
ছবি: সংগৃহীত
প্রোটিন আমাদের শরীরের জন্য একটি অপরিহার্য পুষ্টি উপাদান। এটি পেশি গঠনের পাশাপাশি হরমোন ও এনজাইম তৈরিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। কিন্তু অনেকেই ওজন কমানো বা পেশি বাড়ানোর লক্ষ্যে প্রয়োজনের চেয়ে বেশি প্রোটিন গ্রহণ করেন। এতে শরীরের কী প্রভাব পড়ে? বিশেষজ্ঞদের মতে, অতিরিক্ত প্রোটিন গ্রহণ যেমন উপকারী হতে পারে, তেমনই কিছু ঝুঁকিও সৃষ্টি করতে পারে।
প্রোটিন গ্রহণের নিরাপদ মাত্রা কী?
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO) ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের খাদ্য ও পুষ্টি বোর্ড (Food and Nutrition Board) অনুযায়ী, একজন সাধারণ মানুষের দৈনিক প্রোটিন গ্রহণের পরিমাণ হওয়া উচিত প্রতি কেজি ওজনের জন্য ০.৮ গ্রাম। তবে ক্রীড়াবিদদের জন্য এই পরিমাণ ১.২-২.০ গ্রাম পর্যন্ত হতে পারে। এর বেশি প্রোটিন গ্রহণ করলে কিডনি, হজম প্রক্রিয়া এবং অন্যান্য শারীরিক কার্যক্রমে নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।
অতিরিক্ত প্রোটিনের ফলে সম্ভাব্য ঝুঁকি
১. কিডনির ওপর চাপ: অতিরিক্ত প্রোটিন গ্রহণ কিডনির কার্যকারিতায় প্রভাব ফেলতে পারে, বিশেষ করে যাদের কিডনির সমস্যা রয়েছে।
২. হাড়ের ক্ষয়: কিছু গবেষণায় দেখা গেছে, বেশি প্রোটিন গ্রহণ করলে ক্যালসিয়ামের ভারসাম্য নষ্ট হতে পারে, যা হাড়ের ক্ষয়ের কারণ হতে পারে।
৩. হজম সমস্যা: উচ্চ মাত্রার প্রোটিন গ্রহণ করলে কোষ্ঠকাঠিন্য, ডায়রিয়া বা ফোলাভাবের মতো সমস্যা দেখা দিতে পারে।
৪. ওজন বৃদ্ধির ঝুঁকি: অনেকেই মনে করেন প্রোটিন বেশি খেলে ওজন কমে, কিন্তু অতিরিক্ত প্রোটিন গ্রহণ করলে তা শরীরে ফ্যাট হিসেবে জমা হতে পারে।
প্রোটিন নিয়ে প্রচলিত কিছু ভুল ধারণা
✔ প্রোটিন বেশি খেলেই পেশি বাড়বে – পেশি বৃদ্ধির জন্য শুধু প্রোটিন নয়, সঠিক ব্যায়াম ও বিশ্রামেরও প্রয়োজন।
✔ প্রোটিন কেবল প্রাণিজ উৎস থেকেই পাওয়া যায় – উদ্ভিদজাত খাবার থেকেও উচ্চমানের প্রোটিন পাওয়া সম্ভব, যেমন ডাল, সয়াবিন, বাদাম ও শাকসবজি।
✔ অতিরিক্ত প্রোটিন গ্রহণে কোনো ক্ষতি হয় না – বাস্তবে অতিরিক্ত প্রোটিন গ্রহণ করলে হজম সমস্যা, কিডনি সমস্যা ও অন্যান্য স্বাস্থ্যগত জটিলতা দেখা দিতে পারে।
বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ
বিশেষজ্ঞরা বলেন, প্রোটিন গ্রহণে ভারসাম্য রক্ষা করা জরুরি। আমেরিকান জার্নাল অব ক্লিনিকাল নিউট্রিশন (AJCN)-এ প্রকাশিত এক গবেষণায় বলা হয়েছে, সুষম খাদ্যাভ্যাস অনুসরণ করাই স্বাস্থ্যকর উপায়। অতিরিক্ত প্রোটিন গ্রহণের পরিবর্তে স্বাস্থ্যকর খাবারের মাধ্যমে প্রয়োজনীয় পুষ্টি গ্রহণ করাই উত্তম।
আসিফ