ঢাকা, বাংলাদেশ   সোমবার ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১২ ফাল্গুন ১৪৩১

’নয়েজ ক্যানসেলিং’ ইয়ারফোন: অপূরণীয় ক্ষতি থেকে বাঁচার উপায়

প্রকাশিত: ১৯:৫৭, ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

’নয়েজ ক্যানসেলিং’ ইয়ারফোন: অপূরণীয় ক্ষতি থেকে বাঁচার উপায়

ছবি: প্রতীকী

'নয়েজ ক্যানসেলিং' নাম থেকেই বোঝা যায় এই ধরনের ইয়ারফোন ব্যবহার করলে বাইরের শব্দ কানে ঢোকে না খুব একটা। বাস, ট্রেনে বা বিমানে যারা লম্বা সফর করেন, তারা এমন হেডফোন বা ইয়ারফোনই বেশি ব্যবহার করেন। অনেকের ধারণা, নয়েজ ক্যানসেলিং ইয়ারফোন ব্যবহার করলে ক্লান্তি কেটে যায়, ঘুমও ভালো হয়।

কমবয়সীদের মধ্যে এই হেডফোন বা ইয়ারফোনের চাহিদা দিন দিন বাড়ছে। অনেকেরই ধারণা, সাধারণ হেডফোনের তুলনায় এগুলো অনেক বেশি সুরক্ষিত। তবে চিকিৎসকরা বলছেন ভিন্ন কথা। গবেষণায় দেখা গেছে, এমন হেডফোনই কানের জন্য বেশি ক্ষতিকর।

ভারতের 'ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ হেল্‌থ'-এর গবেষণা বলছে, "নয়েজ ক্যানসেলিং ইয়ারফোনে 'অ্যাকটিভ নয়েজ কন্ট্রোল' প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়, কিন্তু তা মূলত বিজ্ঞানসম্মত নয়। বাইরের শব্দ না ঢুকলেও এমন হেডফোনে কেউ যদি উচ্চস্বরে গান শোনেন, তাহলে কানের ক্ষতি হতে বাধ্য। এমন হেডফোন একটানা ব্যবহারেও মস্তিষ্কের উপরে চাপ পড়ে, ক্ষতি হয় স্নায়ুরও।"

নাক-কান-গলার (ইএনটি) রোগের চিকিৎসক অমিতাভ ভট্টাচার্য কোনো ইয়ারফোনকেই সুরক্ষিত বা নিরাপদ বলতে চান। পুরোটাই বিজ্ঞাপনী চমক ও কমবয়সীদের দৃষ্টি আকর্ষণের চেষ্টা উল্লেখ করে তিনি বলেন, "নয়েজ ক্যানসেলিং হেডফোন বা ইয়ারফোন বলে যা বিক্রি হয়, তার কোনোটাই বিজ্ঞানসম্মত ভাবে তৈরি হয় না। তাই শব্দের তীব্রতা যদি ৮০ ডেসিবেল ছাড়িয়ে যায়, তাহলে কানের ক্ষতি হবেই।"

 

কতটা ক্ষতি?

সারাক্ষণ কানে হেডফোন গুঁজে রাখলে অন্তঃকর্ণের ককলিয়া অংশটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। কানের কোষগুলো নষ্ট হতে থাকে, শুকিয়ে যেতে থাকে কানের ফ্লুইড। কানের ক্ষতি হলে এর প্রভাব পড়ে মস্তিষ্ক ও স্নায়ুতেও। একজন চিকিৎসক জানান, "যেকোনো হেডফোনই যদি ১৫ মিনিটের বেশি কানে গুঁজে রাখা হয়, তাহলে অন্তঃকর্ণের যে পরিমাণ ক্ষতি হয়, তা সহজে সারানো সম্ভব হয় না।"

এ ক্ষেত্রে কানের দুই রকম ক্ষতি হতে পারে।

১। স্বল্পমেয়াদি: কম সময়ের জন্য কানে শুনতে না পাওয়া অথবা কান ভোঁ-ভোঁ করা। এই সমস্যা অবশ্য দ্রুত ঠিক হয়ে যায়।

২। স্থায়ী: এতে কানের দীর্ঘমেয়াদি ক্ষতি হয়। অনেকে বধিরও হয়ে যেতে পারে।

 

সমাধানের উপায়

হেডফোন বা ইয়ারফোনের ব্যবহার বন্ধ করা সম্ভব নয়। কর্মক্ষেত্রেও অনেককেই তা ব্যবহার করতে হয়। সেক্ষেত্রে সমাধানের উপায় হিসেবে চিকিৎসকরা পরামর্শ হলো এর ব্যবহার কমানো, একটানা ব্যবহার না করা এবং ২০ মিনিট পর পর কানকে বিশ্রাম দেয়া।

বেশি মাত্রায় এবং উচ্চশব্দে ইয়ারফোন ব্যবহারে ভবিষ্যতে জটিল শারীরিক সমস্যা কিংবা শ্রবণশক্তিও নষ্ট হওয়ার আশঙ্কার কথা জানিয়ে চিকিৎসকরা খুব প্রয়োজন ছাড়া ইয়ারফোন ব্যবহার না করার পরামর্শ দেন।

 

তথ্যসূত্র : https://tinyurl.com/yx6mar4m

রাকিব

×