
ছবি: সংগৃহীত
স্বাস্থ্যসচেতন মানুষদের জন্য ইমিউনিটি বৃদ্ধি করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আজকাল বিভিন্ন প্রাকৃতিক উপাদান আমাদের ইমিউন সিস্টেমকে শক্তিশালী করতে সাহায্য করে। চলুন জেনে নেওয়া যাক, প্রাকৃতিকভাবে ইমিউনিটি শক্তিশালী করতে সাহায্যকারী ৬টি সুপারফুড সম্পর্কে।
১. আমলা
আমলা, যা ভিটামিন সি’র অন্যতম সমৃদ্ধ প্রাকৃতিক উৎস, একটি ছোট্ট সবুজ ফল যা কমপক্ষে ২০ গুণ বেশি ভিটামিন সি ধারণ করে একটি কমলা ফলের তুলনায়। এটি সাদা রক্তকণিকার উৎপাদন বাড়িয়ে, পেটের স্বাস্থ্য উন্নত করে এবং অক্সিডেটিভ স্ট্রেসের বিরুদ্ধে শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট হিসেবে কাজ করে। নিয়মিত আমলা খেলে সংক্রমণ প্রতিরোধ, উজ্জ্বল ত্বক এবং শক্তিশালী ইমিউন সিস্টেম পাওয়া যায়। এটি তাজা, রস হিসেবে বা ঐতিহ্যবাহী প্রতিকার হিসেবে যেমন চাওয়ানপ্রাশেও খাওয়া যেতে পারে।
২. কাঁচা মধু
কাঁচা মধু শুধুমাত্র প্রাকৃতিক মিষ্টি নয়, এটি ইমিউন সিস্টেম শক্তিশালী করার জন্য একটি প্রাচীন চিকিৎসা। এতে অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল এবং অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল গুণ রয়েছে যা সংক্রমণ প্রতিরোধে সাহায্য করে এবং গলা ব্যথা কমায়। প্রক্রিয়াজাত চিনির পরিবর্তে, কাঁচা মধু এনজাইম, খনিজ এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট প্রদান করে। সকালে এক চামচ কাঁচা মধু গরম পানির সাথে বা হার্বাল চায়ে মিশিয়ে ইমিউনিটি সাপোর্ট হিসেবে খেতে পারেন।
৩. তুলসি
তুলসি, যা ভারতীয় বাড়িতে শতাব্দীজুড়ে ব্যবহৃত হয়ে আসছে, এটি একটি অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও ইমিউন-বুস্টিং উপাদান। ভিটামিন এ এবং সি, আয়রন এবং জিংক সমৃদ্ধ তুলসি ঠান্ডা, কাশি এবং শ্বাসযন্ত্রের অন্যান্য সমস্যায় সাহায্য করে। এর অ্যান্টি-ইনফ্লামেটরি এবং অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল গুণগুলি মৌসুমি পরিবর্তনের সময় বিশেষভাবে কার্যকর। তুলসি পাতা চিবিয়ে, তুলসি চা বানিয়ে বা তুলসি ড্রপস প্রতিদিন গরম পানিতে ব্যবহার করা যেতে পারে।
৪. বাদাম
বাদাম একটি পুষ্টিকর সুপারফুড যা ভিটামিন ই, একটি শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, সমৃদ্ধ। এটি ইমিউন সেল স্বাস্থ্য সমর্থন করে এবং শরীরকে সংক্রমণ থেকে রক্ষা করতে সাহায্য করে। বাদামে স্বাস্থ্যকর ফ্যাট, ফাইবার এবং ম্যাগনেসিয়ামও থাকে যা সামগ্রিক সুস্থতার জন্য উপকারী। রাতে কিছু বাদাম ভিজিয়ে রেখে সকালে খেলে পুষ্টি শোষণ বৃদ্ধি পায় এবং শরীরকে শক্তিশালী ইমিউনিটি এবং শক্তির প্রাকৃতিক বৃদ্ধি প্রদান করে।
৫. রসুন
রসুনে আলিসিন নামে একটি যৌগ থাকে, যা শক্তিশালী অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল, অ্যান্টিভাইরাল এবং অ্যান্টিফাঙ্গাল গুণযুক্ত। এটি শতাব্দীজুড়ে ঠান্ডা, ফ্লু এবং অন্যান্য সংক্রমণের বিরুদ্ধে একটি প্রাকৃতিক প্রতিকার হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। কাঁচা বা সামান্য রান্না করা রসুনের নিয়মিত সেবন সাদা রক্তকণিকার কার্যকারিতা বাড়িয়ে ইমিউন প্রতিক্রিয়া উন্নত করতে সাহায্য করে। এটি ডাল, কারি বা চাটনিতে মিশিয়ে অথবা কাঁচা রসুন গরম পানির সাথে খেলে শক্তিশালী উপকার পাওয়া যায়।
৬. পালং শাক
পালং শাক একটি সবুজ শক্তিশালী খাবার যা ভিটামিন এ, সি, ই, আয়রন এবং ফোলেটের মতো ইমিউনিটি সমর্থক উপাদানে পূর্ণ। এই উপাদানগুলি শরীরকে কোষ পুনর্গঠন, প্রদাহ প্রতিরোধ এবং রক্ত সঞ্চালন উন্নত করতে সাহায্য করে—এগুলি সবই একটি শক্তিশালী ইমিউন সিস্টেমের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। পালং শাক সেদ্ধ করে, স্মুদি বা কারিতে মিশিয়ে অথবা স্যুপে যোগ করে এর স্বাস্থ্য উপকারিতা সর্বাধিক করা যেতে পারে। ভিটামিন সি সমৃদ্ধ খাবারের সাথে যেমন লেবু খেলে আয়রনের শোষণ আরও বাড়ে।
এই সুপারফুডগুলো প্রাকৃতিকভাবে আপনার ইমিউন সিস্টেমকে শক্তিশালী করতে সাহায্য করতে পারে। আপনার ডায়েটে এগুলো অন্তর্ভুক্ত করে শারীরিক এবং মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নতি করা সম্ভব।
শিহাব