ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৬ মার্চ ২০২৫, ১২ চৈত্র ১৪৩১

যুক্তরাজ্যের এভিয়ান ইনফ্লুয়েঞ্জা মানবদেহের জন্য কতটা ক্ষতিকর

প্রকাশিত: ১৯:৪৪, ২৪ মার্চ ২০২৫; আপডেট: ১৯:৪৫, ২৪ মার্চ ২০২৫

যুক্তরাজ্যের এভিয়ান ইনফ্লুয়েঞ্জা মানবদেহের জন্য কতটা ক্ষতিকর

ছবি: সংগৃহীত

প্রথমবারের মতো, ইংল্যান্ডের ইয়র্কশায়ারে একটি ভেড়ার দেহে বার্ড ফ্লুর ( H5N1) স্ট্রেন শনাক্ত হয়েছে। এটি খামারে রুটিন নজরদারির সময় আবিষ্কৃত হয়, যেখানে আগেও আটক পাখিদের মধ্যে ভাইরাসটি পাওয়া গিয়েছিল। কর্তৃপক্ষ সংক্রমণ ঠেকাতে কঠোর বায়োসুরক্ষা ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে এবং আশ্বস্ত করেছে যে জনসাধারণের জন্য ঝুঁকি এখনো কম।

মানুষের মধ্যে সংক্রমণ হয়েছিল ২০২৫ সালের জানুয়ারির শেষ দিকে, ওয়েস্ট মিডল্যান্ডসে একজন ব্যক্তির দেহে (H5N1) শনাক্ত হয়েছিল। সেই ব্যক্তি সংক্রমিত পাখিদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ ও দীর্ঘস্থায়ী সংস্পর্শে ছিলেন। মানবদেহে সংক্রমণ অত্যন্ত বিরল এবং এই ক্ষেত্রে সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ার কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি। স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ পরিস্থিতি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে। সাধারণত সংক্রমিত পাখি বা দূষিত পরিবেশের সরাসরি সংস্পর্শে এলে ঘটে। মানুষ থেকে মানুষে সংক্রমণ খুবই অস্বাভাবিক।

মানুষের দেহে বার্ড ফ্লুর প্রধান লক্ষণগুলো দ্রুত দেখা দিতে পারে। এগুলোর মধ্যে রয়েছে খুব বেশি জ্বর বা শরীর গরম বা ঠান্ডা লাগা, পেশীতে ব্যথা, মাথাব্যথা, কাশি বা শ্বাসকষ্ট। অন্যান্য প্রাথমিক উপসর্গের মধ্যে ডায়রিয়া, বমি, পেটব্যথা, বুকে ব্যথা, নাক ও মাড়ি থেকে রক্তক্ষরণ এবং চোখের প্রদাহ থাকতে পারে। সংক্রমণের পর সাধারণত ৩ থেকে ৫ দিনের মধ্যে লক্ষণগুলো দেখা দেয়।

বিশেষজ্ঞদের মতে, জনসাধারণকে অসুস্থ বা মৃত পাখির সংস্পর্শ এড়িয়ে চলতে হবে এবং মুরগির মাংস ও ডিম ভালোভাবে রান্না করে খান। পাখি সামলানোর সময় উপযুক্ত ব্যক্তিগত সুরক্ষামূলক সরঞ্জাম ব্যবহার করুন এবং ঝুঁকি কমাতে বায়োসুরক্ষা প্রোটোকল অনুসরণ করুন।

সর্বোপরি, জনসাধারণের জন্য বর্তমান ঝুঁকি কম হলেও, স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ পরিস্থিতি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে এবং সম্ভাব্য প্রাদুর্ভাব প্রতিরোধে ব্যবস্থা নিচ্ছে।

এর আগে , ২০২১ ও ২০২২ সালে যুক্তরাজ্যের উপকূলজুড়ে সমুদ্র পাখিদের মৃত্যু শুরু হয় এবং ধীরে ধীরে ভাইরাসটি বন্য পাখিদের পাশাপাশি পোলট্রিতেও ছড়িয়ে পড়ে।

বর্তমান পোলট্রি প্রাদুর্ভাব শুরু হয়েছিল ২০২৪ সালের ৫ নভেম্বর, যখন ইংল্যান্ডে (H5N5) স্ট্রেন শনাক্ত হয়। ১২ দিন পর (H5N1)স্ট্রেনও পাওয়া যায়। এখন পর্যন্ত প্রায় ৫০টি কেস শনাক্ত হয়েছে — যার বেশিরভাগই ইংল্যান্ডে, স্কটল্যান্ডে ২টি এবং উত্তর আয়ারল্যান্ডে ৪টি।

বেশিরভাগ সংক্রমণ পূর্ব ইংল্যান্ডে ঘটেছে, বিশেষ করে এসেক্স, সাফোক এবং ইয়র্কশায়ার অঞ্চলে

বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করেছেন যে, প্রতিটি সংক্রমণ ভাইরাসটির মানবদেহে অভিযোজিত হওয়ার ঝুঁকি বাড়ায়,  যা একসময় মহামারিতে রূপ নিতে পারে।

মেহেদী হাসান

×