
ছবিঃ সংগৃহীত
রমজান সংযম, আত্মনিয়ন্ত্রণ ও সচেতন খাদ্যাভ্যাসের একটি সময়। অনেকেই এই পবিত্র মাসে স্বাস্থ্য, নৈতিকতা বা আর্থিক কারণে খাদ্যাভ্যাস পরিবর্তন করে থাকেন। বিশেষ করে, মাংসের পরিমাণ কমিয়ে স্বাস্থ্যকর বিকল্পের দিকে ঝোঁকার প্রবণতা বাড়ছে।
প্রোটিন কেন গুরুত্বপূর্ণ?
প্রোটিন আমাদের পেশি সংরক্ষণ, দীর্ঘক্ষণ পেট ভরা রাখা এবং শক্তি বজায় রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। দীর্ঘ সময় রোজা রাখার ফলে শরীরের পেশি ও শক্তি হ্রাস পাওয়ার ঝুঁকি থাকে। তাই সেহরি ও ইফতারে পর্যাপ্ত প্রোটিন গ্রহণ করা শরীরকে সুস্থ ও কর্মক্ষম রাখতে সাহায্য করে।
রমজানে মাংসের পরিবর্তে এই ৫টি উচ্চ-প্রোটিন বিকল্প গ্রহণ করুন:
১. ডাল ও শিমজাতীয় খাদ্য
মসুর ডাল, ছোলা, মটরশুঁটি, রাজমা ও কালো ছোলার মতো শিমজাতীয় খাবার রমজানের অন্যতম প্রধান উপাদান। এরা প্রোটিন, ফাইবার ও ধীরে হজম হওয়া কার্বোহাইড্রেট সমৃদ্ধ, যা দীর্ঘক্ষণ পেট ভরা রাখতে সহায়তা করে। সেহরি ও ইফতারে ডাল স্যুপ বা ছোলার সালাদ যোগ করলে পুষ্টি ও স্বাস্থ্যের সমন্বয় বজায় রাখা সম্ভব।
২. দুগ্ধজাত ও দুধের বিকল্প পণ্য
গ্রিক দই, পনির (ছানা) ও মাখন দুধের চমৎকার প্রোটিন উৎস, যা পেট ভালো রাখতে ও হজমশক্তি উন্নত করতে সাহায্য করে। যারা দুধ সহ্য করতে পারেন না, তাদের জন্য সয়া দুধ, বাদাম দুধ (আমন্ড মিল্ক), ওটস মিল্ক বা টোফু, টেম্পের মতো সয়া-ভিত্তিক প্রোটিন হতে পারে চমৎকার বিকল্প। সেহরিতে দই, বাদাম ও ফল দিয়ে স্মুদি বানিয়ে খেলে এটি দীর্ঘক্ষণ শক্তি ধরে রাখতে সাহায্য করবে।
৩. ডিম – সহজলভ্য ও উচ্চ-প্রোটিন খাবার
ডিম হলো একটি পূর্ণাঙ্গ প্রোটিনের উৎস, যা শরীরের প্রয়োজনীয় সব অ্যামিনো অ্যাসিড সরবরাহ করে। এটি সেহরিতে সিদ্ধ, পোচ, কিংবা ইফতারে সবজি দিয়ে তৈরি অমলেট হিসেবে খাওয়া যেতে পারে।
৪. বাদাম ও বীজ
আমন্ড, আখরোট, চিয়া সিড ও ফ্ল্যাক্স সিড প্রোটিন, স্বাস্থ্যকর ফ্যাট ও ফাইবারে ভরপুর। এগুলো দইয়ের সঙ্গে মিশিয়ে, স্মুদির সাথে ব্লেন্ড করে বা ইফতারের পর হালকা স্ন্যাকস হিসেবে খাওয়া যায়।
৫. সম্পূর্ণ শস্য ও মিলেট
কুইনোয়া, ব্রাউন রাইস, ওটস এবং হোল হুইট ব্রেড প্রোটিন, ফাইবার ও দীর্ঘস্থায়ী শক্তির ভালো উৎস। কুইনোয়া একটি "পূর্ণাঙ্গ প্রোটিন", যার মধ্যে ৯টি অপরিহার্য অ্যামিনো অ্যাসিড রয়েছে, যা শরীর স্বাভাবিকভাবে তৈরি করতে পারে না। এটি সালাদ ও সাইড ডিশ হিসেবে মাংসের বিকল্প হতে পারে।
পুষ্টি বজায় রেখে রোজা রাখুন
রমজানে মাংস কম খেলেও সঠিক প্রোটিন গ্রহণের মাধ্যমে স্বাস্থ্যকর জীবনযাত্রা বজায় রাখা সম্ভব। ডাল, দুগ্ধজাত খাবার, ডিম, বাদাম ও সম্পূর্ণ শস্যের মতো বিকল্প প্রোটিন উৎস গ্রহণ করলে শরীর প্রয়োজনীয় পুষ্টি পাবে, শক্তি বজায় থাকবে এবং রোজার সময়ও আপনি সুস্থ থাকবেন। সঠিক খাদ্যাভ্যাস বজায় রেখে রমজানের আধ্যাত্মিক ও শারীরিক উপকারিতা উপভোগ করুন।
ইমরান