ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ১৫ মার্চ ২০২৫, ১ চৈত্র ১৪৩১

ফুসফুস সুস্থ রাখার জন্য যে ৫টি কাজ করতেই হবে

প্রকাশিত: ১৩:৪৭, ১৫ মার্চ ২০২৫

ফুসফুস সুস্থ রাখার জন্য যে ৫টি কাজ করতেই হবে

ছবি: সংগৃহীত

ফুসফুস আমাদের শরীরের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ, কারণ এটি শ্বাসপ্রশ্বাসের মাধ্যমে অক্সিজেন গ্রহণ করে এবং কার্বন ডাই অক্সাইড বের করে। ফুসফুস সুস্থ রাখার জন্য কিছু সহজ কিন্তু কার্যকরী উপায় রয়েছে। এখানে ফুসফুস সুস্থ রাখার জন্য ৫টি কাজ বিস্তারিত দেওয়া হলো:

১. ধূমপান পরিহার করা
ধূমপান ফুসফুসের জন্য সবচেয়ে বড় হুমকি। এটি শ্বাসনালীর বাধা সৃষ্টি করে এবং ফুসফুসের বিভিন্ন রোগের কারণ হতে পারে, যেমন ক্যান্সার, ক্রনিক ব্রঙ্কাইটিস, emphysema (ফুসফুসের অসুখ), এবং শ্বাসকষ্ট। তাই, ধূমপান পরিহার করা এবং যদি আপনি ধূমপায়ী হন, তবে ধূমপান ছাড়ার চেষ্টা করা উচিত।

২. পর্যাপ্ত শ্বাস প্রশ্বাসের ব্যায়াম করা
নিয়মিত শ্বাস প্রশ্বাসের ব্যায়াম ফুসফুসের সক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে। এটি ফুসফুসের এয়ারওয়ে (শ্বাসনালী) খোলা রাখে এবং অক্সিজেন গ্রহণ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। কিছু বিশেষ শ্বাস প্রশ্বাসের ব্যায়ামের মধ্যে: পেটের গভীরে শ্বাস নিয়ে ফুসফুসের নিচের অংশকে প্রশস্ত করা। ধীরে ধীরে গভীর শ্বাস নেওয়া এবং ধীরে ধীরে ছাড়ানো। যোগের কিছু শ্বাস ব্যায়াম যেমন প্রাণায়ামও ফুসফুসের স্বাস্থ্য ভাল রাখতে সাহায্য করে।

৩. পরিষ্কার বাতাসে শ্বাস নেয়া
বায়ু দূষণ ফুসফুসের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর। তাই, পরিষ্কার বাতাসে শ্বাস নেওয়া এবং দূষিত এলাকা থেকে দূরে থাকা জরুরি। বিশেষ করে অতিরিক্ত তাপমাত্রা, ধোঁয়া, এবং অন্যান্য দূষিত পদার্থ যেমন গাড়ির ধোঁয়া, কারখানার ধোঁয়া, শিল্প দূষণ ইত্যাদি থেকে যতটা সম্ভব দূরে থাকা উচিত।

৪. নিয়মিত শারীরিক ব্যায়াম করা
নিয়মিত ব্যায়াম ফুসফুসের কার্যক্ষমতা বৃদ্ধি করে এবং রক্ত সঞ্চালনকে উন্নত করে। যেমন: হাঁটা, দৌড়ানো, সাইক্লিং, সাঁতার কাটা, বা যোগব্যায়াম—এসব ব্যায়াম শ্বাসপ্রশ্বাসের গতি উন্নত করতে এবং ফুসফুসের স্বাস্থ্য বজায় রাখতে সাহায্য করে। ফুসফুসের ক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য প্রতিদিন ৩০ মিনিট ব্যায়াম করা উচিত।

৫. ভাল খাবার গ্রহণ করা
ফুসফুস সুস্থ রাখার জন্য সঠিক খাদ্য নির্বাচনও খুব গুরুত্বপূর্ণ। কিছু বিশেষ খাবারের মধ্যে রয়েছে: ফলমূল ও শাকসবজি, বিশেষ করে রঙিন ফল যেমন কমলা, বেরি, স্ট্রবেরি, ব্লুবেরি, লাল টমেটো ইত্যাদি যা ফুসফুসের স্বাস্থ্য রক্ষায় সহায়ক। সামুদ্রিক মাছ, যেমন স্যালমন, টুনা, এবং সীফুড থেকে ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড পাওয়া যায়, যা ফুসফুসের প্রদাহ কমাতে সাহায্য করে। ভিটামিন C এবং E: এসব ভিটামিন ফুসফুসের টিস্যু রক্ষায় সহায়ক, যেমন অরেঞ্জ, লেবু, কিউই, পেঁপে ইত্যাদি।

পর্যাপ্ত ঘুম ফুসফুসের কার্যক্ষমতা বজায় রাখতে সহায়ক। ঘুমের মধ্যে শরীর এবং ফুসফুস পুনরুদ্ধার হয়। অতিরিক্ত ওজনের কারণে শ্বাস প্রশ্বাসে সমস্যা হতে পারে, তাই সুস্থ ওজন বজায় রাখা গুরুত্বপূর্ণ। ফুসফুসের সঠিক যত্ন নিতে এই ৫টি কাজ অনুসরণ করলে আপনি আপনার ফুসফুসের স্বাস্থ্যের উন্নতি করতে পারবেন। তবে, যদি আপনি শ্বাসকষ্ট বা অন্য কোনো সমস্যা অনুভব করেন, তবে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।

ফারুক

×