ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৮ এপ্রিল ২০২৫, ৫ বৈশাখ ১৪৩২

ফুসফুস সুস্থ ও পরিষ্কার রাখতে মেনে চলুন ৮টি প্রাকৃতিক উপায়

প্রকাশিত: ১২:৫৬, ১০ এপ্রিল ২০২৫; আপডেট: ১২:৫৯, ১০ এপ্রিল ২০২৫

ফুসফুস সুস্থ ও পরিষ্কার রাখতে মেনে চলুন ৮টি প্রাকৃতিক উপায়

ছবি: সংগৃহীত।

ফুসফুস পরিষ্কার ও মজবুত রাখতে ৮টি প্রাকৃতিক উপায় নিজস্ব প্রতিবেদক বর্তমান দূষিত ও ধোঁয়াটে পরিবেশে ফুসফুস সুস্থ রাখা দিন দিন কঠিন হয়ে উঠছে। তবে কিছু প্রাকৃতিক উপায় মেনে চললে সহজেই ফুসফুস পরিষ্কার ও মজবুত রাখা সম্ভব। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, শ্বাস-প্রশ্বাসের ব্যায়াম, ভেষজ উপাদান, স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস এবং সচেতন জীবনযাপন ফুসফুসের কার্যক্ষমতা বাড়াতে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখে।

ফুসফুস সুস্থ রাখার কার্যকর উপায়সমূহ:

১. গভীর শ্বাসের অনুশীলন: প্রতিদিন গভীরভাবে শ্বাস নেওয়ার অভ্যাস ফুসফুসের সক্ষমতা বাড়ায়, অক্সিজেন গ্রহণ উন্নত করে এবং জমে থাকা কফ সহজে পরিষ্কার করতে সহায়তা করে।

২. পর্যাপ্ত পানি পান: সঠিকভাবে হাইড্রেট থাকলে ফুসফুসের মিউকাস স্তর পাতলা থাকে, যা শ্বাস-প্রশ্বাস সহজ করে এবং দেহ থেকে দূষিত পদার্থ বের করে দিতে সাহায্য করে।

৩. স্টিম থেরাপি: গরম পানির ভাপ ফুসফুসের শ্বাসনালিকে প্রশস্ত করে, জমে থাকা কফকে নরম করে এবং শ্বাসকষ্ট থেকে তাৎক্ষণিক মুক্তি দেয়। এটি ফুসফুসকে পরিষ্কার করতেও সহায়ক।

৪. নিয়মিত ব্যায়াম: ওয়াকিং, সাঁতার বা সাইক্লিংয়ের মতো অ্যারোবিক ব্যায়াম ফুসফুসের কার্যক্ষমতা বাড়ায় এবং শরীরের রক্ত চলাচল উন্নত করে।

৫. অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ খাবার: বেরি, পালং শাক, হলুদের মতো অ্যান্টি-অক্সিডেন্টযুক্ত খাবার ফুসফুসের কোষ মেরামতে সহায়তা করে এবং দীর্ঘমেয়াদে স্বাস্থ্য রক্ষা করে।

৬. দূষণ এড়িয়ে চলা: ধোঁয়া, ধূলাবালি ও ক্ষতিকর কেমিক্যাল থেকে দূরে থাকার মাধ্যমে ফুসফুসে দূষিত পদার্থ প্রবেশ কমানো যায়। প্রয়োজনে মাস্ক ব্যবহার ও এয়ার পিউরিফায়ার ব্যবহার করাও কার্যকর।

৭. পোস্টুরাল ড্রেনেজ অনুশীলন: বিশেষ ভঙ্গিমায় শুয়ে থাকলে ফুসফুসের বিভিন্ন অংশ থেকে জমে থাকা কফ বের হয়ে আসে, যা শ্বাস নিতে সুবিধা করে এবং শ্বাসনালিকে পরিষ্কার রাখে।

৮. ভেষজ চা পান: আদা, লিকোরিস রুট ও পিপারমিন্ট চা-তে রয়েছে প্রাকৃতিক প্রদাহনাশক উপাদান। এসব চা শ্বাসনালিকে প্রশমিত করে ও কফ সরাতে সহায়তা করে।

কখন ফুসফুসের যত্ন নেওয়া জরুরি?

বিশেষজ্ঞরা বলেন, যদি দীর্ঘদিন ধরে কাশি, অল্প পরিশ্রমে শ্বাসকষ্ট, বুকে চাপ, ঘন ঘন সর্দি-কাশি বা শ্বাসে হাঁপানির শব্দ হয়, তাহলে তা ফুসফুসের সমস্যার লক্ষণ হতে পারে। এছাড়াও কফে রঙ পরিবর্তন, ক্লান্তিভাব, নিঃশ্বাস নিতে সমস্যা হওয়া কিংবা ঠোঁট-আঙুল নীলচে হয়ে যাওয়া ইত্যাদি উপসর্গ দেখা গেলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।

ফুসফুসের রোগের লক্ষণ:

ফুসফুসের রোগ সাধারণত ধীরে ধীরে শুরু হয়। শুরুতে হালকা কাশি বা শ্বাসকষ্ট থাকলেও সময়ের সঙ্গে সঙ্গে তা বেড়ে যায়। অ্যাজমা বা সিওপিডি রোগীদের ক্ষেত্রে শ্বাস নেওয়ার সময় শিসের মতো শব্দ হতে পারে। এসব লক্ষণ নিয়মিত দেখা দিলে অবহেলা না করে দ্রুত চিকিৎসা গ্রহণ জরুরি। কারণ, প্রাথমিক অবস্থায় শনাক্ত করা গেলে ফুসফুসের রোগ নিয়ন্ত্রণ সম্ভব এবং জীবনমান উন্নত হয়।

সতর্কতা ও সচেতন অভ্যাসের মাধ্যমে ফুসফুস সুস্থ রাখা সম্ভব। তাই প্রাকৃতিক উপায়ে নিয়মিত ফুসফুসের যত্ন নিন, শ্বাস নিন স্বস্তিতে।

সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া

সায়মা ইসলাম

×