
সংগৃহীত
পুষ্টিবিদ মোহাম্মদ সজল পরামর্শ অনুযায়ী, রমযানে ওজন কমাতে চাইলে ইফতারে যা যা রাখতে পারেনঃ
১) ইফতারে সব ধরনের চিনির শরবত-ট্যাং-রুহ আফজা ইত্যাদি নানান নামের, নানান কালারের শরবত থেকে অতি অবশ্যই দূরে থাকবেন। এর বদলে সিম্পলি এক প্যাকেট স্যালাইন খেয়ে নিতে পারেন বা চিনি ছাড়া/সামান্য খেজুর গুড় দিয়ে ইসপগুলের শরবত।
২) মুড়ি-জিলাপি-বুরিন্দা-আলুর চপ-বেগুনী-পেয়াজু ইত্যাদি বাদ দিয়ে এর বদলে বেছে নিন কমপ্লেক্স কার্ব। এর মধ্যে ছোলা হতে পারে গুড অপশন। এছাড়াও মটর, যবের ছাতু, রোল্ড ওটস, খেজুর রাখতে পারেন। তবে ইফতারে কার্ব খাওয়া উচিত সব কিছু খেয়ে নেয়ার পরে। আপনি যদি কার্ব দিয়ে শুরু করেন, সম্ভাবনা আছে আপনি আর থামতে পারবেন না সহজে।
কতটুকু খাবেন?? আপনার উচ্চতা যত ইঞ্চি, তার সমান পরিমান কার্ব আপনি টোটাল নিন যদি থাইরয়েড ঠিক থাকে।
৩) নেক্সট আসে সালাদ। আপনার ইফতার বোলে এইটা খুব খুব গুরুত্বপূর্ণ। শসা-গাজর-টমেটো-ক্যাপসিকাম-মাশরুম-লেটুস সহ সালাদের সাথে টপিংস হিসাবে যোগ করুন বাদাম। কয়েক টেবিল চামচ টক দই আর চিয়া সিডও এড করা যেতে পারে। সালাদের সাথে ফ্রুটস যোগ করা ইফতারে বাড়তি স্বাদ নিয়ে আসতে পারে, সেক্ষেত্রে পেয়ারা, আপেল, নাশপাতির মত ফল যাতে উল্লেখযোগ্য পরিমান ফাইবার আছে, সেগুলো যোগ করতে পারেন।
৪) রোজায় শরীর ডিহাইড্রেটেড হয়ে যায়। তাই ইফতার থেকে সাহরি পর্যন্ত পিপাসা মেটাতে যতোটুকু প্রয়োজন পানি পান করবেন। পানির সাথে মিক্স করতে পারেন সামান্য চিমটি পিংক সল্ট। রোজায় যতটা সম্ভব ক্যাফেইন (চা, কফি) এভয়েড করার চেষ্টা করবেন।
৫)ইফতারে বেশি প্রোটিন খেয়ে লাভ নাই আসলে। এশার পর থেকেই আপনার হজম ধীরে ধীরে স্লো হয়ে আসবে, ফলে প্রোটিন সম্ভবত ভাল করে হজম হবে না বরঞ্চ লার্জ ইন্টেস্টাইনে গিয়ে নষ্ট হবে। আপনার ওজন যত কেজি, তাকে চার দিয়ে ভাগ করুন। যত গ্রাম আসবে, তত গ্রাম প্রোটিন খাবেন।
কিভাবে??
ধরেন আপনার ওজন ৮০ কেজি। ২০ গ্রাম প্রোটিন। মানে ছোট আড়াই ইঞ্চি সাইজের ৩ টুকরা গোশত বা মাছ বা ২টা ডিম(ডিম কম ধরার কারন ডিমে থাকা বাড়তি ফ্যাট)। এটাই ইফতারে যথেষ্ট।
ইফতারের পর পর গাদা গাদা শরবত আর একসাথে অনেক বেশি পানি খেলে আপনি আরো বেশি দূর্বল ফিল করবেন। কারন এই ড্রিংকস গুলাতে এমনেই ইলেক্ট্রোলাইটের কোন বালাই থাকেনা তার উপর অতিরিক্ত পানি খেয়ে আপনার যা ছিলো সেটাও ফ্ল্যাশ করে দিচ্ছেন। তাই পিপাসা মেটাতে যতোটুকু প্রয়োজন অতোটুকু পানি খাবেন।
ইফতার থেকে তারাবী পর্যন্ত সময়ে নিজেকে চাংগা রাখতে হাফ চিমটি পিংক সল্ট/চিমটি সী সল্ট, ৫০০-১০০০ এমজি ভিটামিন সি পাউডার অথবা ইসপগুলের ভুষি এক গ্লাস পানিতে মিশিয়ে নেড়ে খেয়ে নিতে পারেন।
এই হল ইফতারের সহজ হিসাব। একটু মাথা খাটালেই যে কেউ পারবেন বলে মনে হয়।
আপনার রোযায় আমাদের পরামর্শের মাধ্যমে যদি কোন উপকার হয়, আমাদের জন্য দোয়া করতে ভুলবেন না।