
ছবি: সংগৃহীত
ধূমপান কেবল ফুসফুস বা হৃদযন্ত্রের ক্ষতি করে না, এটি আমাদের মানসিক স্বাস্থ্যের ওপরও মারাত্মক প্রভাব ফেলে। সম্প্রতি, ম্যাক্স সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালের মানসিক স্বাস্থ্য ও আচরণবিজ্ঞান বিভাগের প্রধান ডা. সমীর মালহোত্রা জানিয়েছেন, “নিকোটিন এক ধরনের উত্তেজক পদার্থ, যা রক্তনালীগুলো সংকুচিত করে এবং মস্তিষ্কসহ শরীরের বিভিন্ন অংশে রক্তপ্রবাহ ব্যাহত করে। ধূমপান ধমনীর মধ্যে প্ল্যাক জমার ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয়, যা শরীরের রক্তপ্রবাহে বাধা সৃষ্টি করে।”
বিশেষজ্ঞদের মতে, ধূমপানের ফলে মানসিক স্বাস্থ্যের ওপর যেসব নেতিবাচক প্রভাব পড়ে, তা হলো—
১. স্মৃতিশক্তি হ্রাস
ধূমপানের ফলে রক্তে কার্বন মনোক্সাইডের পরিমাণ বেড়ে যায়, যা অক্সিজেন সরবরাহে বাধা সৃষ্টি করে। দীর্ঘমেয়াদে ধূমপানের ফলে স্মৃতিশক্তি দুর্বল হয়ে যায় এবং মস্তিষ্কের ধূসর পদার্থের পরিমাণ কমে যেতে পারে।
২. উদ্বেগ ও মানসিক চাপ বৃদ্ধি
নিকোটিন মস্তিষ্কের নিউরোকেমিক্যাল ভারসাম্য নষ্ট করে দেয়। বিশেষ করে, ডোপামিন ও নরএপিনেফ্রিনের মাত্রা পরিবর্তন হওয়ায় ধূমপায়ীদের মধ্যে উদ্বেগ, নার্ভাসনেস এবং স্ট্রেসের প্রবণতা বেড়ে যায়।
৩. মেজাজের পরিবর্তন ও বিষণ্নতা
ধূমপানের ফলে শরীরে প্রদাহজনিত প্রোটিন যেমন IL-6 ও TNF-α-এর মাত্রা বেড়ে যায়। এতে মস্তিষ্কে প্রদাহ সৃষ্টি হয়, যা স্মৃতিশক্তি দুর্বল করে এবং মানসিক অবসাদসহ বিভিন্ন মানসিক ব্যাধির ঝুঁকি বাড়ায়।
৪. মনোযোগের ঘাটতি
ধূমপান মনোযোগ বৃদ্ধিতে সহায়ক—এমন ধারণা সম্পূর্ণ ভুল। গবেষণায় দেখা গেছে, এটি বরং মস্তিষ্কের কার্যকারিতা হ্রাস করে, যার ফলে মনোযোগ ধরে রাখা কঠিন হয়ে যায়।
৫. ঘুমের সমস্যা
নিকোটিন একটি উত্তেজক রাসায়নিক, যা ঘুমের স্বাভাবিক ছন্দ ব্যাহত করে। ফলে ধূমপায়ীরা রাতে ভালোভাবে ঘুমাতে পারেন না এবং ইনসমনিয়ার ঝুঁকি বেড়ে যায়।
বিশেষজ্ঞরা পরামর্শ দিচ্ছেন, ধূমপান থেকে দূরে থাকাই মানসিক ও শারীরিক সুস্থতার জন্য জরুরি। ধূমপান ছাড়ার মাধ্যমে উদ্বেগ, বিষণ্নতা ও ঘুমের সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব।
রিফাত