
মাহে রমজান অতিবাহিত হচ্ছে ডিস্ক প্রলাপস কোমরে হলে ব্যথা কোমর থেকে পায়ের দিকে ছড়িয়ে পড়ে ডিস্ক প্রলাপস কোমরে হলে ব্যথা কোমর থেকে পায়ের দিকে ছড়িয়ে পড়ে মেরুদণ্ডের দুই কশেরুকার ভেতর যে ফাঁকা অংশ থাকে, সেটির নাম ডিস্ক। এটি যদি জায়গা থেকে সরে যায়, তখন তাকে ডিস্ক প্রলাপস বা পিএলআইডি হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। মেরুদণ্ডের সঙ্গে যে স্পাইনাল লিগামেন্ট ও মাংসপেশী থাকে, সেগুলো দুর্বল হয়ে গেলে এমনটা হতে পারে। অসচেতনভাবে সামনের দিকে ঝুঁকে কোনো ভারী বস্তু ওঠাতে গেলে, উঁচু স্থান থেকে পড়ে গেলে, সড়ক দুর্ঘটনায়, দীর্ঘক্ষণ বসে একই অবস্থানে কাজ করলে, এমনকি সামনে ঝুঁকে জুতার ফিতা বাঁধতে গেলে বা বেসিনে হাতমুখ ধুতে গেলেও ডিস্ক সরে যেতে পারে।
সাধারণত লাম্বার ফোর ও ফাইভ অংশে বেশিরভাগ সময় ডিস্ক প্রলাপস হয়ে থাকে। নারীরা এ রোগে বেশি ভুগে থাকেন। ডিস্ক প্রলাপস শুধু কোমরেই হয় না, ঘাড়ে বা পিঠের যেকোনো অংশেও হতে পারে।
যদি ঘাড়ের মেরুদণ্ডে ডিস্ক প্রলাপস হয়, তবে ঘাড়ের ব্যথা ক্রমেই হাতের দিকে ছড়িয়ে পড়বে ও তীব্র ব্যথা হবে। হাত ঝুলিয়ে রাখলে বা এক কাতে বিছানায় শুয়ে থাকলেও তীব্র ব্যথা অনুভব করতে পারেন। সঙ্গে হাত ঝিঁঝিঁ বা অবশ মনে হবে, হাতের শক্তি ধীরে ধীরে কমবে ও দুর্বল হয়ে আসবে। অনেক ক্ষেত্রে হাতের মাংসপেশী শুকিয়ে যেতে পারে।
ডিস্ক প্রলাপস কোমরে হলে ব্যথা কোমর থেকে পায়ের দিকে ছড়িয়ে পড়বে। খানিকক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকলে কিংবা হাঁটলে ব্যথা বাড়ে, হাঁটার সক্ষমতা কমে। কিছুক্ষণ বিশ্রাম নিলে একটু ভালো লাগে। পায়ে জ্বালাপোড়া বা ঝিঁঝিঁ অনুভব হতে পারে, পায়ে শক্তি কমে যায় এবং অনেক ক্ষেত্রে পায়ের মাংসপেশী শুকিয়ে যেতে পারে। রোগের তীব্রতা বেশি হলে প্রস্রাব ও পায়খানা চলে যেতে পারে নিয়ন্ত্রণের বাইরে।
করণীয়
ব্যথানাশক ওষুধের পাশাপাশি সম্পূর্ণ বিশ্রাম নিলে অনেক সময় ব্যথা থেকে অনেকাংশে মুক্তি পাওয়া যায়। বিশেষজ্ঞ ফিজিওথেরাপি চিকিৎসকের পরামর্শে নির্দিষ্ট কিছু নিয়ম মানতে ও ব্যায়াম করতে পারলে দুই-চার সপ্তাহের মধ্যে পুরোপুরি ভালো হয়ে যান ৯৫ ভাগ রোগী। কখনো কখনো অস্ত্রোপচারের প্রয়োজন হতে পারে।
কিছু সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে, যেমন সামনে ঝুঁকে ভারী কোনো কাজ করা থেকে বিরত থাকা, ভারী ওজনের কিছু বহন না করা, শোবার সময় আরামদায়ক বিছানা ব্যবহার করা।
ভ্রমণ ও হাঁটাচলার সময় কোমরে সাপোর্ট বা লাম্বার কোরসেট ব্যবহার করা উচিত। ভ্রমণের সময় গাড়ির মাঝামাঝি অংশে বসা ভালো।
হালকা গরম পানির সেঁক নেওয়া যায়।
লেখক : চেয়ারম্যান ও চিফ কনসালট্যান্ট, রিঅ্যাকটিভ ফিজিওথেরাপি সেন্টার, ফনিক্স টাউয়ার, (লিফটের ৫) সিটি পেট্রোল পাম্পের পিছনের গলিতে, শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ অ্যাভিনিউ, তেজগাঁও, সাতরাস্তা, ঢাকা।
মোবাইল : ০১৭১৬৪৫৩২০৫