
হেপাটাইটিস বি একটি মারাত্মক ভাইরাসজনিত রোগ, যা মূলত লিভারে সংক্রমণ ঘটায় এবং ধীরে ধীরে লিভার সিরোসিস কিংবা লিভার ক্যান্সারের মতো জটিল রোগে রূপ নিতে পারে। বাংলাদেশসহ বিশ্বের বহু দেশেই এই রোগ একটি জনস্বাস্থ্য সমস্যা হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, হেপাটাইটিস বি ভাইরাস (HBV) সংক্রমণের পর অনেক সময় কোনো উপসর্গ দেখা যায় না, ফলে আক্রান্ত ব্যক্তি নিজেই বুঝতে পারেন না যে তিনি ভাইরাস বহন করছেন। এজন্য একে "নীরব ঘাতক" বলা হয়ে থাকে।
হেপাটাইটিস বি-এর লক্ষণ:
জ্বর ও দুর্বলতা
ক্ষুধামন্দা
বমিভাব
চোখ ও ত্বকে হলদে ভাব (জন্ডিস)
পেটের ডান পাশে ব্যথা
গা-হাত-পা ব্যথা
সংক্রমণের ঝুঁকি ও কারণসমূহ:
রক্ত বা রক্তজাত পণ্যের মাধ্যমে
যৌন সম্পর্কের মাধ্যমে
ব্যবহৃত সিরিঞ্জ বা সুচের মাধ্যমে
মায়ের দেহ থেকে নবজাতকে
ত্বকে কাটা-ছেঁড়া বা ট্যাটুর মাধ্যমে
বিশেষ করে হাসপাতাল বা ক্লিনিকে জীবাণুমুক্ত না করা যন্ত্রপাতি ব্যবহারের কারণে অনেকেই এই ভাইরাসে আক্রান্ত হন।
প্রতিরোধের উপায়:
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO) হেপাটাইটিস বি-এর বিরুদ্ধে টিকা নেওয়াকে অন্যতম কার্যকর প্রতিরোধ ব্যবস্থা হিসেবে উল্লেখ করেছে। শিশুর জন্মের পর প্রথম ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই এই টিকা দেওয়ার সুপারিশ রয়েছে। এছাড়াও ব্যক্তিগত সচেতনতা, জীবাণুমুক্ত চিকিৎসা সরঞ্জাম ব্যবহার এবং রক্ত পরীক্ষার মাধ্যমে ভাইরাস শনাক্তকরণও গুরুত্বপূর্ণ।
সচেতনতার প্রয়োজন:
স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের মতে, হেপাটাইটিস বি সম্পূর্ণ প্রতিরোধযোগ্য একটি রোগ। তাই এর বিরুদ্ধে লড়াই করতে হলে দরকার জনসচেতনতা ও সময়মতো টিকাদান। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পক্ষ থেকেও দেশব্যাপী টিকাদান কার্যক্রম জোরদার করার আহ্বান জানানো হয়েছে।
একটি নিরাপদ এবং স্বাস্থ্যকর সমাজ গড়তে হলে হেপাটাইটিস বি-এর মতো ভাইরাস প্রতিরোধে আমাদের প্রত্যেককেই সচেতন হতে হবে। মনে রাখতে হবে—“রোগ নিরাময়ের চেয়ে প্রতিরোধই উত্তম।”
রাজু