
ছবি: সংগৃহীত
কিডনি বা বৃক্ক মানবদেহের এক অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ, যার কাজ রক্ত পরিশোধন, অতিরিক্ত তরল ও বর্জ্য পদার্থ বের করে দেওয়া, এবং শরীরের সোডিয়াম-পটাশিয়াম নিয়ন্ত্রণ করা। তবে অনিয়ন্ত্রিত জীবনযাপন, উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস ও অতিরিক্ত ওষুধ সেবনের কারণে আজকাল কিডনি রোগের হার আশঙ্কাজনকভাবে বাড়ছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, কিছু নিয়ম মেনে চললে কিডনি দীর্ঘদিন সুস্থ ও কর্মক্ষম রাখা সম্ভব। নিচে এমন ৪টি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অভ্যাস তুলে ধরা হলো:
✅ ১. নিয়মিত ও পরিমিত পরিমাণে পানি পান করুন
কিডনির প্রধান কাজ হলো শরীর থেকে টক্সিন বের করে দেওয়া। প্রতিদিন অন্তত ৮-১০ গ্লাস পানি পান করলে কিডনি সহজে বর্জ্য ফিল্টার করতে পারে। তবে যাঁদের কিডনির সমস্যা আছে, তাঁরা চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী পানি পান করবেন। সকালে খালি পেটে এক গ্লাস কুসুম গরম পানি পান করুন—এতে কিডনি ও মূত্রনালী পরিষ্কার থাকে।
✅ ২. রক্তচাপ ও রক্তে চিনির পরিমাণ নিয়ন্ত্রণে রাখুন
উচ্চ রক্তচাপ ও ডায়াবেটিস—দুটি প্রধান কারণ কিডনি ক্ষতির। নিয়মিত রক্তচাপ ও রক্তে গ্লুকোজ পরীক্ষা করুন। ওষুধ, খাদ্যাভ্যাস ও শরীরচর্চার মাধ্যমে নিয়ন্ত্রণে রাখুন।
বিশেষজ্ঞ মত: “ডায়াবেটিস ও হাই প্রেশার নিয়ন্ত্রণে না থাকলে কিডনি দ্রুত নষ্ট হতে পারে।”
✅ ৩. অতিরিক্ত লবণ ও প্রোটিন খাওয়া কমান
লবণ অতিরিক্ত খেলে শরীরে পানি ধরে রাখে, ফলে কিডনির উপর চাপ পড়ে। প্রচুর প্রোটিন (বিশেষত লাল মাংস) কিডনি ফিল্টারিং-এর উপর বাড়তি চাপ সৃষ্টি করে। প্রতিদিনের খাবারে লবণের পরিমাণ সীমিত রাখুন। প্রোটিন খেতে হবে মেপে—ডায়েটিশিয়ানের পরামর্শ অনুযায়ী।
✅ ৪. অপ্রয়োজনে ওষুধ সেবন বন্ধ করুন
ব্যথানাশক (Painkillers), স্টেরয়েড, অ্যান্টিবায়োটিক—এইসব ওষুধ বেশি খেলে কিডনির কোষ নষ্ট হয়।
চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া কোনো ওষুধ খাবেন না।
ঘন ঘন ওষুধ না খেয়ে বিকল্প পদ্ধতি চেষ্টা করুন (যেমনঃ ব্যথা হলে গরম পানির ব্যাগ ব্যবহার)।
কিডনি চুপচাপ কাজ করলেও একবার ক্ষতিগ্রস্ত হলে তা আর সহজে সারানো যায় না। তাই এখন থেকেই সচেতন হন—এই ৪টি অভ্যাস গড়ে তুলুন, আর রাখুন আপনার কিডনিকে দীর্ঘমেয়াদে সুস্থ ও কর্মক্ষম।
ফারুক