
ছবি: সংগৃহীত
গর্ভাবস্থায় মায়ের সুস্থতা নিশ্চিত করা শুধু তার নিজের জন্যই নয়, গর্ভস্থ শিশুর সুস্থ বিকাশের জন্যও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলেন, এই সময়ে নিয়মিত হালকা ব্যায়াম করলে মা ও শিশুর শারীরিক ও মানসিক সুস্থতা নিশ্চিত করা যায়। তবে, যেকোনো ধরনের ব্যায়ামের আগে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া জরুরি। বিশ্বখ্যাত মেডিকেল বিশেষজ্ঞরা এ বিষয়ে কী বলেন, চলুন জেনে নেওয়া যাক।
গর্ভাবস্থায় ব্যায়ামের উপকারিতা
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (WHO) মতে, গর্ভাবস্থায় হালকা শারীরিক কার্যক্রম রক্ত সঞ্চালন বাড়িয়ে দেয়, পেশি ও হাড়কে শক্তিশালী করে এবং প্রসববেদনা সহজ করে তোলে। আমেরিকান কলেজ অব অবসটেট্রিশিয়ানস অ্যান্ড গাইনোকোলজিস্টস (ACOG) জানিয়েছে, এই সময় ব্যায়াম করলে গর্ভকালীন ডায়াবেটিসের ঝুঁকি কমে, মানসিক চাপ কমে এবং মায়ের ঘুমের মান উন্নত হয়।
কোন ধরনের ব্যায়াম নিরাপদ?
বিশেষজ্ঞদের মতে, গর্ভাবস্থায় নিম্নলিখিত ব্যায়ামগুলো মায়ের জন্য নিরাপদ ও উপকারী:
১. হাঁটাচলা
বিশ্ববিখ্যাত গাইনোকোলজিস্ট ড. রেবেকা স্টিফেনস বলেন, “গর্ভবতী নারীদের জন্য সবচেয়ে নিরাপদ ব্যায়াম হচ্ছে প্রতিদিন হালকা হাঁটাচলা। এটি রক্ত সঞ্চালন স্বাভাবিক রাখে এবং ক্লান্তিভাব কমায়।”
২. প্রেনাটাল ইয়োগা
যোগব্যায়াম বিশেষজ্ঞ ড. সুসান ডেলফি বলেন, “প্রেনাটাল ইয়োগা শরীরকে নমনীয় রাখে, মানসিক চাপ কমায় এবং স্বাভাবিক প্রসবের সম্ভাবনা বাড়ায়। তবে কিছু কঠিন আসন এড়িয়ে চলতে হবে।”
৩. হালকা স্ট্রেচিং
ফিজিওথেরাপিস্ট ড. জেসিকা মেয়ার্স বলেন, “গর্ভাবস্থায় হালকা স্ট্রেচিং করলে মাংসপেশির ব্যথা কমে এবং শরীরের ভারসাম্য রক্ষা সহজ হয়।”
৪. পানির ব্যায়াম (ওয়াটার এরোবিকস)
হার্ভার্ড মেডিকেল স্কুলের গবেষণা অনুযায়ী, পানির নিচে ব্যায়াম করলে শরীরের উপর চাপ কম পড়ে এবং জয়েন্ট ও পেশির ব্যথা কমে। বিশেষজ্ঞ ড. এলেন কার্টার বলেন, “ওয়াটার এরোবিকস গর্ভবতী নারীদের জন্য একটি চমৎকার ব্যায়াম, যা জয়েন্টে কম চাপ দিয়ে শরীরকে সক্রিয় রাখে।”
কোন ব্যায়াম এড়িয়ে চলা উচিত?
গর্ভাবস্থায় ভারোত্তোলন, অতিরিক্ত লাফালাফি, ম্যারাথন দৌড় বা অতিরিক্ত ক্লান্তিকর ব্যায়াম এড়িয়ে চলার পরামর্শ দেন বিশেষজ্ঞরা। এ বিষয়ে আমেরিকান মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের সদস্য ড. অ্যালিস জনসন বলেন, “যে কোনো ব্যায়ামের আগে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত, বিশেষ করে যদি গর্ভবতী মায়ের জটিলতা থাকে।”
আসিফ