ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৬ মার্চ ২০২৫, ১১ চৈত্র ১৪৩১

১০ বছরে যক্ষা শনাক্ত রোগী বেড়েছে ৫০ শতাংশ

প্রকাশিত: ০৮:৫৯, ২৪ মার্চ ২০২৫; আপডেট: ০৯:০২, ২৪ মার্চ ২০২৫

১০ বছরে যক্ষা শনাক্ত রোগী বেড়েছে ৫০ শতাংশ

ছবি:সংগৃহীত

রাজধানীর শ্যামলী এলাকায় অবস্থিত ৫০ শয্যা বিশিষ্ট যক্ষা হাসপাতালে প্রতিদিন কয়েকশ রোগী উপসর্গ নিয়ে আসেন, যার মধ্যে অন্তত ৬০ শতাংশ যক্ষা পজিটিভ হিসেবে শনাক্ত হন। শনাক্ত হওয়া রোগীদের একটি অংশকে হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিতে হয়। তবে দেরিতে চিকিৎসা শুরু হওয়ায় অনেক ক্ষেত্রে রোগ জটিল আকার ধারণ করে।

 

 

জাতীয় যক্ষা নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচির তথ্য অনুযায়ী, গত বছর সারাদেশে ৩ লাখ ১৩ হাজার যক্ষা রোগী শনাক্ত হয়েছেন। তবে সচেতনতার অভাবে অধিকাংশ ক্ষেত্রে রোগীরা ওষুধের ডোজ সম্পূর্ণ না করায় পুনরায় আক্রান্ত হচ্ছেন এবং হাসপাতালে ভর্তি হতে বাধ্য হচ্ছেন। 

একজন রোগীর অভিজ্ঞতা শেয়ার করে বলেন, "দুই মাস ধরে কাশি, হাঁচি এবং কাশির সাথে বমির মতো উপসর্গ ছিল। পরে মেডিকেলে পরীক্ষা করানোর পর ধরা পড়ে যক্ষা হয়েছে।" চিকিৎসকরা বলছেন, যক্ষা সম্পূর্ণভাবে ভালো হলেও অসচেতনতার কারণে রোগটি জটিল আকার ধারণ করে। এতে প্রতি লাখে অন্তত ২৬ জনের মৃত্যু হয়। চিকিৎসকরা জানান, ওষুধ ঠিকমতো খেলে যক্ষা সম্পূর্ণভাবে ভালো হয়। তবে অনেক রোগী ওষুধ ঠিকমতো খান না, যা পুনরায় রোগের প্রকোপ বাড়ায়।

 

 

বর্তমানে যক্ষার চিকিৎসায় ইনজেকশনের পরিবর্তে ট্যাবলেট ব্যবহার করা হয়। ছয় মাস থেকে নয় মাসের মধ্যে ওষুধ সেবন করলে রোগী সম্পূর্ণ সুস্থ হয়ে যান। তবে অনেকেই এই তথ্য জানেন না বা সচেতন নন। জাতীয় যক্ষা নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচির আওতায় বিনামূল্যে ওষুধ প্রদান করা হয় এবং প্রত্যন্ত অঞ্চলেও এই ওষুধ পাওয়া যায়। কিন্তু সচেতনতার অভাবে অনেক রোগী চিকিৎসা নেন না বা ওষুধের কোর্স সম্পূর্ণ করেন না।

জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আন্তর্জাতিক সহায়তার ঘাটতি এবং বেসরকারি উদ্যোগ কমে যাওয়ায় যক্ষা নিয়ন্ত্রণে কঠোর মনিটরিং ও রোগীদের কাউন্সেলিংয়ের উপর জোর দেওয়া প্রয়োজন। তারা বলেন, "রোগীদের মধ্যে সচেতনতার অভাব রয়েছে। তাদের কাউন্সেলিং করা প্রয়োজন। যক্ষা কীভাবে হয়, এর চিকিৎসা কী এবং কীভাবে প্রতিরোধ করা যায়, সে সম্পর্কে মানুষকে জানাতে হবে।"

 

 

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার লক্ষ্য অনুযায়ী, ২০৩০ সালের মধ্যে বাংলাদেশ থেকে যক্ষা নির্মূল করতে হবে। এই লক্ষ্য অর্জনে নতুন আক্রান্ত রোগী শনাক্তকরণ, সচেতনতা বৃদ্ধি এবং চিকিৎসা ব্যবস্থা জোরদার করার উপর জোর দেওয়া হচ্ছে। বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, সঠিক কৌশল অবলম্বন করে এবং জনসচেতনতা বৃদ্ধি করে যক্ষা নির্মূলের লক্ষ্য অর্জন সম্ভব।

সূত্র: https://youtu.be/xTf-W1jlOtc?si=SSOwXVPOTfFOPwsd

আঁখি

×