
ছবি: প্রতীকী
প্রাচীন গালিলির সাধারণ জীবনযাপন ও খাদ্যাভ্যাস আজকের আধুনিক পুষ্টিবিদদের কাছে এখনো বিস্ময়কর। যীশুখ্রিস্টের সময়কার এই খাদ্যতালিকা, যা মূলত শাকসবজি-নির্ভর ও প্রাকৃতিক উপাদানে সমৃদ্ধ, আধুনিক পুষ্টিবিদ্যার আলোকে তা এখনো সুস্থ জীবনযাপনের আদর্শ হিসেবে বিবেচিত হয়ে আসছে।
শাকসবজি-নির্ভর খাদ্য
যীশুর খাদ্যতালিকার মূল উপাদান ছিল শস্য, ডাল, ফল ও সবজি। এই উপাদানগুলো আঁশ (ফাইবার) ও পুষ্টিতে সমৃদ্ধ, যা হজম প্রক্রিয়া উন্নত করে এবং দীর্ঘস্থায়ী রোগের ঝুঁকি কমায়। এগুলো প্রথম শতাব্দীর ফিলিস্তিনে প্রচলিত ছিল।
প্রধান আমিষ (প্রোটিন): মাছ
গালিলি হ্রদের আশেপাশে অবস্থিত হওয়ায়, মাছ ছিল আমিষের প্রধান উৎস। মাছের মধ্যে ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড বা চর্বিযুক্ত উপাদান এবং উচ্চমানের আমিষ রয়েছে, যা হৃদরোগের ঝুঁকি কমাতে সহায়ক। মাংস তুলে রাখা হতো বিশেষ অনুষ্ঠানের জন্য, যা প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় থাকতো না।
জয়তুন বা অলিভ তেল
অলিভ তেল ছিল যীশুর খাদ্যতালিকায় চর্বির প্রধান উৎস। এটি মনোস্যাচুরেটেড ফ্যাট (এক ধরনের স্বাস্থ্যকর চর্বি) ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্টে সমৃদ্ধ, যা হৃদরোগ ও প্রদাহ কমাতে সহায়ক।
রুটি ও প্রাকৃতিক মিষ্টি
যীশু সাধারণত বার্লি বা গমের রুটি খেতেন, যা শস্যকে পাথরে গুঁড়ো করে তৈরি করা হতো। মিষ্টির জন্য তিনি মধু ও শুকনো ফল ব্যবহার করতেন, যা প্রাকৃতিকভাবে মিষ্টি ও পুষ্টিকর।
প্রক্রিয়াজাত খাদ্যের অনুপস্থিতি
যীশুর সময়ে প্রক্রিয়াজাত খাদ্য ছিল না। তার খাদ্যতালিকা ছিল সম্পূর্ণ প্রাকৃতিক, যা আজকের দিনে স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাসের মডেল হিসেবে বিবেচিত।
মদ্যপান ও সামাজিকতা
পানি ছিল প্রধান পানীয়। চিনি মিশ্রিত কোমল পানীয় বা কফি নয়, কেবল বিশুদ্ধ পানি দিয়ে শরীরের আর্দ্রতা বজায় রাখা হতো। মাঝে মাঝে পানি মিশিয়ে মদ্যপান করা হতো, যা সামাজিক ও ধর্মীয় অনুষ্ঠানে ব্যবহৃত হতো।
যীশুর খাদ্যাভ্যাসে সামাজিকতা এবং ধীরগতিতে খাওয়ার প্রচলন ছিল, যা হজম ও মানসিক স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী।
আধুনিক পুষ্টিবিদরা যীশুর এই খাদ্যাভ্যাসকে স্বাস্থ্যকর খাদ্যতালিকার উদাহরণ হিসেবে দেখেন। যীশুর এই সাধারণ খাদ্যাভ্যাস আমাদের শেখায় যে, প্রাকৃতিক ও সুষম খাদ্যই সুস্থ জীবনের মূল চাবিকাঠি।
সুরাইয়া