
ছবি: সংগৃহীত
বয়স বাড়া মানেই বেঁচে থাকার আনন্দ শেষ, এমনটি নয়। অনেকেই ৭০-এর পরেও প্রাণোচ্ছল থাকেন। তাদের এই ভালো থাকার পিছনে কিছু কারণ রয়েছে।
অতীতে ডুবে থাকলে বা অতীতকে ধরে রাখলে সেটা আমাদের বর্তমান মুহূর্তের আনন্দ কেড়ে নিতে পারে। কিছু স্মৃতি আমাদের প্রভাবিত করতে পারে। তবে, বর্তমান সময়ে থাকতে এবং "মাইন্ডফুলনেস" বা সচেতন জীবনযাপনের মাধ্যমে শেষ বয়সেও জীবন উপভোগ করতে পারেন। আসুন জেনে নিই সেই বৃদ্ধ বয়সেও হাসিখুশি থাকার রহস্য।
১) অতীতে আটকে থাকা
জীবনে কোনও কিছুর প্রভাব অস্বীকার করার উপায় নেই, বিশেষত যখন বয়স বাড়ে তখন স্মৃতিগুলোও যেন জীবন্ত হয়ে ওঠে।
তবে, ৭০-এর পরেও সুখী জীবন যাপনকারী মানুষেরা অতীতে আটকে থাকেন না।
অতীতে পড়ে থাকলে সেটা আমাদের বর্তমান আনন্দ কেড়ে নিতে পারে। তাই বর্তমানে যা আছে তাই নিয়ে খুশি থাকুন।
২) ক্ষোভ পুষে রাখা
অতীতে পাওয়া ক্ষোভ বা দুঃখবোধ দীর্ঘদিন ধরে আমাদের সুখের বাধা হতে পারে পারে। কিন্তু যারা ৭০-এর পরেও সুখী, তারা সাধারণত ক্ষমা করা এবং আগের ক্ষোভ ঝেড়ে ফেলার উপকারিতা বোঝেন।
৩) শারীরিক স্বাস্থ্যের অবহেলা
সুস্থ শরীর, সুখী জীবনের অন্যতম মূল উপাদান। নিয়মিত শারীরিক কার্যকলাপ যেমন হাঁটা, যোগব্যায়াম, বা বাগান করা আমাদের স্বাস্থ্য ভালো রাখে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, নিয়মিত শরীরচর্চা ৬৫ বছরের উপরেও মানুষের হতাশা, স্নায়ু-জনিত সমস্যা এবং অন্যান্য রোগের ঝুঁকি কমায়।
৪) অহংকার করা
বৌদ্ধ ধর্ম মতে, অহংকার কষ্টের কারণ হতে পারে, আর বিনয় জীবনে শান্তি আনে। যারা ৭০-এর পরেও সুখী, তারা অহংকার ছেড়ে সহজ সরল জীবনযাপন করেন।
৫) নতুন অভিজ্ঞতার প্রতি অনীহা
বয়স বাড়ার সাথে অনেকেই পরিবর্তনের প্রতি ভয় পান, তবে সুখী মানুষরা নতুন অভিজ্ঞতা সহজভাবেই গ্রহণ করেন। তারা বৃদ্ধ বয়সে নতুন অভিজ্ঞতার মধ্যে আনন্দ খোঁজ করেন।
৬) সুখের পিছনে দৌড়ানো
একজন সুখী মানুষ বুঝতে পারেন যে, সুখ একটি লক্ষ্য নয় বরং এটি একটি প্রক্রিয়া। এটি তখনই আসে যখন আমরা জীবনকে অর্থ-পূর্ণভাবে যাপন করি এবং অন্যদের সাথে ভালো সময় কাটাই।
৭) নিজের যত্ন না নেওয়া
নিজের যত্ন নেওয়া কোনও বিলাসিতা নয়; বরং এটি জীবনের একটি অপরিহার্য অংশ। শারীরিক এবং মানসিক স্বাস্থ্যের দিকে খেয়াল রাখা, নিয়মিত ঘুম, ভালো খাবার খাওয়া এবং শারীরিকভাবে সক্রিয় থাকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
৮) যান্ত্রিক জীবন যাপন করা
আপনি যদি ৭০-এর পরেও সুখী হতে চান, তাহলে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অভ্যাস হল জীবনকে যান্ত্রিকভাবে যাপন না করে সাধারণভাবে যাপন করা। জীবনের প্রতিটি অভিজ্ঞতা এবং প্রতিটি মুহূর্ত উপভোগ করতে হবে।
বয়সের প্রত্যেক ধাপে সুখী থাকা এবং সন্তুষ্ট থাকা আমাদের অভ্যাস এবং মনোভাবের উপর নির্ভর করে। বয়স বাড়লেও জীবনকে সুন্দরভাবে উপভোগ করতে হলে অনেক অভ্যাস পরিবর্তন করতে হয়। জীবনকে সম্পূর্ণভাবে উপভোগ করতে, বর্তমানকে ভালোবাসতে, নতুন অভিজ্ঞতা গ্রহণ করতে এবং নিজেকে গুরুত্ব দিতে সঠিক দৃষ্টিভঙ্গি প্রয়োজন।
আবুবকর