়োজন রয়েছে।


স্মৃতিশক্তি বাড়াতে, টেনশন কমাতে কিংবা দিনের শুরুটা মানসিকভাবে চনমনে করতে যদি আপনি প্রাকৃতিক সমাধান খুঁজে থাকেন, তাহলে অশ্বগন্ধা হতে পারে একটি সম্ভাবনাময় পথ। তবে যে কোনো সাপ্লিমেন্ট গ্রহণের আগে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়াই সর্বোত্তম।

 

 


সূত্র:https://tinyurl.com/hsn5br9u

আফরোজা

×