ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৮ মার্চ ২০২৫, ৪ চৈত্র ১৪৩১

যা যা করলে স্তন ক্যান্সার হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়

প্রকাশিত: ০৫:৫২, ১৮ মার্চ ২০২৫; আপডেট: ০৮:২৮, ১৮ মার্চ ২০২৫

যা যা করলে স্তন ক্যান্সার হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়

ছবি:সংগৃহীত

ডা. তাসনিম জারা স্তন ক্যান্সারের সম্ভাবনা বৃদ্ধির কারণ এবং এর ঝুঁকি কমানোর উপায় নিয়ে পরিষ্কারভাবে আলোচনা করেছেন। তিনি নিম্নলিখিত বিষয়গুলো উল্লেখ করেছেন:

 

 

 

স্তন ক্যান্সারের সম্ভাবনা বৃদ্ধির কারণ:
১. ওজন: যাদের ওজন বেশি, বিশেষ করে মাসিক বন্ধ হওয়ার পর, তাদের স্তন ক্যান্সারের ঝুঁকি বেশি থাকে। শরীরের অতিরিক্ত চর্বি ইস্ট্রোজেন হরমোন তৈরি করে, যা স্তন ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়ায়। তবে ওজন বেশি হলেই যে স্তন ক্যান্সার হবে তা নয়, তবে স্বাভাবিক ওজনের মানুষের তুলনায় অতিরিক্ত ওজনের ব্যক্তিদের মধ্যে এই ঝুঁকি বেশি থাকে।

. শিশুকে বুকের দুধ না খাওয়ানো: শিশুকে বুকের দুধ না খাওয়ালে স্তন ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়তে পারে। শিশুকে বুকের দুধ খাওয়ানো উচিত, কারণ এটি শিশুর পুষ্টি নিশ্চিত করার পাশাপাশি মায়ের স্তন ক্যান্সারের ঝুঁকি কমায়।

৩. ধূমপান ও মদ্যপান: ধূমপান এবং মদ্যপান উভয়ই স্তন ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়ায়। এমনকি পরোক্ষ ধূমপানও (যারা নিজেরা ধূমপান করেন না কিন্তু আশেপাশে কেউ ধূমপান করেন) এই ঝুঁকি বাড়াতে পারে। তাই ধূমপান ছাড়তে উৎসাহিত করা উচিত।

 

 

৪. শারীরিক পরিশ্রমের অভাব: যারা নিয়মিত ব্যায়াম করেন না বা শারীরিক পরিশ্রম কম করেন, তাদের স্তন ক্যান্সারের ঝুঁকি বেশি থাকে। সপ্তাহে কমপক্ষে আড়াই থেকে পাঁচ ঘন্টা মাঝারি ধরনের ব্যায়াম করা উচিত। হাঁটা, দ্রুত হাঁটা বা সাঁতার কাটা ভালো ব্যায়ামের উদাহরণ।

৫. জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি: কিছু জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি, যেমন কম্বাইন্ড পিল, স্তন ক্যান্সারের ঝুঁকি সামান্য বাড়াতে পারে। তবে এই পিল ব্যবহার বন্ধ করলে সময়ের সাথে সাথে ঝুঁকি কমে আসে।

৬. অনিয়ন্ত্রিত এক্স-রে ও সিটি স্ক্যান: ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া এক্স-রে বা সিটি স্ক্যান করানো স্তন ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়াতে পারে।

 

 

 

 স্তন ক্যান্সারের ঝুঁকি কমানোর উপায়:
ওজন নিয়ন্ত্রণ: স্বাভাবিক ওজনের চেয়ে বেশি ওজন থাকলে তা কমানোর চেষ্টা করুন। মাত্র ৩ কেজি ওজন কমানো এবং তা ধরে রাখলেও স্তন ক্যান্সারের ঝুঁকি কমে। স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস গড়ে তুলুন, যেমন শাকসবজি বেশি খাওয়া, কম তেল ও লবণ ব্যবহার করা এবং ভাজাপোড়া, চর্বিযুক্ত ও চিনিযুক্ত খাবার এড়ানো।
  
নিয়মিত ব্যায়াম: প্রতিদিন নিয়মিত ব্যায়াম করুন। হাঁটা, দ্রুত হাঁটা বা সাঁতার কাটার মতো ব্যায়ামগুলো খুবই উপকারী।

ধূমপান ও মদ্যপান ত্যাগ: ধূমপান এবং মদ্যপান সম্পূর্ণভাবে বর্জন করুন। এগুলো স্তন ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়ায়।

 

 

 

শিশুকে বুকের দুধ খাওয়ানো: শিশুকে বুকের দুধ খাওয়ানোর মাধ্যমে স্তন ক্যান্সারের ঝুঁকি কমানো যায়।

জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি সতর্কভাবে ব্যবহার: জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি ব্যবহারের আগে ডাক্তারের পরামর্শ নিন এবং ঝুঁকি সম্পর্কে সচেতন থাকুন।

অনিয়ন্ত্রিত মেডিকেল টেস্ট এড়ানো: ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া এক্স-রে বা সিটি স্ক্যান করানো থেকে বিরত থাকুন।

 

 

 

ডা. তাসনিম জারা আরও উল্লেখ করেছেন যে, স্তন ক্যান্সারের ঝুঁকি কমানোর জন্য স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন এবং সচেতনতা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। নিয়মিত চেকআপ এবং ডাক্তারের পরামর্শ অনুসরণ করলে এই রোগের ঝুঁকি অনেকাংশে কমানো সম্ভব।

আঁখি

×