ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ১৯ এপ্রিল ২০২৫, ৬ বৈশাখ ১৪৩২

শিশুদের অতিরিক্ত ওজন: নতুন প্রজন্মের স্বাস্থ্য ঝুঁকি

প্রকাশিত: ১৬:৪৪, ১৭ এপ্রিল ২০২৫

শিশুদের অতিরিক্ত ওজন: নতুন প্রজন্মের স্বাস্থ্য ঝুঁকি

ছবি সংগৃহীত

শহুরে জীবনের গতানুগতিক ছন্দ ও পরিবর্তিত খাদ্যাভ্যাসের প্রভাবে শিশুদের মধ্যে অতিরিক্ত ওজন বা ওবেসিটি একটি উদ্বেগজনক সমস্যায় রূপ নিচ্ছে। চিকিৎসক ও পুষ্টিবিদদের মতে, শিশুকাল থেকেই এ বিষয়ে সচেতন না হলে ভবিষ্যতে তা ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, হৃদরোগসহ নানা জটিল রোগের ঝুঁকি তৈরি করতে পারে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, শিশুর ওজন বৃদ্ধি মূলত তিনটি প্রধান কারণে হয়ে থাকে—অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস, শারীরিক কর্মকাণ্ডের অভাব এবং মানসিক চাপ।

প্রথমত, বর্তমান প্রজন্মের শিশুদের মধ্যে ফাস্ট ফুড, কোমল পানীয় এবং প্রক্রিয়াজাত খাবারের প্রতি ঝোঁক ব্যাপকভাবে বেড়েছে। এসব খাবারে থাকা অতিরিক্ত চিনি, চর্বি এবং সোডিয়াম শরীরে অতিরিক্ত ক্যালোরি যুক্ত করে ওজন বাড়ায়। অনেক সময় ব্যস্ত অভিভাবকরাও শিশুদের দ্রুত খাওয়ানোর জন্য এসব খাবারের দিকে ঝুঁকেন, যা সমস্যাকে আরও বাড়িয়ে তোলে।

দ্বিতীয়ত, প্রযুক্তির দাপটে শিশুরা দিনে বেশিরভাগ সময় কাটায় টিভি, মোবাইল কিংবা ভিডিও গেমস নিয়ে। বাইরে খেলার সুযোগ ও আগ্রহ কমে যাওয়ায় তাদের শারীরিক সক্রিয়তা উল্লেখযোগ্য হারে হ্রাস পাচ্ছে, যা ওজন বৃদ্ধির পেছনে বড় কারণ।

তৃতীয়ত, মানসিক চাপ—যেমন পড়াশোনার চাপ, পারিবারিক অশান্তি বা বন্ধুবান্ধবের সঙ্গে সমস্যা—শিশুদের খাদ্যাভ্যাসেও নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। অনেক শিশুই মানসিক চাপ মোকাবিলায় অতিরিক্ত খাওয়া শুরু করে, যাকে বলা হয় ‘ইমোশনাল ইটিং’।

বিশেষজ্ঞরা অভিভাবকদের প্রতি পরামর্শ দিয়েছেন, শিশুদের স্বাস্থ্য সচেতন করে তোলার প্রথম দায়িত্ব তাঁদেরই। সুষম ও পুষ্টিকর খাবার নিশ্চিত করা, নির্দিষ্ট সময় ব্যায়াম বা খেলাধুলায় উৎসাহ দেওয়া এবং মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে যত্নশীল হওয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

পুষ্টিবিদদের মতে, দিনে অন্তত এক ঘণ্টা সক্রিয় শারীরিক কার্যকলাপ এবং প্রক্রিয়াজাত খাবারের পরিবর্তে ফলমূল, শাকসবজি, দুধ, ডাল ও গোটা শস্য জাতীয় খাবার খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে। পাশাপাশি শিশুর সঙ্গে সময় কাটানো, তার মানসিক অবস্থা বোঝা ও ইতিবাচক সম্পর্ক গড়ে তোলাও ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখার অন্যতম উপায়।

এসএফ 

সম্পর্কিত বিষয়:

×