
উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে খাদ্যাভ্যাসে কিছু পরিবর্তন আনাই সবচেয়ে কার্যকর উপায়। অতিরিক্ত সোডিয়াম ও স্যাচুরেটেড ফ্যাট যুক্ত খাবার এড়িয়ে, যদি স্বাস্থ্যকর ও পুষ্টিকর স্ন্যাক গ্রহণ করা যায়, তাহলে হৃদযন্ত্র সুস্থ থাকবে এবং ওজন নিয়ন্ত্রণেও সহায়ক হবে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, পটাশিয়ামসমৃদ্ধ খাবার উচ্চ রক্তচাপ কমাতে সাহায্য করে। তাই এমন কিছু স্ন্যাক বেছে নেওয়া প্রয়োজন, যেগুলোতে কমপক্ষে ৪৭০ মিলিগ্রাম পটাশিয়াম রয়েছে। এই তালিকায় রাখা হয়েছে কিউই, কলা, দইসহ কয়েকটি উপাদান, যা হৃদযন্ত্রের সুস্থতা নিশ্চিত করবে। যারা স্বাস্থ্যকর কিন্তু সুস্বাদু নাস্তা খুঁজছেন, তাদের জন্য এই স্ন্যাকগুলো হতে পারে আদর্শ।
স্বাস্থ্যকর ও সহজে প্রস্তুত করা যায় এমন স্ন্যাকের তালিকা
স্ট্রবেরি ও দই পারফেইট
ফ্রেশ ফল, গ্রিক ইয়োগার্ট এবং গ্রানোলার মিশ্রণে তৈরি পারফেইট একটি সুস্বাদু ও পুষ্টিকর স্ন্যাক। এটি ব্রেকফাস্ট হিসেবে দারুণ কার্যকর, বিশেষ করে ব্যস্ত সময়ে। মেসন জারে ভরে নিয়ে যেকোনো জায়গায় সহজেই খাওয়া যায়।
রাস্পবেরি-কেফির পাওয়ার স্মুদি
স্মুদি বানানোর জন্য ফ্রিজে পাকা কলা সংরক্ষণ করলে তা দ্রুত প্রস্তুত করা সম্ভব। কেফির, পিনাট বাটার ও ফ্লাক্সসিড যোগ করলে এতে প্রোটিন, প্রোবায়োটিকস এবং স্বাস্থ্যকর ফ্যাট যুক্ত হয়, যা শরীরের জন্য অত্যন্ত উপকারী।
স্পিনাচ ও এগ সুইট পটেটো টোস্ট
গ্লুটেন মুক্ত ও স্বাস্থ্যকর নাস্তার জন্য মিষ্টি আলুর টোস্ট একটি দুর্দান্ত বিকল্প। এতে পালং শাক, সিদ্ধ ডিম ও হালকা ঝাল সস যোগ করলে স্বাদ ও পুষ্টিগুণ উভয়ই বৃদ্ধি পায়।
ক্রিস্পি কেল চিপস
অনেকেই কেলের স্বাদ খুব একটা পছন্দ করেন না, তবে একবার এই মুচমুচে কেল চিপস খেলে ধারণা বদলে যাবে। ওভেনে বেক করা এই চিপস স্বাস্থ্যকর এবং স্বাভাবিক চিপসের তুলনায় অনেক কম ক্যালোরিযুক্ত।
স্ট্রবেরি-কলার গ্রিন স্মুদি
ফলের প্রাকৃতিক মিষ্টতায় তৈরি এই স্মুদিতে কোনো প্রক্রিয়াজাত চিনি নেই। ফ্লাক্সসিড ব্যবহারের ফলে এতে ওমেগা-৩ ফ্যাট যুক্ত হয়, যা হৃদযন্ত্রের জন্য বিশেষভাবে উপকারী।
রাস্পবেরি দই ও সিরিয়াল বোল
সকালের নাস্তা, হালকা খাবার কিংবা ডেজার্ট হিসেবে দুধের পরিবর্তে দই দিয়ে সিরিয়াল খাওয়া স্বাস্থ্যকর বিকল্প হতে পারে। যদি এটি বাইরে নিয়ে খেতে চান, তাহলে সিরিয়াল আলাদা রাখুন এবং খাওয়ার আগে দইয়ের ওপরে ছিটিয়ে নিন।
বেরি ও ফ্লাক্স স্মুদি
সুন্দর রঙ এবং পুষ্টিগুণ নিশ্চিত করতে ব্লুবেরি ও অন্যান্য বেরির মিশ্রণ ব্যবহার করা যেতে পারে। ফ্লাক্সসিড তেল যুক্ত করলে এতে হার্ট-সচেতন ওমেগা-৩ ফ্যাট যুক্ত হয়, যা এটি সত্যিকারের একটি সুপারফুডে পরিণত করে।
স্প্রাউটেড-গ্রেইন টোস্ট উইথ পিনাট বাটার ও কলা
জেলির পরিবর্তে পাকা কলার প্রাকৃতিক মিষ্টতা উপভোগ করা যেতে পারে। ফাইবারসমৃদ্ধ টোস্টের ওপর পিনাট বাটার ও কলার সংমিশ্রণ একদিকে যেমন সুস্বাদু, তেমনি স্বাস্থ্যকরও।
মর্মেইড স্মুদি বোল
এটি শুধু স্বাস্থ্যকরই নয়, বরং দারুণ আকর্ষণীয়ও। এতে নীল স্পিরুলিনা পাউডার ব্যবহার করা হয়, যা প্রোটিন ও অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ। এটি যেকোনো সময়ের খাবার হিসেবেই উপযোগী।
কলা ও আখরোট
কলা ও আখরোটের সংমিশ্রণ একটি সহজ ও কার্যকর স্ন্যাক হতে পারে। এতে থাকা পটাশিয়াম ও স্বাস্থ্যকর ফ্যাট শরীরকে দীর্ঘক্ষণ কর্মক্ষম রাখে।
মধু ও ডুমুরের দই
ভিন্ন স্বাদ আনতে ভেজানো ডুমুর ও মধু দিয়ে দই খাওয়া যেতে পারে। যদি তাজা ডুমুর পাওয়া যায়, তাহলে আরও ভালো। এতে থাকা প্রাকৃতিক চিনি ও পুষ্টি উপাদান স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত উপকারী।
পিনাট বাটার-স্ট্রবেরি-কেল স্মুদি
পিনাট বাটার ও স্ট্রবেরির সংমিশ্রণে তৈরি এই স্মুদিটি সুস্বাদু এবং খুব দ্রুত প্রস্তুত করা যায়। ব্যস্ত সকালে দ্রুত পুষ্টিকর নাস্তা খেতে চাইলে এটি হতে পারে দারুণ একটি বিকল্প।
উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে স্বাস্থ্যকর খাবার গ্রহণ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। অতিরিক্ত লবণযুক্ত খাবার এড়িয়ে পটাশিয়াম ও স্বাস্থ্যকর ফ্যাটসমৃদ্ধ খাবার গ্রহণ করলে হৃদযন্ত্রের কার্যকারিতা বৃদ্ধি পায় এবং দীর্ঘমেয়াদে শরীর সুস্থ থাকে। এই তালিকায় উল্লেখিত খাবারগুলো শুধু পুষ্টিকর নয়, বরং সুস্বাদুও। তাই স্বাস্থ্যকর খাবারকে একঘেয়ে না ভেবে, নতুন নতুন স্বাদের সঙ্গে পরিচিত হওয়াই হবে বুদ্ধিমানের কাজ।
সূত্র:https://tinyurl.com/yu352hvf
আফরোজা