
ছবিঃ সংগৃহীত
হৃদরোগ একটি গুরুতর স্বাস্থ্য সমস্যা হতে পারে। বেশিরভাগ মানুষ মনে করে যে, এই রোগগুলো হঠাৎ করেই কোনো সতর্ক সংকেত ছাড়াই ঘটে। তবে, এগুলো অনেক সময় শরীর থেকে পূর্বেই কিছু সংকেত পাওয়া যায়। এসব সংকেতগুলো চিহ্নিত করা শুধু নিজের স্বাস্থ্য রক্ষা করার জন্য নয়, বরং আপনার চারপাশের মানুষের জীবনও বাঁচাতে সহায়ক হতে পারে। নিচে এমন ৫টি লক্ষণের কথা তুলে ধরা হলো, যেগুলো হৃদরোগের পূর্বাভাস দিতে পারে। আপনি যদি এসব লক্ষণ অনুভব করেন, তবে দ্রুত চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করুন।
১. ক্লান্তি (Fatigue)
ক্লান্তি হলো এমন একটি অবস্থা যেখানে শরীর খুবই দুর্বল অনুভব করে। এটি সাধারণত কঠিন একটি দিনের পর হতে পারে, তবে যদি কোনো কারণ ছাড়াই আপনি ক্লান্তি অনুভব করেন, তবে এটা সতর্ক সংকেত হতে পারে। হৃদরোগের পূর্বাভাস হিসেবে ক্লান্তি একটি সাধারণ লক্ষণ হতে পারে, যেখানে শরীরের রক্তপ্রবাহ কমে যায়। এই অবস্থায় দৈনন্দিন কাজগুলো করাও কঠিন হয়ে পড়তে পারে। দীর্ঘ সময় ধরে যদি এমনটা অনুভূত হয়, তবে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
২. অচেতন হওয়া (Unconsciousness)
আপনি কি মাঝে মাঝে অজ্ঞান হয়ে যান? একে বারবার ঘটছে? এটি হৃদরোগের এক অন্যতম লক্ষণ হতে পারে। শরীরের অজ্ঞান হওয়া বা বেহুশ হয়ে যাওয়ার কারণ হতে পারে অতিরিক্ত শারীরিক পরিশ্রম, ব্যথা, অথবা পানির অভাব। রক্তচাপ কমে গেলে এই অচেতন অবস্থা তৈরি হতে পারে, যা সাধারণত হার্টের রোগের একটি পূর্বাভাস। হার্টের অসুখে আক্রান্ত অনেকেই প্রথমে এমন অজ্ঞান হওয়া বা অচেতন হওয়ার অভিজ্ঞতা পেয়েছেন। তাই যদি আপনার আশেপাশে কেউ এমন সমস্যায় ভুগছে, তবে দ্রুত চিকিৎসকের কাছে যেতে বলুন।
৩. দ্রুত ও অবাঞ্ছিত ওজন বৃদ্ধি (Rapid Weight Gain)
সম্প্রতি কি আপনি দ্রুত ওজন বৃদ্ধি অনুভব করছেন? কি আপনার প্রিয় পোশাকগুলো আর পরতে পারছেন না? এটা হতে পারে হৃদরোগের একটি সংকেত। হৃদরোগের কারণে শরীরে অতিরিক্ত তরল জমা হতে পারে, যা ফোলা বা ব্লোটিং এবং দ্রুত ওজন বৃদ্ধি করতে পারে। এটি চিকিৎসার মাধ্যমে নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হলেও, ওজনের পরিবর্তন নিয়মিতভাবে মনিটর করা জরুরি এবং চিকিৎসকের পরামর্শ নেয়া উচিত।
৪. বমি ভাব এবং খাবারের প্রতি অনীহা (Nausea and Loss of Appetite)
পেটের গোলমাল, বমি ভাব এবং খাবারের প্রতি অনীহা—এসব লক্ষণও হৃদরোগের একটি সংকেত হতে পারে। অনেক সময় মানুষ এই লক্ষণগুলোকে সাধারণ পেটের সমস্যা মনে করে এবং অবহেলা করে। যদিও এসব লক্ষণ সবসময়ই হৃদরোগের কারণ নয়, তবে যদি এটি হঠাৎ করে শুরু হয়, তবে দ্রুত চিকিৎসকের কাছে যেতে হবে।
৫. অনিয়মিত হৃদস্পন্দন (Irregular Heartbeat)
অনিয়মিত হৃদস্পন্দন সাধারণত অনেক মানুষকেই হয়, এবং এটি উত্তেজনা বা অ্যাড্রেনালিনের কারণে হতে পারে। তবে যদি এই অনিয়মিত হৃদস্পন্দন নিয়মিত হয়ে যায়, তাহলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। এটি অরিদমিয়া (Arrhythmia) হতে পারে, যা হৃদযন্ত্রের সঠিকভাবে কাজ না করার কারণ হয়ে দাঁড়ায় এবং এর ফলে স্ট্রোকের ঝুঁকি বেড়ে যায়।
ইমরান