
ছবি: সংগৃহীত
ওজন কমানো অনেকের জন্য একটি চ্যালেঞ্জিং কাজ হতে পারে, বিশেষ করে যখন প্রচলিত ডায়েট বা ব্যায়াম পরিকল্পনা অনুসরণ করা কঠিন মনে হয়। তবে কিছু ছোট আচার-আচরণ এবং জীবনধারা পরিবর্তন ডায়েট বা ব্যায়াম ছাড়াই ওজন কমাতে সহায়ক হতে পারে। এখানে ৯টি বিজ্ঞানসম্মত পদ্ধতির কথা বলা হয়েছে, যা আপনাকে ডায়েট বা ব্যায়াম ছাড়াই ওজন কমাতে সহায়ক হতে পারে।
১) ধীরে এবং ভালোভাবে চিবান
গবেষণা বলে যে খাবার ধীরে এবং ভালোভাবে চিবানো খাবারের পরিমাণ কমাতে, তৃপ্তির অনুভূতি বাড়াতে এবং ছোট অংশ খাওয়ার দিকে সহায়ক হতে পারে। প্রতিটি কামড়ে সময় নিলে আপনার ক্ষুধা কমে যেতে পারে, যা সময়ের সাথে ওজন কমাতে সাহায্য করবে।
২) উচ্চ ক্যালোরির খাবারের জন্য ছোট প্লেট ব্যবহার করুন
ছোট প্লেট ব্যবহারের মাধ্যমে আপনার মনকে বিভ্রান্ত করা যায় যে আপনি বেশি খাচ্ছেন, যা অংশের আকার ছোট করতে এবং ক্যালোরি গ্রহণ কমাতে সহায়ক হতে পারে। গবেষণায় দেখা গেছে, যারা ছোট প্লেট ব্যবহার করেন, তারা বেশি ক্যালোরি গ্রহণ না করেই ওজন কমাতে সক্ষম হয়।
৩) প্রোটিন খাওয়ার পরিমাণ বাড়ান
প্রোটিন খাওয়া ক্ষুধা কমাতে এবং বিপাকক্রিয়া বাড়াতে সাহায্য করে, যা ওজন নিয়ন্ত্রণে সহায়ক। প্রোটিন সমৃদ্ধ প্রাতঃরাশ গ্রহণ ক্ষুধা কমাতে এবং দিনের বাকি সময়ে কম ক্যালোরি খাওয়ার দিকে সহায়ক হতে পারে। ডিম, মাছ, মুরগি, এবং শাকসবজি প্রোটিনের ভালো উৎস।
৪) বাড়িতে খাবার প্রস্তুত করুন
বাড়িতে খাবার প্রস্তুত করা একটি দারুণ উপায় যাতে আপনি আপনার খাদ্যের উপাদান এবং পরিমাণ নিয়ন্ত্রণ করতে পারেন। গবেষণা অনুযায়ী, যারা বাড়িতে খাবার প্রস্তুত করেন, তারা যারা প্রক্রিয়াজাত খাবার বা বাইরের খাবার খায়, তাদের তুলনায় কম ওজন বাড়ান।
৫) ফাইবারযুক্ত খাবার খাওয়া
ফাইবার ক্ষুধা কমাতে, দীর্ঘস্থায়ী শক্তি প্রদান করতে এবং পূর্ণতার অনুভূতি তৈরি করতে সাহায্য করে। ফাইবার সমৃদ্ধ খাবার যেমন ডাল, ওটস এবং শাকসবজি হজম প্রক্রিয়া ধীর করে এবং ক্ষুধা নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে, যা ওজন কমাতে সহায়ক হতে পারে।
৬) নিয়মিত পানি পান করুন
খাবারের আগে পানি পান করলে ক্ষুধা কমে এবং অতিরিক্ত খাওয়া রোধ হতে পারে। গবেষণায় দেখা গেছে, যারা খাবারের আগে পানি পান করেন তারা কম ক্যালোরি গ্রহণ করেন, যা সময়ের সাথে ওজন কমাতে সহায়ক হতে পারে।
৭) অন্য কোনো ব্যস্ততার মধ্যে খাওয়া থেকে বিরত থাকুন
যখন আপনি খাচ্ছেন, তখন অন্য কোনো ব্যস্ততায় (যেমন টিভি দেখা বা ফোন ব্যবহার করা) না জড়িয়ে খাওয়ার প্রতি মনোযোগ দেওয়া আপনার খাওয়ার অভ্যাসকে প্রভাবিত করতে পারে। অতিরিক্ত মনোযোগ না দেওয়া খাবারের অনুভূতির মধ্যে ব্যাঘাত ঘটায়, যার ফলে অতিরিক্ত ক্যালোরি খাওয়া হতে পারে। তাই খাওয়ার সময় মনোযোগী হওয়া গুরুত্বপূর্ণ।
৮) যথেষ্ট ঘুমান এবং চাপ নিয়ন্ত্রণ করুন
যথেষ্ট ঘুম এবং চাপ নিয়ন্ত্রণ আপনার ক্ষুধা এবং ওজনের উপর শক্তিশালী প্রভাব ফেলতে পারে। ঘুমের অভাব এবং অতিরিক্ত চাপ হরমোনের ভারসাম্য বিঘ্নিত করে, যা অতিরিক্ত খাওয়া এবং ওজন বাড়ানোর কারণ হতে পারে। প্রতিদিন অন্তত ৭ ঘণ্টা ঘুমানো এবং চাপ কমানোর উপায় খোঁজা ওজন কমাতে সহায়ক হতে পারে।
৯) চিনি সমৃদ্ধ পানীয় পরিহার করুন
সোডা এবং রসের মতো চিনি যুক্ত পানীয়ের উচ্চ পরিমাণে সেবন ওজন বাড়ানো, উচ্চ বিএমআই এবং টাইপ ২ ডায়াবেটিস বা হৃদরোগের মতো স্বাস্থ্য সমস্যার সাথে সম্পর্কিত। চিনি যুক্ত পানীয়গুলি তরল ক্যালোরি দেয়, যা সলিড খাবারের মতো পূর্ণতার অনুভূতি তৈরি করে না, ফলে সহজে অতিরিক্ত ক্যালোরি খাওয়া হয়। চিনি যুক্ত পানীয়গুলোকে পানি, টকজাতীয় পানি, চা বা সবজি রসের সাথে প্রতিস্থাপন করার চেষ্টা করুন।
এই ছোট পরিবর্তনগুলো আপনার দৈনন্দিন জীবনে যুক্ত করলে আপনি ডায়েট বা ব্যায়াম ছাড়াই সহজেই ওজন কমাতে পারেন।
সূত্র: https://www.healthline.com/nutrition/11-ways-to-lose-weight-without-diet-or-exercise
আবীর