
ছবি: সংগৃহীত
দাঁতের সংবেদনশীলতা বা হাইপারসেনসিটিভিটি এমন একটি সমস্যা যেখানে এনামেল ক্ষয় হয়ে যাওয়ার ফলে দাঁতের অভ্যন্তরীণ স্তর ডেন্টিন উন্মুক্ত হয়ে যায়। এতে গরম, ঠান্ডা, মিষ্টি বা টক খাবারের সংস্পর্শে দাঁতে ব্যথা অনুভূত হয়। এছাড়াও, মাড়ির ক্ষয়, ক্যাভিটি বা অতিরিক্ত শক্তভাবে ব্রাশ করার মতো অভ্যাসের কারণেও দাঁতের সংবেদনশীলতা দেখা দিতে পারে।
ম্যাক্স মাল্টি স্পেশালিটি সেন্টার, নয়ডার সিনিয়র ডিরেক্টর ও ওরাল অনকোলজি বিভাগের প্রধান ডা. কেশব নৈঠানি বলেন, "দাঁতের সংবেদনশীলতা সাধারণ একটি ডেন্টাল সমস্যা, যা দাঁতের এনামেল ক্ষয় হয়ে যাওয়ার ফলে ঘটে। ডেন্টিন স্তরের মধ্যে ক্ষুদ্র নলিকা থাকে, যা নার্ভের সাথে সংযুক্ত। ফলে বাইরের খাবার বা পানীয়র সংস্পর্শে দাঁতে ব্যথা হতে পারে।"
তবে সঠিক যত্ন ও কিছু জীবনযাত্রার পরিবর্তনের মাধ্যমে দাঁতের সংবেদনশীলতা এবং ব্যথা এড়ানো সম্ভব। আসুন জেনে নেওয়া যাক ৭টি কার্যকর উপায়—
১. সংবেদনশীলতা প্রতিরোধী টুথপেস্ট ব্যবহার করুন
পটাসিয়াম নাইট্রেট বা স্ট্যানাস ফ্লুরাইডযুক্ত বিশেষ টুথপেস্ট ব্যথার সংকেত দাঁতের নার্ভে পৌঁছানো বন্ধ করতে সহায়তা করে এবং সংবেদনশীলতা ধীরে ধীরে কমিয়ে আনে।
২. ফ্লুরাইড ট্রিটমেন্ট গ্রহণ করুন
ডেন্টাল চেম্বারে গিয়ে ফ্লুরাইড ট্রিটমেন্ট করালে দাঁতের এনামেল আরও শক্তিশালী হয় এবং পুনরায় মিনারেল জমতে সাহায্য করে, যা সংবেদনশীলতা কমায়।
৩. ডেন্টাল সিল্যান্ট ব্যবহার করুন
এটি দাঁতের উন্মুক্ত ডেন্টিন স্তর ঢেকে দেয় এবং বাইরের খাবার বা পানীয়র সংস্পর্শ থেকে দাঁতকে সুরক্ষিত রাখে।
৪. দাঁত ঘষার অভ্যাস থাকলে মাউথগার্ড ব্যবহার করুন
অনেকেই ঘুমের সময় দাঁত ঘষেন, যা এনামেল ক্ষয়ের অন্যতম প্রধান কারণ। এক্ষেত্রে ডেন্টিস্টের পরামর্শ নিয়ে বিশেষ মাউথগার্ড ব্যবহার করলে দাঁতের ক্ষয় প্রতিরোধ করা সম্ভব।
৫. খাদ্যাভ্যাস ও জীবনযাত্রায় পরিবর্তন আনুন
অ্যাসিডিক খাবার যেমন—লেবু, টক ফল ও কার্বনেটেড পানীয় কম খাওয়ার চেষ্টা করুন। শক্ত ব্রাশের পরিবর্তে নরম ব্রাশ ব্যবহার করুন এবং দাঁতে অতিরিক্ত জোরে ঘষাঘষি না করে ধীরে ধীরে ব্রাশ করুন।
৬. নিয়মিত ডেন্টাল চেকআপ করুন
ডেন্টিস্টের কাছে নিয়মিত চেকআপ করালে দাঁতের স্বাস্থ্য ভালো থাকে এবং সংবেদনশীলতার কারণগুলো আগেভাগেই শনাক্ত করা সম্ভব হয়।
৭. উন্নত ডেন্টাল চিকিৎসা গ্রহণ করুন
যদি সমস্যা গুরুতর হয়, তবে ডেন্টিস্ট দাঁতের বন্ডিং, গাম গ্রাফটিং বা রুট ক্যানাল থেরাপির মতো উন্নত চিকিৎসা পরামর্শ দিতে পারেন, যা দীর্ঘস্থায়ী সমাধান দিতে পারে। দাঁতের সংবেদনশীলতা নিয়ে অবহেলা না করে সময়মতো সঠিক ব্যবস্থা নিন এবং সুস্থ হাসি বজায় রাখুন!
রিফাত