
ছবিঃ সংগৃহীত
যাদেরই ওজন অতিরিক্ত আছে অবশ্যই তাদের ইনসুলিন রেজিস্টেন্স আছে, হোমা এয়ার বেশি আছে, ইনসুলিন বেশি আছে এতে কোন সন্দেহ নেই।
ওজন কমানোর দিক-নির্দেশনাঃ
ভাত, রুটি ,ফল, দুধ, চিড়া,মুড়ি - এই জাতীয় যা আছে এবং সব ধরনের ফল আপাতত বন্ধ করে দিতে হবে। এছাড়া সয়াবিন তেল, প্রসেসড ফুড, আল্ট্রা প্রসেসড ফুড, ডুবো তেলে ভাজা, ক্রিস্পি, ক্রাঞ্চি, কোল্ড ড্রিংকস- ভাজাপোড়া যা আছে এগুলো সব বন্ধ করে দিতে হবে।
সবজি ডিম,সবজি মাছ,সবজি মাংস, কোকোনাট অয়েল, এক্সট্রা ভার্জিন সেন্ট্রিফিক্যাল এক্সট্রাকশন অর্গানিক কোকোনাট অয়েল, খাঁটি ঘি এবং এমসিটি। এছাড়াও হাঁসের মাংস,কবুতরের মাংসও খেতে পারেন। ভাত, রুটি, ফল যেহেতু বন্ধ সেহেতু ডিম সবজি, সবজি দিয়ে মাছ, সবজি দিয়ে মাংস এই খাবারগুলো প্রথম দিকে একটু বাড়িয়ে খাওয়ার চেষ্টা করতে হবে যেন ক্ষুধা না লাগে অর্থাৎ ক্ষুধাকে রেস্পেক্ট করতে হবে। যখন রেগুলার এই খাবার গুলো খাওয়া হবে তখন কিন্তু আস্তে আস্তে দেখা যাবে যে, ক্ষুধাটা কমতে থাকবে। যখনই ক্ষুধা কমতে থাকবে তখনই ফাস্টিং উইন্ডো বড় করতে হবে অর্থাৎ চেষ্টা করতে হবে যে সন্ধ্যা ছয়টার পরে আর কিছু না খাওয়া এবং চেষ্টা করতে হবে যে নয়টা বাজে ঘুমাতে যাওয়া। যার ফলে ভোরে উঠা সহজ হবে।
সকালে ক্ষুধা না লাগা পর্যন্ত খাওয়া থেকে বিরত থাকুন। ভালো ফল পেতে বেকিং সোডা খেতে পারেন, আর এমসিডি খেলে দুর্বল লাগবে না। ঘি, কোকোনাট অয়েল ও এমসিডি খেলে প্রথমে বেশি খাওয়া যেতে পারে, তবে ধীরে ধীরে কমাতে হবে। অতিরিক্ত বা একদম কম খাওয়া দুটোই ক্ষতিকর, তাই ব্যালেন্স বজায় রাখা জরুরি।
আপনার শরীরের সংকেত শুনুন—ক্ষুধা কমে এলে সন্ধ্যার পর খাওয়া বন্ধ করুন এবং ধীরে ধীরে সকালের নাশতা দেরি করুন। ক্ষুধা লাগলে খান, নাহলে পানিতে হিমালয়ান সল্ট, ভিনেগার-লেবুর মিশ্রণ বা ডিটক্স ওয়াটার নিতে পারেন। ব্ল্যাক কফি বা অর্গানিক গ্রিন টি সাহায্য করতে পারে। সন্ধ্যা ৬টায় খাওয়া শেষ করে সকাল ১০টায় নাশতা করলে দীর্ঘ ফাস্টিং উইন্ডো তৈরি হবে, যা ফ্যাট বার্নে সহায়ক। ধীরে ধীরে ১২টা বা ২টা পর্যন্ত খাবার না খেয়ে থাকার অভ্যাস গড়ে তুলুন।
রমজানে ২০ ঘণ্টার ফাস্টিং আপনার ওজন কমাতে সহায়ক হতে পারে। সেহরিতে লবণ মিশ্রিত পানি পান করুন, সকালের হালকা ব্যায়াম বা স্ট্রেচিং করুন, খালি পায়ে হাঁটুন এবং নরম রোদে কিছুক্ষণ থাকুন। নামাজ ও তারাবি পড়ার মাধ্যমে স্বাভাবিকভাবেই শারীরিক অ্যাক্টিভিটি হবে। ইফতারের আগে হালকা হাঁটা বা জগিং করলে ওজন দ্রুত কমবে। প্রথম সাত দিনে ৩-৪ কেজি ওজন কমতে পারে, আর ১৫-২০ দিনের মধ্যে ৭-৮ কেজি পর্যন্ত কমতে পারে। খাদ্যতালিকায় সবজি, ডিম, মাছ, মাংস ও সালাদ রাখুন এবং স্বাস্থ্যকর খাবারের দিকে মনোযোগ দিন।
রমজানে স্বাস্থ্যকর উপায়ে ওজন কমানোর জন্য ভেজানো কাঁচা ছোলা, চিয়া সিড, গ্রিন জুস, বিটকাফাস, চালকুমড়ার জুস ইত্যাদি খেতে পারেন। পাশাপাশি শ্বাসের ব্যায়াম (যেমন উইম হফ পদ্ধতি) করলে মানসিক প্রশান্তি আসবে। যারা হজমজনিত সমস্যায় ভুগছেন, তারা কফি এনেমা করে লিভার ক্লিনজিং এবং বডি ডিটক্সিফিকেশন করতে পারেন। প্রোবায়োটিক ও প্রিবায়োটিক সমৃদ্ধ খাবার খেলে আরও ভালো ফল পাবেন। সবসময় নিজের শরীরের সংকেত বুঝে খাওয়া-দাওয়া ও ঘুমের সময় ঠিক করুন, তাহলেই সঠিক ব্যালেন্স তৈরি হবে।
ইফতারের পর আর কিছু খাওয়ার দরকার নেই, শুধু পানি পান করুন এবং তাড়াতাড়ি ঘুমিয়ে পড়ুন। এরপর তাহাজ্জুদ পড়ে সেহরির সময় যদি ক্ষুধা লাগে, তাহলে ডিম খান, আর না লাগলে শুধু লবণ মেশানো পানি পান করুন। ওজন কমাতে চাইলে সেহরিতে অন্য কিছু না খাওয়াই ভালো। সেহরির পর ফজরের নামাজ পড়ে যতক্ষণ সম্ভব ঘুমান, বিশেষ করে অফিস থাকলে কাজের আগে পর্যন্ত ঘুমানো উপকারী। সকালে অতিরিক্ত কিছু করার প্রয়োজন নেই। এই রুটিন মেনে চললে ক্ষুধা কমবে, ফ্যাট বার্ন হবে এবং শরীর থাকবে সুস্থ ও শক্তিশালী।
যদি সুযোগ থাকে, তাহলে সকালে স্ট্রেচিং বা যোগ ব্যায়াম করতে পারেন। তবে সম্ভব না হলে ঘুমকে প্রাধান্য দিন এবং প্রতিদিন অন্তত ৭-৮ ঘণ্টা ঘুমানোর চেষ্টা করুন। সকালের ঘুম গুরুত্বপূর্ণ, বিশেষ করে সেহরিতে বেশি খেলে বারবার টয়লেটে যাওয়ার কারণে ঘুম ব্যাহত হতে পারে। তাই সেহরিতে অতিরিক্ত খাবার এড়িয়ে চলুন। যারা সকালে ব্যায়াম করবেন না, তারা বিকেলে ব্যায়ামের দিকে মনোযোগ দিন।
সকালে স্ট্রেচিং বা রিল্যাক্সিং ব্যায়াম করুন, আর বিকেলে স্ট্রেংথ ট্রেনিং, হাই-ইনটেনসিটি ইন্টারভাল ট্রেনিং (HIIT), জগিং বা হাঁটাহাটি করুন। সকালে ও বিকেলে নরম রোদে সময় কাটান। খাদ্যতালিকায় সবজি, ডিম, মাছ, মাংস, অলিভ অয়েল, কোকোনাট অয়েল, ঘি ও এমসিটি অয়েল রাখুন। তারাবির আগে বুলেটপ্রুফ কফি খেলে উপকার পাবেন। নিয়ম মেনে চললে রমজানে ১০-১৫ কেজি ওজন কমতে পারে। সবার সঙ্গে শেয়ার করুন এবং সুস্থ থাকুন।
ইমরান