
সংগৃহীত
পুষ্টির ঘাটতি পূরণে অনেকেই নির্ভর করছেন ডায়েটারি সাপ্লিমেন্ট বা ভিটামিন-ক্যাপসুলের ওপর। সকালে এক গ্লাস পানি আর কয়েকটি রঙিন ট্যাবলেট শহুরে জীবনে এটা এখন অনেকের দৈনন্দিন অভ্যাসে পরিণত হয়েছে। তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, নিয়ন্ত্রণহীনভাবে এসব সাপ্লিমেন্ট খাওয়ার অভ্যাস আপনার শরীরের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ লিভারের ওপর ভয়াবহ প্রভাব ফেলতে পারে।
ভিটামিন-সাপ্লিমেন্ট কি সত্যিই প্রয়োজন?
যদি আপনি প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় পর্যাপ্ত ভিটামিন, মিনারেল ও প্রাকৃতিক উপাদান না পান, তাহলে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী কিছু সাপ্লিমেন্ট শরীরের পুষ্টি ঘাটতি পূরণে সহায়ক হতে পারে। এগুলো ক্যাপসুল, ট্যাবলেট, তরল, পাউডার কিংবা গামির (চিবিয়ে খাওয়ার) আকারে পাওয়া যায়।
কিন্তু বিপদটা কোথায়?
বিপদ শুরু হয় যখন আপনি নিজের মতো করে বেশি পরিমাণে সাপ্লিমেন্ট খাওয়া শুরু করেন। গবেষণায় দেখা গেছে, যুক্তরাষ্ট্রে লিভার ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার প্রায় ২০ শতাংশ ঘটনার পেছনে রয়েছে অতিরিক্ত সাপ্লিমেন্ট সেবনের কারণ। শরীরের একটি নির্দিষ্ট মাত্রার চেয়ে বেশি ভিটামিন ও মিনারেল গ্রহণ করলে তা পরিণত হয় বিষে, যা ধীরে ধীরে লিভারের কার্যক্ষমতা নষ্ট করে দিতে পারে।
কিভাবে বুঝবেন লিভার আক্রান্ত?
যারা নিয়মিত সাপ্লিমেন্ট নিচ্ছেন, তাদের দেহে কিছু উপসর্গ দেখা দিলে সতর্ক হওয়া জরুরি। যেমন-
বুকের পাঁজরের নিচে ব্যথা, পেট ও পা ফুলে যাওয়া, খাওয়ার ইচ্ছা কমে যাওয়া, ত্বকে চুলকানি, মল হালকা ও প্রস্রাব গাঢ় হওয়া, সহজে রক্ত পড়া বা আঘাতে কালচে হয়ে যাওয়া ইত্যাদি।
এসব উপসর্গ দেখা দিলে সঙ্গে সঙ্গে সাপ্লিমেন্ট খাওয়া বন্ধ করে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।
সব সাপ্লিমেন্ট কি নিরাপদ?
এখানেই সবচেয়ে বড় প্রশ্ন। কারণ অধিকাংশ ডায়েটারি সাপ্লিমেন্ট অনুমোদিত নয়। তাই এর কার্যকারিতা, নিরাপত্তা কিংবা উপাদান নিয়ে সংশয় থেকেই যায়।
এর মানে, আপনি যেটি নির্দ্বিধায় খাচ্ছেন, সেটি কার্যকর না-ও হতে পারে, এমনকি ভেতরে থাকতে পারে এমন কিছু উপাদান, যা লিভার বা শরীরের অন্য অঙ্গের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর।
সঠিক পথে থাকতে হলে প্রথমেই চিকিৎসকের সঙ্গে কথা বলুন। আপনার বয়স, ওজন, ওষুধ তালিকা, অ্যালার্জি ও স্বাস্থ্যসংক্রান্ত তথ্য বিশ্লেষণ করে চিকিৎসকই ঠিক করে দিতে পারবেন আপনি কোন সাপ্লিমেন্ট নেবেন, কতটা নেবেন এবং কিভাবে নেবেন।
অনুমোদিত ডোজ অনুসরণ না করে নিজে নিজে অতিরিক্ত সাপ্লিমেন্ট খাওয়া মানেই নিজের শরীরের সঙ্গে জেনেশুনে বিশ্বাসঘাতকতা করা।
সূত্র:https://tinyurl.com/hm4ny78b
আফরোজা