
ছবি: সংগৃহীত
আজকের যুগে মাথাব্যথা একটি সাধারণ সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে, যা অনেক সময় শারীরিক অস্বস্তি, মানসিক চাপ, শারীরিক পরিশ্রম বা পানি স্বল্পতার কারণে হতে পারে। যদিও মাথাব্যথা কমানোর জন্য বিভিন্ন ওষুধ যেমন আইবুপ্রোফেন বা প্যারাসিটামল সহায়ক হতে পারে, তবে কিছু সাধারণ গৃহস্থালী পদ্ধতি ও জীবনযাত্রার পরিবর্তন মাথাব্যথা দ্রুত কমাতে সাহায্য করতে পারে, যার জন্য ওষুধের প্রয়োজন হবে না।
এখানে ৯টি কার্যকর উপায় দেওয়া হলো, যা মাথাব্যথা কমাতে সহায়ক হতে পারে:
১) ম্যাসাজ থেরাপি
ম্যাসাজ মাথার ব্যথা কমানোর জন্য কার্যকরী একটি পদ্ধতি। অনেক সময় আমাদের মাংসপেশীতে চাপ বা কষ পরলে মাথাব্যথা শুরু হয়। পেশীর শক্তি দূর করতে এবং ব্যথা উপশমে ম্যাসাজ থেরাপি সাহায্য করতে পারে। বিভিন্ন ধরনের ম্যাসাজ যেমন সুইডিশ, ডিপ টিস্যু, শিয়াতসু ইত্যাদি চেষ্টা করা যেতে পারে।
২) গরম/ঠান্ডা প্যাক
মাথাব্যথার কারণে মাংসপেশীতে চাপ জমে যায়, যা ঠান্ডা বা গরম প্যাক দিয়ে উপশম করা যেতে পারে। ঠান্ডা প্যাক হিসেবে বরফ বা আইস প্যাক ব্যবহার করতে পারেন, আর গরম প্যাক হিসেবে মাইক্রোওয়েভে গরম করা চাল বা হিটিং প্যাড ব্যবহার করা যেতে পারে।
৩) অ্যারোমাথেরাপি
অ্যারোমাথেরাপি হলো একটি প্রক্রিয়া যেখানে বিশেষ গন্ধ মানুষের মস্তিষ্কে ইতিবাচক প্রভাব ফেলে। পেপারমিন্ট, ইউকালিপটাস বা ল্যাভেন্ডার তেলের গন্ধ মাথাব্যথা কমাতে সাহায্য করতে পারে। এই ধরনের তেল আপনার স্থানীয় দোকান বা অনলাইন থেকে সহজেই পাওয়া যায়।
৪) একুপাংচার
একুপাংচার হল একটি প্রাচীন পদ্ধতি যেখানে সূঁচের মাধ্যমে শরীরের নির্দিষ্ট পয়েন্টে চাপ দেওয়া হয়, যা শরীরের প্রাকৃতিক ব্যথানাশক উপাদান মুক্ত করতে সাহায্য করে। এটি মাথাব্যথা কমাতে সহায়ক হতে পারে।
৫) শ্বাস প্রশ্বাসের ব্যায়াম
মাথাব্যথা যখন মানসিক চাপের কারণে হয়, তখন শ্বাস প্রশ্বাসের ব্যায়াম খুবই কার্যকরী হতে পারে। নিয়মিত শ্বাস প্রশ্বাসের ব্যায়াম মাথার চাপ কমাতে এবং পেশী শিথিল করতে সাহায্য করে। পাঁচ সেকেন্ড শ্বাস নিন এবং পাঁচ সেকেন্ড শ্বাস ছাড়ুন।
৬) পানি পান করা
পানি কম খাওয়া মাথাব্যথার একটি প্রধান কারণ। সুতরাং, পর্যাপ্ত পানি পান করা মাথাব্যথা থেকে মুক্তি দিতে পারে। এছাড়া ইলেকট্রোলাইটযুক্ত পানীয় যেমন গেটোরেড বা পাওয়ারেডও মাথাব্যথা কমাতে সহায়ক হতে পারে।
৭) ঘুম
ঘুমের অভাবও মাথাব্যথার অন্যতম কারণ। পর্যাপ্ত ঘুম না হলে মাথাব্যথা হতে পারে। নিয়মিত ঘুমের সময়সূচি পালন করা এবং ঘুমানোর আগে ক্যাফিন বা অ্যালকোহল এড়ানো ঘুমের মান উন্নত করতে সাহায্য করবে।
৮) মাথাব্যথা ডায়েট অনুসরণ করা
কিছু খাবার যেমন চকলেট, কফি, টমেটো, প্রক্রিয়াজাত মাংস বা পিৎজার মতো খাবার মাথাব্যথার কারণ হতে পারে। আপনার দৈনন্দিন খাবারের মধ্যে কোন খাবার মাথাব্যথা বাড়াচ্ছে তা চিহ্নিত করে, সেগুলো এড়িয়ে চলা যেতে পারে।
৯) শান্তিদায়ক চা পান করা
হারবাল চা যেমন ক্যামোমাইল, আদা বা ড্যান্ডেলিয়ন চা মাথাব্যথা কমাতে সহায়ক হতে পারে। এসব চা শরীরকে শিথিল করতে সাহায্য করে, তবে কোন হারবাল চা পান করার আগে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।
এই সহজ পদ্ধতিগুলো আপনার দৈনন্দিন জীবনে প্রয়োগ করলে আপনি মাথাব্যথা থেকে দ্রুত মুক্তি পেতে পারেন, এবং ওষুধ ছাড়াই মাথাব্যথা উপশম করতে সক্ষম হবেন।
সূত্র: https://www.healthline.com/health/headache-hacks#tea
আবীর