
ছবি: সংগৃহীত
অনেক সময় আমরা অজান্তেই এমন কিছু কাজ করি যা আমাদের মস্তিষ্কের ক্ষতি করে, স্মৃতিশক্তি দুর্বল করে এবং মানসিক স্বাস্থ্যের অবনতি ঘটায়। আসুন জেনে নেওয়া যাক এমন ১১টি বদঅভ্যাস যা আমাদের মস্তিষ্কের বারোটা বাজাচ্ছে!
১. ঘুম কমানো বা অনিয়মিত ঘুম
পর্যাপ্ত ও গুণগতমানের ঘুম আমাদের মস্তিষ্কের জন্য অত্যন্ত জরুরি। কম ঘুম বা অনিয়মিত ঘুমের ফলে মনোযোগ কমে যায়, স্মৃতিশক্তি দুর্বল হয় এবং মানসিক চাপ বেড়ে যায়। দীর্ঘদিন এমন চলতে থাকলে অ্যালঝাইমারসহ বিভিন্ন মস্তিষ্কজনিত রোগের ঝুঁকি বাড়তে পারে।
২. সকালের নাস্তা না করা
অনেকেই ব্যস্ততার কারণে সকালের নাস্তা বাদ দেন, যা মস্তিষ্কের জন্য ভয়াবহ ক্ষতির কারণ হতে পারে। দীর্ঘসময় না খেলে গ্লুকোজের ঘাটতি দেখা দেয়, যা মস্তিষ্কের কোষগুলোর জন্য প্রয়োজনীয় শক্তি সরবরাহে বাধা সৃষ্টি করে। ফলে স্মৃতিশক্তি কমে যায় এবং চিন্তাশক্তি ব্যাহত হয়।
৩. অতিরিক্ত চিনি খাওয়া
বেশি চিনি খাওয়া শরীরের পাশাপাশি মস্তিষ্কের জন্যও ক্ষতিকর। গবেষণায় দেখা গেছে, অতিরিক্ত চিনি গ্রহণের ফলে নিউরোনাল সংযোগ দুর্বল হয়, যা শেখার ক্ষমতা ও স্মৃতিশক্তির উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলে।
৪. পর্যাপ্ত পানি না পান করা
মস্তিষ্কের প্রায় ৭৫% অংশই পানি দিয়ে গঠিত। তাই শরীরে পানির অভাব হলে মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা কমে যায়, মনোযোগ ও স্মৃতিশক্তি দুর্বল হয়ে পড়ে এবং মাথাব্যথা হতে পারে।
৫. অতিরিক্ত প্রসেসড ফুড খাওয়া
জাঙ্ক ফুড ও প্রসেসড ফুডে থাকা রাসায়নিক উপাদান মস্তিষ্কের কোষের স্বাভাবিক কার্যকারিতা বাধাগ্রস্ত করে। এসব খাবার নিয়মিত খেলে মস্তিষ্কের নিউরোট্রান্সমিটারের কার্যক্ষমতা কমে যেতে পারে, যা মানসিক স্বাস্থ্যের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলে।
৬. অতিরিক্ত ধূমপান ও অ্যালকোহল গ্রহণ
ধূমপান ও অ্যালকোহল মস্তিষ্কের কোষ ধ্বংস করে এবং নিউরোলজিক্যাল ডিজঅর্ডারের ঝুঁকি বাড়ায়। এছাড়া এগুলো স্নায়ুতন্ত্রকে দুর্বল করে দেয়, যা স্মৃতিশক্তি ও সিদ্ধান্ত গ্রহণের দক্ষতাকে ব্যাহত করে।
৭. দীর্ঘসময় একা থাকা ও সামাজিক মেলামেশার অভাব
সামাজিক যোগাযোগ মস্তিষ্কের কর্মক্ষমতা বাড়ায়। দীর্ঘসময় একা থাকলে বা মানুষের সঙ্গে কম মিশলে মস্তিষ্ক নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়ে, যা হতাশা ও মানসিক অবসাদের দিকে ঠেলে দিতে পারে।
৮. বেশি স্ট্রেস নেওয়া
অতিরিক্ত মানসিক চাপ বা স্ট্রেস মস্তিষ্কের কোষের বৃদ্ধি কমিয়ে দেয় এবং মেমোরি ও লার্নিংয়ের ক্ষমতা কমিয়ে দেয়। দীর্ঘদিন স্ট্রেসে থাকলে হতাশা ও উদ্বেগজনিত সমস্যা দেখা দিতে পারে।
৯. অতিরিক্ত মোবাইল ও স্ক্রিন টাইম
দীর্ঘসময় ধরে মোবাইল, ল্যাপটপ বা টিভির পর্দায় চোখ রাখলে মস্তিষ্কের নিউরোনাল একটিভিটি ব্যাহত হয়। এটি ঘুমের সমস্যা, মনোযোগের অভাব এবং মানসিক অবসাদ তৈরি করতে পারে।
১০. শরীরচর্চার অভাব
নিয়মিত ব্যায়াম না করলে রক্ত সঞ্চালন কমে যায়, যা মস্তিষ্কের কার্যকারিতা কমিয়ে দেয়। শারীরিক পরিশ্রম মস্তিষ্কে অক্সিজেন সরবরাহ বাড়ায় এবং নিউরোনাল সংযোগ উন্নত করে।
১১. অতিরিক্ত উচ্চ শব্দে গান শোনা
অনেকেই কানে ইয়ারফোন দিয়ে অনেক জোরে গান শোনেন, যা মস্তিষ্কের শ্রবণ স্নায়ুকে ক্ষতিগ্রস্ত করে এবং স্মৃতিশক্তির উপর বিরূপ প্রভাব ফেলে।
আসিফ