ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ১৬ এপ্রিল ২০২৫, ৩ বৈশাখ ১৪৩২

খাবারের পর গরম পানি পান করলে কী রক্তে শর্করার পরিমাণ কমে?

প্রকাশিত: ০১:২৪, ১৫ এপ্রিল ২০২৫

খাবারের পর গরম পানি পান করলে কী রক্তে শর্করার পরিমাণ কমে?

ছবি: সংগৃহীত

অনেকে মনে করেন, খাবারের পর গরম পানি পান করলে তা রক্তে শর্করার মাত্রা কমাতে সাহায্য করে। তবে এই বিশ্বাসের পেছনে কতটা বৈজ্ঞানিক ভিত্তি রয়েছে, তা নিয়েই প্রশ্ন উঠছে। এ নিয়ে বিশেষজ্ঞদের মতামত অনুসন্ধান করা হয়েছে।

বিশেষজ্ঞদের মতে, গরম পানি হজমে সহায়তা করতে পারে বটে, তবে রক্তে শর্করার মাত্রা সরাসরি কমিয়ে দেওয়ার কোনও বৈজ্ঞানিক প্রমাণ নেই। গ্রেটার নয়ডার শারদা হাসপাতালের ইন্টারনাল মেডিসিন বিভাগের সিনিয়র কনসালট্যান্ট ডঃ শ্রেয় শ্রীবাস্তব জানান, “গরম পানি শরীরের পুষ্টি শোষণ ও সঞ্চালন প্রক্রিয়া কিছুটা উন্নত করতে পারে, ফলে শর্করা প্রক্রিয়াকরণে সামান্য সহায়তা হতে পারে। তবে রক্তে শর্করা নিয়ন্ত্রণে এর ভূমিকা খুবই সীমিত।”

দিল্লির সি.কে. বিড়লা হাসপাতালের ইন্টারনাল মেডিসিন বিশেষজ্ঞ ডঃ নারেন্দর সিংলার মতে, গরম পানি হজম শক্তি বাড়িয়ে গ্লুকোজ শোষণের গতি কিছুটা কমাতে পারে। তিনি বলেন, “গরম পানি পাচনতন্ত্রকে সক্রিয় করে তুলতে পারে, যার ফলে খাবার থেকে পুষ্টি ভাঙার প্রক্রিয়া কিছুটা উন্নত হয়।” তবে তিনি সতর্ক করেন যে, “শুধুমাত্র গরম পানি পান করে রক্তে শর্করার মাত্রা উল্লেখযোগ্যভাবে কমানো সম্ভব নয়।”

গুরগাঁওয়ের সি.কে. বিড়লা হাসপাতালের ডঃ তুষার তায়াল বলেন, “গরম পানি হজম ও হাইড্রেশন বজায় রাখতে সহায়ক হলেও, এটি একা রক্তে শর্করা নিয়ন্ত্রণের নির্ভরযোগ্য উপায় নয়।” তিনি আরও বলেন, “রক্তে শর্করা নিয়ন্ত্রণে স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস, নিয়মিত শরীরচর্চা এবং ওষুধের গুরুত্ব অনেক বেশি।”

থানের জুপিটার হাসপাতালের ইন্টারনাল মেডিসিন বিভাগের ডিরেক্টর ডঃ অমিত সরাফ এবং মুম্বই সেন্ট্রালের ওকহার্ড হাসপাতালের এন্ডোক্রিনোলজিস্ট ডঃ প্রণব এ ঘোড়ি একই রকম মত প্রকাশ করেছেন। তাঁদের মতে, গরম পানি একটি স্বাস্থ্যকর অভ্যাস হলেও এটি কখনও রক্তে শর্করার পরিমাণ নিয়ন্ত্রণের প্রধান উপায় হতে পারে না। বরং উচ্চ ফাইবারযুক্ত খাদ্য, সুষম আহার, পরিমিত খাওয়া ও নিয়মিত ব্যায়ামই সবচেয়ে কার্যকর পদ্ধতি।

সবশেষে বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ, গরম পানি পান করা দেহের জন্য উপকারী হতে পারে—বিশেষত হজমের দিক থেকে। তবে রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে এটি একটি সহায়ক উপাদান হতে পারে, প্রধান বা একমাত্র সমাধান নয়। সঠিক নিয়ন্ত্রণের জন্য প্রয়োজন স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন এবং চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী চলা।

সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া

এম.কে.

×