
আমাদের প্রায়ই মনে হয়, মাথা যেন ঠিক আগের মত কাজ করছে না! সকালে ঘুম থেকে উঠতে কষ্ট হচ্ছে, চাবি কোথায় রেখেছি অথবা গতরাতে খাবারে কি ছিল কিছুই মনে পড়ে না। আসলে শরীরের মত মনেরও দরকার কিছুটা ওয়ার্ম আপ। আর সুখবর হলো, নিয়মিত কিছু স্বাস্থ্যকর অভ্যাসেই আমরা মনকে করে তুলতে পারি আরও চাঙ্গা।
তাহলে জেনে নেয়া যাক সেই অভ্যাসগুলো!
ঘুম থেকে উঠে এক গ্লাস পানি
আমাদের অনেকেরই অভ্যাস সকালে ঘুম থেকে উঠে আগে চা বা কফি খাওয়া। চা বা কফির পরিবর্তে ঘুম থেকে উঠে এক গ্লাস পানি খেলে মস্তিষ্কের কর্মক্ষমতা বাড়ে। আমাদের শরীর মতই ব্রেনেরও বেশিরভাগ অংশই পানি, তাই পানি কম খাওয়া হলে মাথা ভার হয়ে থাকে, চিন্তাভাবনা চলে না। পানির সাথে সামান্য লেবুর রস বা পিংক সল্ট মিশিয়ে নিলে এতে থাকা মিনারেল ও ভিটামিন সকাল বেলাতেই শরীর ও মন ভাল করে তুলবে।
সুপারম্যান পোজ
আমরা কি জানি, যে একটি পাওয়ার পোজ রাখা আত্মবিশ্বাস বাড়াতে এবং চাপ কমাতে পারে? সুপারম্যান তেমনই একটি পোজ। লম্বা হয়ে দাঁড়ান, আপনার নিতম্বে হাত রাখুন, বুক বের করুন এবং দুই মিনিটের জন্য গভীর শ্বাস নিন। এটি শুধুমাত্র আপনার মস্তিষ্ককে জাগিয়ে তোলে না বরং অক্সিজেন প্রবাহকেও বাড়িয়ে দেয়, আপনাকে আরও স্পষ্টভাবে চিন্তা করতে সহায়তা করে। গবেষণায় দেখা গেছে, শারীরিক অঙ্গভঙ্গি মস্তিষ্কের কার্যকলাপকে প্রভাবিত করে,এবং পাওয়ার পোজ মানসিক ক্ষেত্রে ইতিবাচক পরিবর্তন আনে।
ত্রিশ সেকেন্ডের উল্টো হাত চ্যালেঞ্জ
নিউরন সক্রিয় করতে চাইলে এই চ্যালেঞ্জটি আপনার জন্য। আপনার দাঁত ব্রাশ করা, কফি নাড়তে বা ফোন আনলক করার মতো ছোট কাজের জন্য আপনার উলটো হাত ব্যবহার করুন। মানে আপনি ডানহাতি হলে বাম হাত, বামহাতি হলে ডান হাত। এটি আপনার মস্তিষ্ককে আরও কঠোর পরিশ্রম করতে বাধ্য করে, স্মৃতিশক্তি উন্নত করে। এটি প্রথমে অদ্ভুত মনে হয় কিন্তু একটি আসলে খুবই মজার চ্যালেঞ্জ।
সকালের নাস্তার আগে একটি স্ন্যাক
আপনি আপনার স্বাভাবিক নাস্তা করার আগে, এক মুঠো আখরোট, ব্লু-বেরি বা ডার্ক চকলেট (হ্যাঁ, চকলেট!) নিন। এই খাবারগুলি অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং ওমেগা -3 ফ্যাটি অ্যাসিড সমৃদ্ধ, যা স্মৃতিশক্তি এবং মস্তিষ্কের কার্যকারিতা বাড়ায়। আখরোট রাতারাতি ভিজিয়ে রাখার চেষ্টা করুন, আর হ্যা, চিনি দেয়া চকলেট খাওয়া যাবে না তাই বলে!
মেমোরি গেম
সকালে প্রথমে আপনার ফোনে স্ক্রল না করে একটি দ্রুত মেমরি গেম খেলতে পারেন। যেমন, আপনি গতকাল করেছিলেন এমন পাঁচটি জিনিস মনে করার চেষ্টা করুন, অথবা ছোট একটি কথা মনে করে পরে সেটি বার বার বলার চেষ্টা করুন। মানসিক ব্যায়াম স্নায়ু সংযোগ শক্তিশালী করে এবং কাজের গতি বাড়ায়।
ঘুম থেকে উঠেই হাসুন
শুনতে হাস্যকর মনে হলেও, হাসলে ডোপামিন বৃদ্ধি পায়। ডোপামিন একটি নিউরোট্রান্সমিটার যা স্মৃতিশক্তি এবং কাজের প্রেরণা বাড়ায়। একটি মজার ভিডিও দেখুন, একটি কৌতুক পড়ুন, বা এমনকি নকল হাসি হাসুন (হ্যাঁ, এটি কাজ করে!) । সকালে হাসিমুখ আপনার মস্তিষ্ককে সুখী বোধ করাতে পারে!
ফোন ছাড়া মেমোরি ওয়াক
আপনার ফোনের দিকে মনোযোগ না দিয়ে ৫-১০ মিনিট বাইরে হাঁটতে যান। আপনার চারপাশে ফোকাস করুন - রং, শব্দ এবং গন্ধ খেয়াল করুন। এটি আপনার পর্যবেক্ষণের ক্ষমতাকে শক্তিশালী করে, আপনাকে আরও সচেতন হতে সাহায্য করে। হাঁটা মস্তিষ্কে রক্তপ্রবাহকে উদ্দীপিত করে, ফোকাস এবং সৃজনশীলতা বাড়ায়।
এক মিনিটের জন্য জার্নালিং
প্রতিদিন এক মিনিটের জার্নালিংও আপনার চিন্তাভাবনাকে গুছিয়ে তুলতে পারে এবং স্মৃতি ধরে রাখতে সাহায্য করতে পারে।
তিনটি জিনিস যার জন্য আপনি কৃতজ্ঞ, গতরাতে কি স্বপ্ন দেখেছিলেন, একটি জিনিস যা নিয়ে আপনি আজ ফোকাস করতে চান, এরকম ছোট ছোট জিনিস লিখাই যথেষ্ট।
কাজ করতে করতে চিউইং গাম
অদ্ভুত শোনাচ্ছে, তাই না? কিন্তু চিউইংগাম মস্তিষ্কে রক্তপ্রবাহ বাড়ায় এবং মনোযোগ বাড়াতে সাহায্য করে। এর মাঝে সবচেয়ে ভালো হল মিন্ট ফ্লেভারের চিউইংগাম। এটি আপনাকে ফ্রেশ রাখে এবং মস্তিষ্কের কার্যকলাপ বাড়ায়।