
ছবি সংগৃহীত
আমাদের দৈনন্দিন কিছু অভ্যাস মস্তিষ্কের কার্যকারিতা নষ্ট করছে, অথচ আমরা হয়তো তা বুঝতেই পারছি না। গবেষণা বলছে, কিছু সাধারণ ভুল বা অস্বাস্থ্যকর অভ্যাস দীর্ঘমেয়াদে ব্রেনের ক্ষতির কারণ হতে পারে।
হার্ভার্ড মেডিকেল স্কুল, ন্যাশনাল ইন্সটিটিউট অফ নিউরোলজিক্যাল ডিজঅর্ডার্স অ্যান্ড স্ট্রোকসহ বিভিন্ন গবেষণা প্রতিবেদনে এমনই কিছু অভ্যাসের কথা বলা হয়েছে, যা আমাদের মস্তিষ্কের জন্য ভয়াবহ হতে পারে। আসুন জেনে নিই সেই অভ্যাসগুলো এবং কীভাবে এগুলো থেকে মুক্তি পাবেন।
মস্তিষ্কের জন্য ক্ষতিকারক ১১টি অভ্যাস
১. পর্যাপ্ত ঘুম না নেয়া: গবেষণায় দেখা গেছে, কম ঘুম মস্তিষ্কের নিউরনের সংযোগ দুর্বল করে এবং স্মৃতিশক্তি হ্রাস করতে পারে। হার্ভার্ড মেডিকেল স্কুলের মতে, প্রতিদিন ৭-৮ ঘণ্টা ঘুম না হলে ব্রেনের পুনরুদ্ধার প্রক্রিয়া বাধাগ্রস্ত হয়।
২. অতিরিক্ত চিনি খাওয়া: সুগার ব্রেনের কর্মক্ষমতা কমিয়ে দেয় এবং ডিমেনশিয়ার ঝুঁকি বাড়ায়। গবেষণা অনুযায়ী, যারা অতিরিক্ত মিষ্টি খান, তাদের ব্রেনের সংকোচন দ্রুত হয়।
৩. সকালে নাস্তা না করা: নাস্তা না খেলে মস্তিষ্ক পর্যাপ্ত গ্লুকোজ পায় না, ফলে মনোযোগ কমে যায় এবং স্ট্রেস হরমোন বেড়ে যায়।
৪. অতিরিক্ত স্ট্রেস নেওয়া: লম্বা সময় ধরে মানসিক চাপ থাকলে মস্তিষ্কের কোষ নষ্ট হতে শুরু করে এবং এটি স্মৃতিশক্তি ও শিখনক্ষমতা দুর্বল করে দেয়।
৫. একসঙ্গে অনেক কাজ (মাল্টিটাস্কিং) করা: একসঙ্গে একাধিক কাজ করলে মনোযোগের ঘাটতি হয়, এবং মস্তিষ্কের তথ্য প্রক্রিয়াকরণ ক্ষমতা কমে যায়।
৬. পানি কম খাওয়া: শরীরে পানির ঘাটতি হলে মস্তিষ্কের কোষ সংকুচিত হয়, যার ফলে চিন্তাভাবনায় জটিলতা আসে এবং মনোযোগ কমে যায়।
৭. পর্যাপ্ত শারীরিক পরিশ্রম না করা: সারাদিন বসে থাকলে মস্তিষ্কে রক্তপ্রবাহ কমে যায়, যা মেমোরি লসের কারণ হতে পারে।
৮. ধূমপান করা: ধূমপানের ফলে ব্রেনের কোষ ক্ষতিগ্রস্ত হয় এবং স্মৃতিভ্রংশের ঝুঁকি বেড়ে যায়।
৯. একাকিত্ব ও সামাজিক বিচ্ছিন্নতা: মানুষের সঙ্গে কম মেলামেশা করলে ব্রেনের কার্যকারিতা কমে যায় এবং মানসিক অবসাদ তৈরি হয়।
১০. উচ্চ শব্দে গান শোনা বা কানে হেডফোন ব্যবহার: অতিরিক্ত লাউড মিউজিক ব্রেনের স্নায়ুকে প্রভাবিত করে এবং মেমোরি লসের কারণ হতে পারে।
১১. বেশি ফাস্টফুড খাওয়া: ফাস্টফুডে থাকা ট্রান্স ফ্যাট ব্রেনের কার্যকারিতা ধীর করে এবং ডিমেনশিয়ার ঝুঁকি বাড়ায়।
মস্তিষ্কের সুস্থতার জন্য দৈনন্দিন অভ্যাসগুলো সচেতনভাবে পরিবর্তন করা জরুরি। সঠিক খাদ্যাভ্যাস, পর্যাপ্ত ঘুম, নিয়মিত ব্যায়াম ও মানসিক প্রশান্তি মস্তিষ্ককে দীর্ঘ সময় ধরে কর্মক্ষম রাখবে। এখনই সতর্ক না হলে ভবিষ্যতে স্মৃতিশক্তি ও চিন্তাশক্তি কমে যাওয়ার ঝুঁকি বাড়তে পারে। তাই ব্রেনের ১২টা বাজার আগে এসব অভ্যাস বদলে ফেলুন!
আশিক