
ছবিঃ সংগৃহীত
বেশিরভাগ মানুষই কোমরে ব্যথা অনুভব করলেই কিডনির সমস্যার আশঙ্কা করে কিডনি বিশেষজ্ঞের শরণাপন্ন হন। তবে অধ্যাপক ডা. সোহরাব হোসেন সৌরভ স্পষ্ট করে জানিয়েছেন—কোমর ব্যথা মানেই কিডনির ব্যথা নয়।
তিনি বলেন, “অনেকেই কোমরের ব্যথা নিয়ে সরাসরি কিডনির ডাক্তারের কাছে চলে আসেন। হ্যাঁ, কখনো কখনো কোমরের ব্যথা কিডনির সমস্যারও ইঙ্গিত হতে পারে। আমার নিজের একজন ঘনিষ্ঠ আত্মীয়ের ক্ষেত্রেও এমনটা ঘটেছে—তার কোমরে ব্যথা হচ্ছিল, পরে সেরাম ক্রিয়েটিনিন পরীক্ষা করে দেখা গেল ২.৩। অর্থাৎ কিডনি নষ্ট হওয়ার প্রক্রিয়া ইতোমধ্যেই শুরু হয়ে গিয়েছে।”
তবে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই কোমরের ব্যথা কিডনি নয়, বরং মেরুদণ্ড বা মাংসপেশির সমস্যার কারণে হয়ে থাকে।
কোন ব্যথা কীভাবে চিনবেন?
-
যদি দেখা যায় ব্যথা হাঁটলে বা পরিশ্রম করলে বাড়ে, আর বিশ্রামে কমে, তাহলে সেটি সাধারণত হাড় বা মেরুদণ্ডের ব্যথা।
-
অন্যদিকে, যদি পরিশ্রম করলে আরাম লাগে, আর বিশ্রামে, বিশেষত ঘুমের পর সকালে উঠে ব্যথা বেশি হয়, তাহলে বুঝতে হবে সেটা মাংসপেশির ব্যথা।
-
যদি কোমরের ব্যথা পশ্চাৎদেশ দিয়ে নেমে পায়ের পেছনের দিকে ছড়িয়ে পড়ে, তাহলে সেটা সায়াটিক নার্ভের ব্যথা, যা সাধারণত মেরুদণ্ডের ডিস্ক সরার কারণে হয়ে থাকে।
ডা. সৌরভ ব্যাখ্যা করেন, মেরুদণ্ড গঠিত বহু হাড় দিয়ে এবং প্রতিটি হাড়ের মাঝে থাকে একটি করে ডিস্ক বা গদি। এই ডিস্ক সরলে তার ভেতর থেকে বেরিয়ে আসা নার্ভ রুটে চাপ পড়ে এবং প্রচণ্ড ব্যথা সৃষ্টি করে। রুকু বা সিজদার মতো ভঙ্গিতে ব্যথা বেড়ে গেলে সেটাও হতে পারে ডিস্ক সরার ইঙ্গিত।
তাহলে সমাধান কী?
ডা. সৌরভ বলেন, “কোমরের ব্যথা হলে শুধু কিডনি বিশেষজ্ঞের কাছে গেলেই হবে না। ব্যথার ধরন বুঝে কখনো নিউরোসার্জন, কখনো অর্থোপেডিক্স বিশেষজ্ঞ, আবার কখনো ফিজিক্যাল মেডিসিন বিশেষজ্ঞের পরামর্শও নিতে হতে পারে।”
অর্থাৎ, কোমরের একটি সাধারণ ব্যথার পেছনে থাকতে পারে একাধিক সম্ভাব্য কারণ এবং প্রয়োজন হতে পারে চার ধরনের বিশেষজ্ঞের। সঠিক চিকিৎসার জন্য তাই ব্যথার প্রকৃতি বুঝে বিশেষজ্ঞ নির্বাচন করাই সর্বোত্তম পথ।
ইমরান