
ছবি: সংগৃহীত
দুর্নীতি দমন কমিশন দুদক ও গোয়েন্দা নজরদারিতে রয়েছেন সাবেক আওয়ামীলীগ সরকারের আমলে ক্ষমতার অপব্যবহার করে মনগড়া কাজ করে ও অবৈধ উপায়ে বিপুল পরিমান টাকার মালিক বনে যাওয়া ও গুরুত্বপূর্ণ পদে দীর্ঘসময় দায়িত্ব পালনকারী কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা।
বিশেষ করে, ওই সময়ে যারা প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, স্থানীয় সরকার বিভাগ,জনস্বাস্থ্য ও এমপি মন্ত্রীদের পিএস (ব্যক্তিগত সচিব) এবং বিভাগীয় কমিশনারের দায়িত্ব পালন করেছেন। রাজনৈতিক ক্ষমতার প্রভাব খাটিয়ে বিভিন্ন স্তরে পদোন্নতি নিয়েছেন ঐ সকল কর্মকর্তাদের খোঁজে মাঠে নেমেছে দুদক ও গোয়েন্দা সংস্থা গুলো।
সাম্প্রতিক সময়ে তিনটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান গুরুতর অভিযোগ করেছেন জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশল (পানি সম্পদ) জহির উদ্দিন দেওয়ানের বিরুদ্ধে। এরই মধ্য ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান গুলো জনস্বাস্থ্যের প্রধান প্রকৌশলী বরাবর লিখিত অভিযোগ করেছেন ।
ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ অ্যাডভান্স টেকনোলজিস কর্ণধার মোঃ আব্দুস সালাম তার অভিযোগে উল্লেখ করেন। গত ১১ নভেম্বর ২০২৪ ইং তারিখে বাংলাদেশ অ্যাডভান্স টেকনোলজিস জনস্বাস্থ্যের দরপত্রের একজন নিয়মিত দরদাতা) উক্ত দরপত্রটি দ্রুত সিদ্ধান্তের জন্য মাত্র ১৪ দিনের সংক্ষিপ্ত নোটিশে প্রকাশ করা হয় কর্তৃপক্ষ । কিন্তু দীর্ঘ ৪ মাস অতিবাহিত হলেও এমনকি টেন্ডারটির মেয়াদ ৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ইং পার হলেও এখন পর্যন্ত আমরা কোনো সিদ্ধান্ত জানিতে পারেনি কতৃপক্ষ । পিপিআর ২০০৮ এর বিধি ১০১ এ বিধৃত আছে যে, "মূল্যায়ন প্রতিবেদন নিদিষ্ট সময়ের মধ্যে চূড়ান্ত করতে হবে যেনো দরপত্র বৈধতার মেয়াদের মধ্যে চুক্তি সম্পাদন নোটিশ জারী করা যায় এবং ক্রয়কারীকে দরপত্রের বৈধতার মেয়াদ বৃদ্ধির জন্য অনুরোধ করতে না হয়"। দীর্ঘ সময় অতিবাহিত হওয়ার ফলে বাংলাদেশ অ্যাডভান্স টেকনোলজিস বড় ধরণের আর্থিক ক্ষতির সম্মুক্ষীণ হয়েছেন বলে দাবী করেন তিনি।
তিনি আরো বলেন দরপত্র মূল্যায়ন কমিটির সভাপতি মো: জহির উদ্দিন দেওয়ান, জনস্বাস্থ্যের অধিদপ্তরের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী (পানি সম্পদ) এর সাথে যোগাযোগ করলে অফিসের বাহিরে দেখা করতে বলেন এবং দরপত্র মূল্যের ৬% টাকা অবৈধভাবে দাবী করেন। এই টাকা না দিলে দরপত্রটি বাতিল করার হুমকি প্রদান করেন। পরবর্তীতে বিষয়টি তিনি পর্যালোচনা করে যথাযথ পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য আবেদন জানিয়েছেন সেই সাথে সুষ্ঠু তদন্ত ও কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য অভিযোগ তিনি উল্লেখ করেছেন।
আরেক ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ওভারসিজ মার্কেটিং কর্পোরেশন প্রাইভেট লিমিটেড এর কর্ণধার রিজওয়ান মান্নান তার অভিযোগের উল্লেখ করেন উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের খাম-খেয়ালী এবং অবহেলার কারণে দীর্ঘ তিন মাস অতিবাহিত হওয়ার পরেও দরপত্রের বৈধতার সময়কাল অতিবাহিত হওয়ার পরেও, এখনো পর্যন্ত দরপত্রের কোনো সিদ্ধান্ত নিতে না পারায় পিপিআর ২০০৮ এর বিধি ১০১ স্পষ্ট লঙ্ঘিত হয়েছে।
ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান রোজমার্ক ট্রেড ইন্টারন্যাশনাল কর্ণধার আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, ৪ মাস পার হয়ে গেলেও এখন পর্যন্ত মূল্যায়ন কমিটির আহ্বায়ক স্বৈরাচার দোসর অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী (পানি সম্পদ) মো: জহির উদ্দিন দেওয়ান কাগজপত্র যাচাই বাছাই প্রক্রিয়া শেষ করেননি। এর মধ্যে ফেব্রুয়ারি মাসে তিনি একবার টাইম এক্সটেনশন করার আবেদন করেন প্রধান প্রকৌশলী বরাবর। প্রধান প্রকৌশলী সময় বাড়িয়ে দিলে তিনি তারপরও কালক্ষেপন করছেন জহির উদ্দিন দেওয়ান। তার সাথে একাধিক বার কথা হওয়ার পরও ছাড়ছি ছাড়বো বলে দিনের পর দিন ঘুরাতে থাকেন। প্রকল্প পরিচালকও এ বিষয় কোন কিছু জানাতে পারেননি। এমন অবহেলার কারণে ইতিমধ্যে আমার ব্যাংক ইন্টারেস্ট বাড়তি ২,৫০,০০০.০০ (দুই লক্ষ পঞ্চাশ হাজার টাকা) গুনতে হয়েছে। পিপিআর বিধি অনুযায়ি নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে মূল্যায়ন কমিটি তাদের মূল্যায়ন জমা দিতে বলা হলেও দায়িত্ববান পদে থেকে এমন নিয়মবহিভূর্ত কাজ কোনোভাবেই কাম্য নয়। দায়িত্বহীনতার কারণে জহির উদ্দিন দেওয়ান কে দ্রুত অপসারণের দাবী জানাচ্ছি।
অভিযোগ আছে, মো: জহির উদ্দিন দেওয়ান পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চলের এসি (তত্বাবধায়ক প্রকৌশলী) এবং প্রকল্প পরিচালক, সাজেক পর্যটন এলাকাসহ রাঙ্গামাটি জেলার বিভিন্ন উপজেলার পাথুরে এলাকায় পানি সরবরাহ ও স্যানিটেশন ব্যবস্থাপনার সম্প্রসারণ এবং উন্নয়ন প্রকল্প। যিনি মিস্টার সিক্স পার্সেন্ট নামে ডিপিএইচই তে পরিচিত। দীর্ঘ সময় ধরে একই ব্যক্তি এখন ও তিনটি পদ দখল করে আছেন। ফ্যাসিস্ট আওয়ামী সরকারের আশীর্বাদপুস্ট হয়েও এখনও স্বপদে বহাল তবিয়তে আছেন তিনি।
এই বিষয়ে জনস্বাস্থ্য অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী জহির উদ্দিন দেওয়ানের কাছে জানতে চাইলে গণমাধ্যমকে তিনি বলেন, দরপত্রের মূল্যায়ন কমিটি দেরি করছেন সেটা আমার কিছু করার নেই, যদি তিনি মূল্যায়ন কমিটির প্রধান।
শহীদ