
ছবি: সংগৃহীত
ভিটামিন-বি১২ এমন একটি গুরুত্বপূর্ণ পুষ্টি উপাদান, যা স্নায়ুতন্ত্র ঠিক রাখতে, রক্তে লোহিত রক্তকণিকা তৈরিতে এবং DNA গঠনে সহায়তা করে। কিন্তু এই ভিটামিনটি মূলত প্রাণিজ উৎস থেকেই পাওয়া যায়, ফলে নিরামিষভোজীদের মধ্যে এর ঘাটতি দেখা দেওয়া খুবই স্বাভাবিক। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দীর্ঘমেয়াদে বি১২ এর অভাবে অ্যানিমিয়া, দুর্বলতা, অবসাদ, এমনকি স্নায়বিক সমস্যা দেখা দিতে পারে।
🔬 ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পুষ্টিবিদ ডা. আফসানা কবীর বলেন, “নিরামিষভোজীদের প্রতি বছর অন্তত একবার ভিটামিন-বি১২ এর মাত্রা পরীক্ষা করা উচিত। যদি ঘাটতি দেখা যায়, তবে খাবারের পাশাপাশি পরামর্শ অনুযায়ী সাপ্লিমেন্ট নেওয়াও প্রয়োজন হতে পারে।”
তবে কিছু নিরামিষভোজ্য খাবার আছে, যেগুলো নিয়মিত খেলে প্রাকৃতিকভাবেই বি১২-এর চাহিদার কিছুটা পূরণ সম্ভব। নিচে এমনই ছয়টি খাদ্য তালিকাভুক্ত করা হলো—
🥣 ১. ফোর্টিফায়েড সিরিয়াল অনেক প্রাতঃরাশের সিরিয়াল থাকে বি১২ সমৃদ্ধ করে তৈরি। এগুলো নিরামিষভোজীদের জন্য একটি চমৎকার উৎস হতে পারে। প্রতিদিন সকালের নাশতায় দুধ বা প্ল্যান্ট-বেসড মিল্কের সঙ্গে গ্রহণ করা যেতে পারে।
🥛 ২. ফোর্টিফায়েড দুধ (সয়া, আমন্ড বা ওট মিল্ক) যেসব নিরামিষভোজীরা পশু-দুগ্ধ খান না, তাদের জন্য ফোর্টিফায়েড প্ল্যান্ট-বেসড মিল্ক যেমন সয়া বা ওট মিল্কে বি১২ যুক্ত থাকে। দিনে এক কাপ গ্রহণ করলেই উপকার মিলবে।
🍄 ৩. বিশেষ প্রজাতির মাশরুম (Shiitake Mushroom) শিতাকে জাতীয় মাশরুমে স্বল্প পরিমাণে হলেও বি১২ থাকে। নিয়মিত খাদ্যতালিকায় অন্তর্ভুক্ত করলে কিছুটা ঘাটতি পূরণে সহায়তা করে।
🍞 ৪. ফোর্টিফায়েড পাউরুটি ও নুডলস বর্তমানে অনেক পাউরুটি ও ইনস্ট্যান্ট নুডলসে ভিটামিন বি১২ যোগ করা হচ্ছে। প্যাকেটের গায়ে পুষ্টি তথ্য দেখে এমন পণ্য বেছে নেওয়া যেতে পারে।
🥤 ৫. ন্যাচারাল ইয়োগার্ট ও প্রোবায়োটিক খাবার যদিও এতে ভিটামিন-বি১২-এর পরিমাণ খুব বেশি না, তবে কিছু নির্দিষ্ট প্রজাতির প্রোবায়োটিক ফারমেন্টেশন প্রক্রিয়ায় বি১২ উৎপন্ন করতে পারে।
💊 ৬. নিরামিষভোজীদের জন্য প্রস্তুত বি১২ সাপ্লিমেন্ট যারা একদমই প্রাণিজ পণ্য গ্রহণ করেন না, তাদের জন্য স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের পরামর্শে বি১২ ট্যাবলেট বা সাপ্লিমেন্ট গ্রহণ করাই শ্রেয়।
⚠️ সতর্কবার্তা: ভিটামিন-বি১২ এর ঘাটতি যদি দীর্ঘস্থায়ী হয়, তবে তা স্নায়বিক ক্ষতি ঘটাতে পারে যা অনেক সময় অপূরণীয়। তাই প্রয়োজনে রক্ত পরীক্ষা করে ডাক্তারের পরামর্শে সঠিক খাদ্য ও সাপ্লিমেন্ট গ্রহণ করা উচিত।
নিরামিষ খেয়ে স্বাস্থ্য সচেতন থাকা সম্ভব, তবে কিছু অতিরিক্ত সতর্কতা অবলম্বন জরুরি। ভিটামিন-বি১২ এর অভাব যেন অজান্তেই স্বাস্থ্যহানি না ঘটায়, সেদিকে নজর রাখা জরুরি।
আসিফ