
ছবি সংগৃহীত
ক্যানসার শনাক্তকরণে বিশ্বজুড়ে গবেষণা চলছে দীর্ঘদিন ধরেই। তবে এবার এক যুগান্তকারী আবিষ্কারের দাবি করেছেন আমেরিকার মিশিগানের ভ্যান অ্যান্ডেল ইনস্টিটিউটের বিজ্ঞানীরা। তাদের মতে, মাতৃগর্ভেই ভ্রূণের জিন পরীক্ষা করে জানা যাবে ভবিষ্যতে তার ক্যানসারের ঝুঁকি রয়েছে কি না। এই গবেষণাটি সম্প্রতি ‘নেচার ক্যানসার’ মেডিক্যাল জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে।
ক্যানসার সাধারণত জিনের ‘অ্যাক্সিডেন্টাল’ মিউটেশন বা আকস্মিক পরিবর্তনের ফলে হয়। এটি মূলত বংশগতি, পরিবেশ এবং জীবনযাত্রার ওপর নির্ভরশীল। তবে বিজ্ঞানীদের নতুন গবেষণা বলছে, কিছু নির্দিষ্ট জিনই ক্যানসার হওয়ার জন্য দায়ী হতে পারে এবং ভ্রূণ অবস্থাতেই সেই জিনের মিউটেশন শুরু হতে পারে। যদি আগেভাগেই সেই পরিবর্তন শনাক্ত করা যায়, তাহলে ক্যানসার প্রতিরোধের সম্ভাবনা অনেকটাই বেড়ে যাবে।
গবেষক জে অ্যান্ড্রিউ পসপিসিলিক বলেন, "জিনের পরিবর্তন একদিনেই ঘটে না, এটি ধীরে ধীরে হয়। যখন ভ্রূণের কোষ বিভাজন শুরু হয়, তখন থেকেই এই পরিবর্তন ধরা সম্ভব হতে পারে। তাই আগেভাগেই এর ইঙ্গিত পাওয়া গেলে চিকিৎসা বা প্রতিরোধের ব্যবস্থা নেওয়া যেতে পারে।"
গবেষণায় দেখা গেছে, ১৯ নম্বর ক্রোমোজোমে থাকা ‘ট্রিম২৮’ নামে একটি বিশেষ জিন কোষের গঠন, বৃদ্ধি এবং বিভাজনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। এই জিনে অস্বাভাবিক পরিবর্তন হলে তা কোষ বিভাজনে প্রভাব ফেলে এবং ক্যানসারের ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয়। বিজ্ঞানীরা ইঁদুরের ওপর গবেষণা করে নিশ্চিত হয়েছেন যে, এই বিশেষ জিনের পরিবর্তন ক্যানসারের আশঙ্কা সৃষ্টি করতে পারে।
গবেষণাটি আশাব্যঞ্জক হলেও এখনো মানবদেহে এর সফলতা পরীক্ষা করা হয়নি। কলকাতার ক্যানসার বিশেষজ্ঞ ডা. গৌতম মুখোপাধ্যায় বলেন, "জিন নিয়ে গবেষণা নতুন কিছু নয়। তবে ভ্রূণ অবস্থায় ক্যানসারের ঝুঁকি শনাক্ত করা সম্ভব হলে সেটি একটি যুগান্তকারী আবিষ্কার হবে। তবে এখনই নিশ্চিতভাবে কিছু বলা যাচ্ছে না, কারণ মানবদেহে এটি পরীক্ষা করা বাকি।"
আশিক