
ছবি: সংগৃহীত
পুরুষদের কোমরের মাপ হতে পারে ক্যান্সার ঝুঁকি নির্ধারণের একটি আরও কার্যকরী উপায়, এমনটাই জানিয়েছে একটি নতুন গবেষণা। লুন্ড ইউনিভার্সিটির গবেষকরা জানিয়েছেন, যেখানে বিজ্ঞানীরা দীর্ঘদিন ধরে বিএমআই (বডি ম্যাস ইনডেক্স) ব্যবহার করে মোটা হওয়া এবং তার পরিণতিতে ক্যান্সারের ঝুঁকি নির্ধারণ করেছেন, সেখানে এখন তারা দেখেছেন যে, পুরুষদের কোমরের মাপ তাদের ক্যান্সারের ঝুঁকি সম্পর্কে আরও নির্ভুল তথ্য দিতে পারে।
গবেষণাটি অনুসারে, কোমরের মাপের অতিরিক্ত ৪ ইঞ্চি পুরুষদের ক্যান্সারের ঝুঁকি ২৫ শতাংশ বাড়িয়ে দেয়।
গবেষণার পদ্ধতি
গবেষণাটি ১৯৮১ থেকে ২০১৯ সালের মধ্যে ৩,৩৯,১৯০ জনের স্বাস্থ্য রেকর্ড বিশ্লেষণ করে করা হয়। ১৪ বছরের দীর্ঘ পর্যবেক্ষণে দেখা গেছে, প্রায় ১৮,১৮৫ জন ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়েছেন, যার মধ্যে রয়েছে—খাদ্যনালির ক্যান্সার, বড় অন্ত্রের ক্যান্সার, যকৃত, প্যানক্রিয়াস, স্তন এবং গলব্লাডারের ক্যান্সার। গবেষকরা এই সময়কালে ধূমপান এবং বয়সসহ অন্যান্য ঝুঁকি উপাদানও বিবেচনায় নেন।
কোমরের মাপ এবং বিএমআই-র পার্থক্য
কোমরের মাপ সাধারণত ভুঁড়ির চর্বি পরিমাপ করে, যা শরীরের গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গগুলোর আশপাশে জমে। অন্যদিকে, বিএমআই শুধু শরীরের মোট ওজনের ওপর নির্ভর করে এবং এটি শরীরের কোথায় চর্বি জমেছে তা নির্ধারণে অক্ষম।
গবেষণার ফলাফল অনুসারে, কোমরের মাপ বাড়লে ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়ে, বিশেষ করে পুরুষদের ক্ষেত্রে। উদাহরণস্বরূপ, ৪ ইঞ্চি (১১ সেন্টিমিটার) বাড়ানোর ফলে ঝুঁকি ২৫ শতাংশ বেড়ে যায়। তবে বিএমআই বাড়ানোর ফলে যেমন ২৪ থেকে ২৭ এ পৌঁছালে ঝুঁকি ১৯ শতাংশ বেড়ে যায়, কোমরের অতিরিক্ত চর্বি ঝুঁকিকে আরও বেশি বাড়িয়ে দেয়।
পুরুষদের ক্ষেত্রে কোমরের মাপ কেন বেশি কার্যকরী?
পুরুষদের শরীরে সাধারণত চর্বি পেটের মধ্যে জমে, যা গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গগুলোকে ঘিরে থাকে। ফলে কোমরের মাপের মাধ্যমে চর্বি পরিমাপ করা পুরুষদের ক্যান্সার ঝুঁকি নির্ধারণে আরও কার্যকরী। পাশাপাশি, একই বিএমআই থাকলেও চর্বি জমার জায়গা এবং পরিমাণ ভিন্ন হলে ক্যান্সারের ঝুঁকি ভিন্ন হতে পারে।
এই গবেষণাটি নতুন একটি দৃষ্টিকোণ সৃষ্টি করেছে, যা ভবিষ্যতে ক্যান্সার ঝুঁকি নির্ধারণে সাহায্য করতে পারে।
শিহাব