
ছবি: সংগৃহীত
চর্বিযুক্ত খাবার, যা সাধারণত অতিরিক্ত তেল, অস্বাস্থ্যকর চর্বি, পরিশোধিত কার্বোহাইড্রেট এবং অতিরিক্ত লবণ দিয়ে তৈরি হয়, খেতে বেশ সুস্বাদু হলেও এটি আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে। এ লেখায় জানুন কেন চর্বিযুক্ত খাবার খাওয়া উচিত নয় এবং কীভাবে আপনি আপনার প্রিয় খাবারগুলো স্বাস্থ্যকর উপায়ে প্রস্তুত করতে পারেন।
চর্বিযুক্ত খাবার এড়িয়ে চলার ৭টি কারণ:
১) পাচনজনিত সমস্যা: চর্বিযুক্ত খাবারগুলো পাচন প্রক্রিয়াকে ধীর করে দেয়, যার ফলে পেট ফোলা, গ্যাস ও অস্বস্তি হতে পারে।
২) ওজন বাড়ানো: চর্বিযুক্ত খাবারগুলো সাধারণত বেশি ক্যালোরি ও অস্বাস্থ্যকর চর্বি যেমন ট্রান্স ফ্যাটে ভরপুর থাকে, যা অতিরিক্ত ওজন এবং স্থূলতার কারণ হতে পারে।
৩) অসুস্থ গাট স্বাস্থ্য: অস্বাস্থ্যকর চর্বি বেশি খাওয়ার ফলে গাট মাইক্রোবায়োটার উপর নেতিবাচক প্রভাব পড়ে, যা পাচন, মেজাজ ও শক্তির অভাব সৃষ্টি করতে পারে।
৪) মস্তিষ্কে ধোঁয়াশা এবং মেজাজের পরিবর্তন: ট্রান্স ফ্যাট মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতায় প্রভাব ফেলতে পারে, যার ফলে মনোযোগের অভাব এবং মেজাজের পরিবর্তন দেখা দেয়।
৫) হৃদরোগের ঝুঁকি: চর্বিযুক্ত খাবারের নিয়মিত গ্রহণ হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়াতে পারে।
৬) ডায়াবেটিসের ঝুঁকি: ভাজা খাবার খাওয়ার কারণে দেহে প্রদাহ বৃদ্ধি পায় এবং রক্তে শর্করা নিয়ন্ত্রণের সমস্যা হতে পারে, যা টাইপ ২ ডায়াবেটিসের ঝুঁকি বাড়ায়।
৭) ত্বকের সমস্যা: অস্বাস্থ্যকর চর্বি অতিরিক্ত খাওয়ার ফলে ত্বকে ব্রেকআউট এবং অন্যান্য সমস্যা দেখা দিতে পারে।
স্বাস্থ্যকর খাবার প্রস্তুতির বিকল্প:
-
স্টিমিং: তেলে ছাড়াই তাজা শাকসবজি এবং মাছ স্টিম করা যেতে পারে।
-
সঁটিং: অল্প তেল ব্যবহার করে শাকসবজি ও মাংস রান্না করা যেতে পারে।
-
বেকিং: তেলের ব্যবহার কমিয়ে খাবার বেক করা যেতে পারে, যাতে ক্রিস্পি টেক্সচার পাওয়া যায়।
-
গ্রিলিং: তেলের ব্যবহার ছাড়াই খাবার গ্রিল করা যেতে পারে।
-
এয়ার ফ্রাইং: কম তেলে খাবার "ফ্রাই" করা যায় এবং এটি স্বাস্থ্যকর হয়।
প্রিয় চর্বিযুক্ত খাবারের স্বাস্থ্যকর সংস্করণ:
-
চিপস: বেকড পিটা চিপস বা কেল চিপস চেষ্টা করুন।
-
ফ্রেঞ্চ ফ্রাই: মিষ্টি আলু বা শাকসবজির ওয়েজ বেক করুন।
-
বার্গার: গুণগত মানের গ্রাস-ফেড গরুর মাংস বা বাইসন ব্যবহার করে বাড়িতে তৈরি করুন।
-
ফ্রাইড চিকেন: চিকেন বেক বা গ্রিল করুন।
-
পিজ্জা: ফুলকপি বা পুরো গমের ক্রাস্ট ব্যবহার করে বাড়িতে তৈরি পিজ্জা বানান এবং তেলের পরিমাণ সীমিত রাখুন।
যদি চর্বিযুক্ত খাবার খান:
-
প্রোবায়োটিক খাবার খান: পেঁচানো খাবার ও প্রোবায়োটিক সাপ্লিমেন্ট খেলে পাচন ব্যবস্থা ভালো থাকে।
-
পাচন-সোজানো হার্বস ব্যবহার করুন: আদা বা ড্যান্ডিলিয়ন চা খাবার পর পান করতে পারেন।
-
পোরশনের সাইজ ছোট রাখুন: চর্বিযুক্ত খাবার খেলে, পোরশনের সাইজ ছোট রাখুন যাতে পাচন ব্যবস্থা অভিভূত না হয়।
পরিশেষে, চর্বিযুক্ত খাবার খাওয়া সুস্বাদু হলেও এর দীর্ঘমেয়াদী প্রভাব আমাদের পাচন, ওজন, হৃদপিণ্ডের স্বাস্থ্য এবং মেজাজে নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। স্বাস্থ্যকর রান্নার পদ্ধতি ও পরিমাণে নিয়ন্ত্রণ নিয়ে আপনি আপনার প্রিয় খাবারগুলো স্বাস্থ্যকর উপায়ে উপভোগ করতে পারেন।
সূত্র: https://draxe.com/nutrition/greasy-food/
আবীর