
সংগৃহীত
রোজা শুধু একটি ধর্মীয় আচার নয়, বরং এটি শরীর ও মনের জন্য গভীর ইতিবাচক প্রভাব ফেলে। আধুনিক গবেষণায় প্রমাণিত হয়েছে, সঠিক নিয়মে রোজা পালন করলে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে, ওজন নিয়ন্ত্রণ হয় এবং দীর্ঘমেয়াদি বিভিন্ন রোগের ঝুঁকি কমে। নিচে বৈজ্ঞানিকভাবে প্রমাণিত রোজার ৮টি গুরুত্বপূর্ণ বিজ্ঞানসম্মত স্বাস্থ্য উপকারিতা তুলে ধরা হল:
১.ওজন কমানো ও বিপাকক্রিয়া উন্নতি
রোজার সময় শরীর জমা থাকা চর্বিকে শক্তিতে পরিণত করে, যা ওজন কমাতে সহায়ক। এটি বিপাকক্রিয়া বাড়িয়ে শরীরের ক্যালোরি পোড়ানোর হার বৃদ্ধি করে।
২.ইনসুলিন সংবেদনশীলতা বৃদ্ধি ও ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ
রোজা শরীরে ইনসুলিনের কার্যকারিতা বাড়ায় এবং রক্তে শর্করার পরিমাণ নিয়ন্ত্রণে রাখে, যা টাইপ-২ ডায়াবেটিসের ঝুঁকি কমায়।
৩.হৃদরোগের ঝুঁকি হ্রাস
নিয়মিত রোজা রক্তচাপ, কোলেস্টেরল ও ট্রাইগ্লিসারাইডের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখে। এটি হৃদযন্ত্রের কর্মক্ষমতা বাড়িয়ে হার্ট অ্যাটাক ও স্ট্রোকের ঝুঁকি কমায়।
৪.মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নতি
রোজা স্মৃতিশক্তি বাড়ায় এবং বিষণ্নতা ও উদ্বেগ কমাতে সহায়তা করে।
৫.প্রদাহ কমানো
রোজার সময় শরীরে প্রদাহজনিত উপাদানগুলোর মাত্রা কমে যায়। এটি বাত, হৃদরোগ এবং ক্যানসারের মতো দীর্ঘমেয়াদি রোগ প্রতিরোধে সহায়ক।
৬.কোষের পুনর্গঠন ও অটোফেজি
রোজার সময় শরীরে অটোফেজি নামে একটি প্রক্রিয়া সক্রিয় হয়, যেখানে পুরোনো এবং ক্ষতিগ্রস্ত কোষগুলো ভেঙে পুনরায় নতুন কোষ তৈরি হয়। এটি ক্যানসার ও বার্ধক্যজনিত রোগ প্রতিরোধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
৭.দীর্ঘায়ু হওয়ার সম্ভাবনা
প্রাণীদের ওপর করা গবেষণায় দেখা গেছে, নিয়মিত রোজা বার্ধক্য প্রক্রিয়া ধীর করে এবং জীবনের আয়ুষ্কাল বৃদ্ধি করতে সহায়ক।
৮. অন্ত্রের স্বাস্থ্য উন্নতি ও ডিটক্সিফিকেশন
রোজার মাধ্যমে অন্ত্রে উপকারী ব্যাকটেরিয়ার সংখ্যা বাড়ে এবং ক্ষতিকর টক্সিন শরীর থেকে বের হয়ে যায়। এটি হজমতন্ত্রকে সুস্থ রাখতে সহায়ক।
সঠিক নিয়মে রোজা পালন শরীর ও মন উভয়ের জন্য উপকারী। এটি শুধু ওজন কমানো নয়, বরং দীর্ঘমেয়াদি রোগের ঝুঁকি কমিয়ে জীবনযাত্রার মান উন্নত করে। তবে, দীর্ঘমেয়াদি বা নির্দিষ্ট কোনো রোগ থাকলে রোজা শুরুর আগে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।