
ছবি: সংগৃহীত
জাপানিরা তাদের প্রতিদিনের খাবারের আগে ভিনেগার পান করেন, যা তাদের শারীরিক স্বাস্থ্য রক্ষায় বিশেষ সহায়ক। এই অভ্যাসের কারণে তাদের হজম প্রক্রিয়া, শরীরের ওজন নিয়ন্ত্রণ, রক্তের শর্করা স্তর নিয়ন্ত্রণ, এবং শরীরের ডিটক্সিফিকেশন প্রভৃতি স্বাস্থ্য উপকারিতা ঘটে। এই অভ্যাসটি মেটাবলিজম, ইমিউনিটি এবং সামগ্রিক স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটায়, এবং এটি জাপানের একটি জনপ্রিয় খাদ্যাভ্যাস।
ভিনেগারের স্বাস্থ্য উপকারিতা
ভিনেগারের পানীয়ের মাধ্যমে একাধিক স্বাস্থ্য সুবিধা লাভ করা যায়, যেমন:
ত্বকের স্বাস্থ্য: ভিনেগার ত্বকের পিএইচ স্তর নিয়ন্ত্রণ করে, যা ত্বকের দাগ ও ব্রণের সমস্যা কমাতে সাহায্য করে। এতে উপস্থিত অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল উপাদান ত্বকে থাকা ব্যাকটেরিয়া প্রতিরোধ করে এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট উপাদান ত্বকের প্রদাহ কমায়, ফলে ত্বক স্বাভাবিকভাবে উজ্জ্বল ও সুস্থ থাকে।
ইমিউনিটি বৃদ্ধিতে সহায়ক: ভিনেগারে অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট উপাদান থাকে, যা শরীরের প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সহায়ক। এটি সংক্রমণের বিরুদ্ধে লড়াই করে এবং শরীরের সুরক্ষা ক্ষমতা শক্তিশালী করে।
ডিটক্সিফিকেশন: ভিনেগার শরীর থেকে অপ্রয়োজনীয় টক্সিন দূর করতে সাহায্য করে। এটি লিভার এবং কিডনির কার্যক্ষমতা বৃদ্ধি করে, রক্ত সঞ্চালন উন্নত করে এবং শরীরকে ডিটক্সিফাই করতে সহায়ক।
পেটের স্বাস্থ্য: ভিনেগার প্রোবায়োটিক এবং এসেটিক অ্যাসিডে সমৃদ্ধ, যা গ্যাস্ট্রোইন্টেস্টাইনাল ট্র্যাক্টের সুস্থতায় সহায়ক। এটি হজম প্রক্রিয়া উন্নত করে, গ্যাস ও ব্লোটিং কমায় এবং অ্যাসিড রিফ্লাক্সের সমস্যা দূর করে।
রক্তে শর্করা নিয়ন্ত্রণ: খাবারের সঙ্গে ভিনেগার গ্রহণ রক্তের শর্করা নিয়ন্ত্রণে সহায়ক, বিশেষত ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য এটি উপকারী, কারণ এটি কার্বোহাইড্রেটের শোষণ বিলম্বিত করে এবং রক্তের শর্করা স্তর স্থিতিশীল রাখতে সাহায্য করে।
ওজন কমাতে সহায়ক: ভিনেগার শরীরের অতিরিক্ত ক্যালরি গ্রহণ কমাতে সাহায্য করে এবং মেটাবলিজম বৃদ্ধি করে, যার ফলে দীর্ঘমেয়াদে ওজন কমাতে সহায়ক হয়।
হজম শক্তি বৃদ্ধি: খাবারের আগে ভিনেগার পান হজম এনজাইমের কার্যক্ষমতা বাড়ায়, ফলে খাবার হজমে সহায়ক হয় এবং পুষ্টি শোষণের প্রক্রিয়া উন্নত হয়।
কীভাবে ভিনেগার পান করবেন?
জাপানিরা সাধারণত খাবারের আগে ১৫-৩০ মিলিলিটার (১-২ চামচ) ভিনেগার পান করেন, যা জল দিয়ে মিশিয়ে গ্রহণ করা হয়। অত্যধিক ভিনেগার পান করলে পাকস্থলীর অম্লতা বাড়তে পারে, তাই প্রতিদিন ৩০ মিলিলিটার ভিনেগার পান করাই সর্বোত্তম।
এই অভ্যাসটি জাপানিদের স্বাস্থ্যকর জীবনধারার অন্যতম কারণ, যা তাদের দৈনন্দিন খাদ্যাভ্যাসের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
শিহাব