
ছবি: সংগৃহীত
সন্তান জন্মের পর অনেক মা-ই ওজন কমাতে হিমশিম খান। গর্ভধারণের পর শারীরিক পরিবর্তন, হরমোনের ওঠানামা, অনিয়মিত ঘুম ও ব্যস্ত জীবনযাত্রার কারণে অনেকেরই শরীর আগের মতো টোনড থাকে না, ওজনও সহজে কমতে চায় না। তবে এটি স্বাভাবিক এবং সময়ের সঙ্গে ঠিক হয়। এ বিষয়ে বিশেষজ্ঞদের মতামত কী?
কেন মা হওয়ার পর ওজন কমানো কঠিন?
মাতৃ ও শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. শারমিন নওরিন বলেন,
"গর্ভকালীন সময়ে শরীরে অতিরিক্ত ফ্যাট জমা হয়, যা সন্তান জন্মের পরও থেকে যায়। এ ছাড়া, সন্তান জন্মের পর হরমোনের পরিবর্তন ও ঘুমের অভাব ওজন কমানো কঠিন করে তোলে। নতুন মায়েদের ধীরে ধীরে ওজন কমানোর দিকে মনোযোগ দেওয়া উচিত, কোনো চটকদার ডায়েট বা অতিরিক্ত ব্যায়াম করলে শরীর দুর্বল হয়ে পড়তে পারে।"
মনোরোগ বিশেষজ্ঞ (সাইকিয়াট্রিস্ট) ডা. আরিফুল ইসলাম বলেন,
"মাতৃত্বের পর অনেক নারী শরীরের পরিবর্তনের কারণে হতাশায় ভুগতে পারেন, যা ‘পোস্টপার্টাম বডি ইমেজ ইস্যু’ নামে পরিচিত। সামাজিক চাপ ও আত্মবিশ্বাসের অভাবে ওজন কমানোর মানসিক চাপ বাড়তে পারে, যা কার্যকারিতা আরও কমিয়ে দেয়। তাই ধৈর্য ধরে স্বাভাবিক নিয়মে ওজন কমানোর চেষ্টা করতে হবে এবং নিজের প্রতি ইতিবাচক মনোভাব রাখা গুরুত্বপূর্ণ।"
ওজন কমানোর সহজ উপায়: বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ
সঠিক খাদ্যাভ্যাস গড়ে তুলুন:
- বেশি প্রোটিন ও ফাইবারসমৃদ্ধ খাবার খান, যা ক্ষুধা কমায় ও বিপাকক্রিয়া বাড়ায়।
- প্রসেসড খাবার, অতিরিক্ত মিষ্টি ও ভাজাপোড়া এড়িয়ে চলুন।
- প্রচুর পানি পান করুন এবং সময়মতো খাবার খান।
ব্যস্ততার মাঝেও ব্যায়াম করুন:
- প্রতিদিন অন্তত ৩০ মিনিট হাঁটুন বা বাচ্চাকে নিয়ে পার্কে সময় কাটান।
- সহজ কিছু ব্যায়াম, যেমন স্কোয়াট, প্ল্যাঙ্ক ও যোগব্যায়াম করুন।
- বাচ্চা কোলে নিয়েও হালকা ফিটনেস এক্সারসাইজ করা সম্ভব।
ভালো ঘুম ও মানসিক শান্তি নিশ্চিত করুন:
- পর্যাপ্ত বিশ্রাম নিন, কারণ কম ঘুম ওজন কমানো কঠিন করে তোলে।
- মানসিক চাপ কমানোর জন্য মেডিটেশন বা ধ্যান করতে পারেন।
ধৈর্য ধরুন ও ইতিবাচক থাকুন:
- দ্রুত ওজন কমানোর চিন্তা না করে স্বাস্থ্যকর অভ্যাস গড়ে তুলুন।
- নিজের প্রতি কঠোর না হয়ে সময় নিয়ে ধীরে ধীরে শরীরকে আগের অবস্থায় ফিরিয়ে আনুন।
নতুন মায়েদের উচিত ধাপে ধাপে সুস্থ ও ফিট হওয়ার চেষ্টা করা, নিজের প্রতি কঠোর না হয়ে ধৈর্য ধরে স্বাস্থ্যকর অভ্যাস অনুসরণ করা। বিশেষজ্ঞদের মতে, মা হওয়ার পর শরীরের পরিবর্তন স্বাভাবিক, তাই মানসিক চাপ না নিয়ে সময় নিয়ে স্বাস্থ্যকর উপায়ে ওজন কমানোই সবচেয়ে ভালো পথ।
কানন