ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৬ মার্চ ২০২৫, ১২ চৈত্র ১৪৩১

অতিরিক্ত হাই তোলার কারণ কী?

প্রকাশিত: ১৫:৫৯, ২৪ মার্চ ২০২৫

অতিরিক্ত হাই তোলার কারণ কী?

ছবি: সংগৃহীত

হাই তোলা সাধারণত ঘুমের অনুভূতি বা একঘেয়েমির সঙ্গে সম্পর্কিত, যা মস্তিষ্ককে সতর্ক রাখতে সাহায্য করে। তবে, যদি আপনি দিন-রাত বারবার হাই তোলেন, তাহলে এটি অনেক ধরনের স্বাস্থ্য সমস্যার ইঙ্গিত হতে পারে।

বিশেষজ্ঞরা জানান, অতিরিক্ত হাই তোলা হৃদরোগ, মানসিক সমস্যা এমনকি স্নায়ুবিক সমস্যারও লক্ষণ হতে পারে। তবে, কখন এটি চিন্তার বিষয় হয়ে দাঁড়ায়?

ভারতের স্যার এইচএন রিলায়েন্স হাসপাতালের অভ্যন্তরীণ চিকিৎসক ডাঃ দিভ্য গোপাল বলেন, "অতিরিক্ত হাই তোলা কতটা হবে, তা নির্দিষ্ট করা সম্ভব নয়, কারণ এটি ব্যক্তির ওপর নির্ভর করে। তবে, যদি হাই তোলার সঙ্গে অন্য উপসর্গ যেমন ক্লান্তি, শ্বাসকষ্ট, বা মাথা ঘোরা থাকে, তবে আপনাকে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত। এটি সাধারণত হঠাৎ ঘটে এবং কোনো স্পষ্ট কারণ ছাড়া।"

অতিরিক্ত হাই তোলার কারণসমূহ:

ডাঃ গোপাল জানাচ্ছেন, অতিরিক্ত হাই তোলা শরীরে কিছু অন্তর্নিহিত সমস্যার ইঙ্গিত দিতে পারে, যেমন:

  • ঘুমের অভাব: পর্যাপ্ত ঘুম না হলে হাই তোলা বাড়তে পারে।
  • একঘেয়েমি বা মানসিক ক্লান্তি: মানসিক অবস্থা ক্লান্ত হলে হাই তোলা হতে পারে।
  • হৃদরোগ: অতিরিক্ত হাই তোলা ভ্যাগাস নার্ভের সঙ্গে সম্পর্কিত হতে পারে, যা মস্তিষ্ক থেকে হৃদয় এবং পাকস্থলীতে সিগন্যাল পাঠায়।
  • স্নায়ুবিক সমস্যা: কিছু ক্ষেত্রে, অতিরিক্ত হাই তোলা স্নায়ুবিক সমস্যার (যেমন এপিলেপসি) লক্ষণ হতে পারে।
  • মস্তিষ্কের সমস্যা: যদিও খুব কম ক্ষেত্রে, অতিরিক্ত হাই তোলা মস্তিষ্কের টিউমারেরও লক্ষণ হতে পারে।

আইরন অভাব এবং অক্সিজেনের অভাবের সঙ্গে সম্পর্ক:

ডাঃ গোপাল বলেন, "আইরন রক্তে অক্সিজেন পরিবহন করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। যখন শরীরে আইরনের অভাব হয়, তখন অক্সিজেন কম পৌঁছায়, যার ফলে অতিরিক্ত হাই তোলা শুরু হয়। এটি শরীরের অক্সিজেন গ্রহণ বাড়ানোর একটি প্রতিকারমূলক প্রক্রিয়া।"

এছাড়া, স্লিপ অ্যাপনিয়া বা দীর্ঘমেয়াদী ফুসফুসের রোগও অক্সিজেনের স্তরের কমিয়ে দিতে পারে, যা অতিরিক্ত হাই তোলার কারণ হতে পারে।

হোম রেমেডি বা ঘরোয়া চিকিৎসা:

এখানে কিছু ঘরোয়া চিকিৎসা দেয়া হলো যা অতিরিক্ত হাই তোলার সমস্যা কমাতে সাহায্য করতে পারে:

  • ঘুমের স্বাস্থ্য সচেতনতা: নিয়মিত ঘুমের রুটিন তৈরি করা এবং আরামদায়ক পরিবেশ নিশ্চিত করা।
  • আইরন সমৃদ্ধ খাবার খাওয়া: পালং শাক, আপেল, বেরি জাতীয় ফল খাবারের তালিকায় রাখতে হবে।
  • যথেষ্ট পানি পান করা: জলশূন্যতা এবং আইরন অভাবের উপসর্গ প্রায় একে অপরের মতো হতে পারে।
  • নিয়মিত শারীরিক ব্যায়াম: শারীরিক কার্যক্রম অক্সিজেনের স্তর বৃদ্ধি এবং শরীরের সার্বিক সুস্থতায় সাহায্য করতে পারে।

যদিও ঘরোয়া চিকিৎসা কিছু হালকা ক্ষেত্রে উপকারি হতে পারে, তবে যদি অতিরিক্ত হাই তোলা স্থায়ী হয়, তবে একজন চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া জরুরি।

শিহাব

×