ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ১৯ এপ্রিল ২০২৫, ৬ বৈশাখ ১৪৩২

মাথার যন্ত্রণা মানেই মাইগ্রেন নয়, ফারাক বোঝা জরুরি

প্রকাশিত: ২২:০৪, ১৬ এপ্রিল ২০২৫

মাথার যন্ত্রণা মানেই মাইগ্রেন নয়, ফারাক বোঝা জরুরি

ছবি: সংগৃহীত

মাথার যন্ত্রণায় ভোগেন না, এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া দুষ্কর। কিন্তু মাথার যন্ত্রণা মানেই মাইগ্রেন—এই ধারণা পুরোপুরি ঠিক নয়। অনেকেই এই বিভ্রান্তিতে ভোগেন, আর সেখান থেকেই শুরু হয় ভুল চিকিৎসা। চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া নিজের মতো করে ওষুধ খেলে উপকার তো হয়ই না, উল্টে সমস্যাও বাড়ে। অথচ কিছু সাধারণ লক্ষণ মাথায় রাখলেই আলাদা করা যায় মাইগ্রেন এবং অন্যান্য ধরণের মাথাব্যথার পার্থক্য।

কোনটা কোন ধরনের মাথাব্যথা?

টেনশন হেডেক (Tension Headache)

যদি মাথার দুই পাশে বা পিছনের দিক থেকে সামনের দিকে যন্ত্রণা ছড়ায়, তাহলে বুঝবেন এটি টেনশন হেডেক। এই ধরণের ব্যথা সাধারণত চোখের উপর চাপ পড়া, মানসিক চাপ বা দীর্ঘক্ষণ না খেয়ে থাকার ফলে হয়। এটি সবচেয়ে সাধারণ ধরনের মাথাব্যথা।

সাইনাস হেডেক (Sinus Headache)

ঠান্ডা লাগলে, বিশেষ করে নাক বন্ধ হয়ে গেলে এবং মাথা ভারী লাগলে, গাল, নাক ও চোখের পেছনে যন্ত্রণা অনুভূত হয়। ঘুম থেকে উঠে মাথা সামনের দিকে ঝোকালে এই যন্ত্রণা আরও তীব্র হয়। মূলত সাইনাস প্যাসেজ ফুলে গেলে এমনটা ঘটে এবং একে বলা হয় সাইনাস হেডেক।

ক্লাস্টার হেডেক (Cluster Headache)

মাথার একদিকে তীব্র যন্ত্রণা, যা চোখের পাশ থেকে শুরু হয়ে সারা মাথায় ছড়িয়ে পড়ে—এটি ক্লাস্টার হেডেকের লক্ষণ। মনে হয় যেন কেউ বারবার মাথায় আঘাত করছে। এই ব্যথা ঘণ্টার পর ঘণ্টা স্থায়ী হতে পারে এবং দিনে একাধিকবারও দেখা দিতে পারে। একটানা কয়েকদিন নির্দিষ্ট সময়ে হতে পারে এই ব্যথা। মস্তিষ্কে রক্তনালির প্রসারণ, সেরোটোনিন ও হিস্টামিন নিঃসরণের ফলেও এটি হতে পারে। অতিরিক্ত পরিশ্রম, উজ্জ্বল আলো বা উচ্চতার কারণেও ক্লাস্টার হেডেক দেখা দিতে পারে।

মাইগ্রেন (Migraine)

মাইগ্রেন শুধুমাত্র মাথাব্যথা নয়, এটি একটি স্নায়বিক রোগ। মাইগ্রেনের ক্ষেত্রে মস্তিষ্কের কার্যকলাপে পরিবর্তন ঘটে, যা মস্তিষ্কের রক্তনালী এবং আশপাশের টিস্যুকে প্রভাবিত করে। তীব্র মাথাব্যথার পাশাপাশি বমি বমি ভাব, ক্লান্তি, চড়া আলো ও তীব্র গন্ধ অসহনীয় হয়ে ওঠে।

বিশ্বজুড়ে অনেক মানুষ বছরের পর বছর মাইগ্রেনের সঙ্গে লড়াই করে চলেছেন। আমেরিকার ন্যাশনাল ইনস্টিটিউটস অব হেলথের ২০২২ সালের একটি প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, বিশ্বে ১০০ কোটিরও বেশি মানুষ মাইগ্রেনে আক্রান্ত।

চিকিৎসকের পরামর্শ কেন জরুরি?

ঘন ঘন মাথাব্যথা হলে সেটি অবহেলা না করে অবশ্যই চিকিৎসকের শরণাপন্ন হওয়া উচিত। কারণ অনেক সময় সাধারণ মাথাব্যথার আড়ালেও থাকতে পারে গুরুতর স্বাস্থ্য সমস্যা। প্রাথমিকভাবে কিছু লক্ষণ দেখে পার্থক্য বোঝা গেলেও নির্ভরযোগ্য চিকিৎসা নিশ্চিত করতে হলে পেশাদার মতামতই সেরা।

স্মরণে রাখার মতো কথা—মাথাব্যথা এক জিনিস নয়, এটি হতে পারে বহু ধরণের, বহু কারণে। তাই রোগ চিহ্নিত করে সঠিক চিকিৎসা নিন, সুস্থ থাকুন।

সূত্রঃ https://www.facebook.com/share/1FxvjT49Aw/

ইমরান

×