ঢাকা, বাংলাদেশ   সোমবার ১৪ এপ্রিল ২০২৫, ১ বৈশাখ ১৪৩২

ঘুমানোর সময়েও মাথা চিন্তায় ভরা? এই ৭টি লক্ষণ আপনার জন্যই!

প্রকাশিত: ১২:১৯, ১৩ এপ্রিল ২০২৫

ঘুমানোর সময়েও মাথা চিন্তায় ভরা? এই ৭টি লক্ষণ আপনার জন্যই!

সংগৃহীত

অনেকেই বিছানায় শুয়ে দিনের কাজের তালিকা, ভুলত্রুটি কিংবা ভবিষ্যতের দুশ্চিন্তা নিয়ে গভীর রাতে ঘুমহীন অবস্থায় ছাদের দিকে তাকিয়ে কাটিয়ে দেন। শরীর ক্লান্ত হলেও মস্তিষ্ক যেন একটানা চিন্তা করেই চলে। দিনের ঘটনাবলি বিশ্লেষণ করতে গিয়ে মনে হতে পারে,এই ভাবনাগুলো আর থামবে না।

এ ধরনের মানসিক অস্থিরতা রাতের ঘুম নষ্ট করার পাশাপাশি সামগ্রিক মানসিক স্বাস্থ্যের উপরও প্রভাব ফেলতে পারে। ঘুমের আগে যদি মন শান্ত না হয়, তবে তার কিছু লক্ষণ স্পষ্টভাবে প্রকাশ পায়। নিচে এমন সাতটি লক্ষণ তুলে ধরা হলো, যা বোঝায় যে ঘুমের সময় মস্তিষ্ক ‘বন্ধ’ হচ্ছে না।

১. একটানা পুরনো আলাপচারিতা বা ঘটনা মনে পড়ে
বিছানায় শুয়ে থাকলেও দিনের কোনো এক আলোচনা বা ঘটনার কথা ঘুরেফিরে মাথায় আসতে থাকে। কোনো শব্দের ভঙ্গি, বলা না বলা কথা, বা কারও প্রতিক্রিয়ার বিশ্লেষণে অনেক রাত কেটে যায়। অনেক সময় মনে হতে পারে, বিষয়টি নিয়ে যতবার ভাবা যায়, ততই ভালো হবে। কিন্তু বাস্তবে এটি একটি মানসিক চক্র তৈরি করে, যেখান থেকে বেরিয়ে আসা কঠিন হয়ে পড়ে।

২. ভবিষ্যৎ নিয়ে ‘যদি এমন হয়’ ধরনের দুশ্চিন্তা
পরিকল্পনা করা স্বাভাবিক, কিন্তু দিনের শেষে যখন এসব পরিকল্পনা ভবিষ্যতের শঙ্কায় রূপ নেয়—তখন তা উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়ায়। ভবিষ্যতের নানা অনিশ্চয়তা নিয়ে বিছানায় শুয়ে দীর্ঘক্ষণ চিন্তা করা ঘুমে ব্যাঘাত ঘটাতে পারে।

৩. একা ও নিরিবিলি থাকার সময় অস্বস্তিকর লাগে
অনেকেই বিছানায় শুয়ে একাকিত্বের মুহূর্তে মনের ভেতরের অস্থিরতা এড়াতে ফোন বা টেলিভিশনের আশ্রয় নেন। কিন্তু এ ধরনের ‘বিভ্রান্তিমূলক শান্তি’ দীর্ঘমেয়াদে আরও বেশি মানসিক ক্লান্তি ডেকে আনে।

৪. শরীর ক্লান্ত হলেও চিন্তাধারা থামে না
দিনভর ব্যস্ততার পর শরীর একেবারে ক্লান্ত হলেও মস্তিষ্ক যেন তখনই আরও বেশি সক্রিয় হয়ে ওঠে। দিনের ঘটনাগুলো ঠিকভাবে প্রক্রিয়াজাত না হলে, রাতে সেইসব চিন্তা জোরে ধাক্কা দেয়।

৫. সমস্যাগুলোর সমাধান না হওয়া পর্যন্ত চিন্তা থামে না
রাত গভীর হলেও মাথায় নতুন নতুন কাজের তালিকা বা সমস্যার সমাধান নিয়ে ভাবনা চলতেই থাকে। অনেক সময় মনে হয়, যতক্ষণ না সমাধান হচ্ছে, ততক্ষণ ঘুমানো যাবে না। এতে রাতের বিশ্রাম নষ্ট হয় এবং মানসিক চাপ আরও বেড়ে যায়।

৬. ছোট ছোট দুশ্চিন্তা বড় ধরনের উদ্বেগে রূপ নেয়
সাধারণ কোনো কথা বা ঘটনা থেকে শুরু হয়, পরে তা বড় ধরনের সংশয়ে পরিণত হয়—যেমন চাকরি নিয়ে অনিশ্চয়তা বা ভবিষ্যতের নিরাপত্তা। রাতে এইসব চিন্তা অধিকতর বিপজ্জনক ও বাস্তব মনে হয়, যদিও দিনের আলোতে সেগুলো ততটা গুরুতর না-ও হতে পারে।

৭. অনিদ্রা বা ঘুমে অস্থিরতা প্রতিদিনকার ব্যাপার হয়ে গেছে
ঘন ঘন জেগে ওঠা, ঘুমাতে দেরি হওয়া বা সকালে উঠেও ক্লান্তিভাব—এসবই অতিরিক্ত মানসিক চাপ ও অতিচিন্তার প্রভাব। নিয়মিত এই অবস্থার সম্মুখীন হলে বুঝতে হবে, ঘুমের আগে মনকে শান্ত করার জন্য কিছু পরিবর্তন জরুরি।


রাতের চিন্তার ভার যে কতটা গভীরভাবে প্রভাব ফেলে, তা অনেকেই অনুভব করেন। তবে এসব লক্ষণ সম্পর্কে সচেতন হওয়া মানেই সমাধানের দিকে এগিয়ে যাওয়া। রাতে ঘুমানোর আগে জার্নালিং, শ্বাস প্রশ্বাসের কৌশল বা কাজের তালিকা লিখে রাখা,এ ধরনের ছোট ছোট অভ্যাসও মানসিক শান্তি আনতে পারে।

ঘুম একমাত্র শারীরিক বিশ্রামের বিষয় নয়, বরং এটি মানসিক পুনর্গঠনের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। তাই মস্তিষ্ককে ‘বন্ধ’ করতে না পারার পেছনের কারণগুলো চিহ্নিত করে ধাপে ধাপে পরিবর্তন আনা উচিত। সঠিক ঘুম মানেই দিনটি আরও প্রাণবন্তভাবে শুরু করার সম্ভাবনা।

 

 

সূত্র:https://tinyurl.com/cb6mu32d

আফরোজা

×