ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ১৬ এপ্রিল ২০২৫, ২ বৈশাখ ১৪৩২

কোলেস্টেরল বেড়ে গেলে যেসব লক্ষণে সাবধান হবেন

প্রকাশিত: ১২:২০, ১৫ এপ্রিল ২০২৫

কোলেস্টেরল বেড়ে গেলে যেসব লক্ষণে সাবধান হবেন

ছবি: সংগৃহীত

শরীরে কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে না থাকলে তা হতে পারে মারাত্মক বিপদের কারণ। বিশেষ করে LDL বা ‘খারাপ কোলেস্টেরল’ বেড়ে গেলে হৃদ্‌রোগ, স্ট্রোক, হার্ট অ্যাটাক, ব্লকেজের ঝুঁকি অনেকাংশে বেড়ে যায়।

তবে অনেকেই বুঝতে পারেন না কখন কোলেস্টেরল বেড়ে গেছে। তাই কিছু শারীরিক লক্ষণ দেখা দিলেই সাবধান হওয়া জরুরি। সময়মতো ব্যবস্থা না নিলে পরিস্থিতি হাতের বাইরে চলে যেতে পারে।

নিচে কোলেস্টেরল বৃদ্ধির কিছু সাধারণ ও গুরত্বপূর্ণ উপসর্গ তুলে ধরা হলো:

১। বুকে ব্যথা বা চাপ অনুভব

খারাপ কোলেস্টেরল ধমনীতে জমে রক্তপ্রবাহ ব্যাহত করলে বুকে অস্বস্তি, ব্যথা বা চাপ অনুভব হতে পারে। এটি হার্ট অ্যাটাক বা করোনারি আর্টারি ডিজিজের (CAD) পূর্বাভাস হতে পারে।

২। ঘাড়, চোয়াল বা কাঁধে ব্যথা

কোলেস্টেরল বেড়ে গেলে রক্ত চলাচলে বাধা সৃষ্টি হয়, ফলে ঘাড়, চোয়াল ও কাঁধে টান লাগা বা ব্যথার মতো অস্বস্তি দেখা যায়।

৩। পায়ে ব্যথা ও খিঁচুনি

পায়ে পর্যাপ্ত রক্ত না পৌঁছালে চলাফেরার সময় কিংবা বিশ্রামে থাকলেও ব্যথা বা খিঁচুনি হতে পারে। এটি 'পেরিফেরাল আর্টারি ডিজিজ'-এর লক্ষণও হতে পারে।

৪। হাত-পায়ে ঝিমঝিম ভাব বা অসাড়তা

কোলেস্টেরল বেড়ে গেলে স্নায়ু ও পেশিতে পর্যাপ্ত রক্ত না পৌঁছানোর কারণে হাত ও পায়ে ঝিমঝিম ভাব বা অসাড়তা দেখা যায়। কখনও কখনও পায়ের ত্বকের রঙ নীলচে হয়ে যেতে পারে।

৫। দুর্বলতা ও অতিরিক্ত ক্লান্তি

খারাপ কোলেস্টেরলের কারণে রক্তপ্রবাহ বাধাগ্রস্ত হলে শরীরে অক্সিজেন সরবরাহ কমে যায়, যার ফলে অল্পতেই ক্লান্তি বা দুর্বলতা অনুভব হয়।

৬। মাথা ঘোরা বা ভার লাগা

মস্তিষ্কে রক্ত চলাচলে সমস্যা দেখা দিলে মাথা ঘোরার মতো সমস্যা হতে পারে। এটি কোলেস্টেরল বৃদ্ধির সূচক হতে পারে, যদিও অনেকেই একে সাধারণ মাথা ঘোরার সমস্যা মনে করেন।

৭। চোখের আশপাশে হলুদ রঙের চাকা

অনেক সময় চোখের নিচে বা পাতার আশপাশে চর্বিযুক্ত হলুদ রঙের ছোট ছোট দাগ বা চাকা দেখা যায়, যাকে জ্যানথেলাজমা (Xanthelasma) বলা হয়। এটি উচ্চ কোলেস্টেরলের বাহ্যিক লক্ষণ।

৮। হজমে সমস্যা বা গ্যাসের প্রবণতা

কোলেস্টেরল বেড়ে গেলে অনেকের মধ্যে গ্যাস্ট্রিক, হজমে সমস্যা বা অস্বস্তির অনুভূতি দেখা দিতে পারে। যদিও এটি সরাসরি উপসর্গ নয়, তবুও প্রভাব ফেলতে পারে।

৯। পায়ের ত্বক ঠান্ডা হয়ে যাওয়া

যখন পায়ে রক্ত চলাচল বাধাগ্রস্ত হয়, তখন ত্বক স্বাভাবিক তাপমাত্রা ধরে রাখতে পারে না। ফলে পা ঠান্ডা হয়ে যায়, বিশেষত আঙুলের অংশগুলো।

১০। রাতে পায়ে টান ধরা বা পেশিতে ব্যথা

রাতে ঘুমের মধ্যে পায়ে হঠাৎ টান ধরার সমস্যা দেখা দিলে, তা হতে পারে পায়ে পর্যাপ্ত রক্ত না পৌঁছানোর কারণে—যার পেছনে কোলেস্টেরল বৃদ্ধির ভূমিকা থাকতে পারে।

কী করবেন?

এই ধরনের উপসর্গ দেখা দিলে কোনোভাবেই অবহেলা করা উচিত নয়। দ্রুত একজন চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে রক্ত পরীক্ষা করিয়ে নিশ্চিত হওয়া উচিত আপনার কোলেস্টেরল লেভেল কোথায় দাঁড়িয়ে আছে।

চিকিৎসকের পরামর্শ মতো খাদ্যাভ্যাস, ওষুধ ও লাইফস্টাইল মেনে চললে সহজেই কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব।

আবীর

×