
ছবি: সংগৃহীত
মহিলাদের মধ্যে মুড সুইং সাধারণ বিষয়, যা হরমোনাল পরিবর্তন এবং স্বাস্থ্যগত সমস্যার কারণে হতে পারে। এটি আকস্মিক এবং তীব্রভাবে আবেগের পরিবর্তন ঘটায়, যা সবার ক্ষেত্রে ঘটতে পারে, তবে মহিলাদের মধ্যে এটি বেশি দেখা যায়।
মহিলাদের মুড সুইংয়ের সাধারণ কারণঃ
১। প্রীমেনস্ট্রুয়াল সিন্ড্রোম (PMS)
পিরিয়ড শুরুর ১-২ সপ্তাহ আগে PMS হয়, যা ৯০% মহিলাকে প্রভাবিত করে। এতে মুড সুইং, ক্লান্তি, খাবারের প্রতি আকর্ষণ এবং মাথাব্যথার মতো লক্ষণ দেখা দেয়, যা হরমোনাল পরিবর্তনের কারণে হয়।
২। প্রীমেনস্ট্রুয়াল ডিসফোরিক ডিসঅর্ডার (PMDD)
PMS-এর একটি তীব্র রূপ, PMDD পিরিয়ড শুরুর আগে বিরক্তি, বিষণ্নতা বা উদ্বেগ সৃষ্টি করে। এটি হরমোন বা সেরোটোনিনের পরিবর্তনের কারণে হতে পারে।
৩। প্রীমেনস্ট্রুয়াল সিম্পটম এক্সাসারবেশন (PME)
যে মহিলাদের আগে থেকেই উদ্বেগ বা বিষণ্নতা থাকে, তাদের PMS তাদের লক্ষণকে আরও খারাপ করতে পারে, যার ফলে মুড সুইং হতে পারে।
৪। গর্ভাবস্থা
গর্ভাবস্থার সময় হরমোনাল পরিবর্তন মুড সুইং সৃষ্টি করতে পারে, এবং অন্যান্য লক্ষণ যেমন বমি, ক্লান্তি ইত্যাদিও দেখা দিতে পারে।
৫। মেনোপজ এবং পেরিমেনোপজ
পেরিমেনোপজ (৪০-এর দশকের শুরুর দিকে) হরমোনের পরিবর্তন ঘটায়, যার ফলে মুড সুইং হতে পারে, যা হরমোন রিপ্লেসমেন্ট থেরাপি (HRT) দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হতে পারে।
এছাড়াও হরমোনাল পরিবর্তন কিশোরদের মধ্যে মুড সুইং সৃষ্টি করতে পারে। বর্ডারলাইন পারসোনালিটি ডিজঅর্ডার বা বাইপোলার ডিসঅর্ডারের মতো মানসিক রোগ মুড সুইং সৃষ্টি করতে পারে। মাইগ্রেন বা পার্কিনসন্স রোগের মতো অবস্থাও মুড প্রভাবিত করতে পারে। কিছু ওষুধ, যেমন অ্যান্টিডিপ্রেসেন্টস বা জন্মনিয়ন্ত্রণ পিল, মুড প্রভাবিত করতে পারে।
মুড সুইং মোকাবেলা করবেন কিভাবে?
মুড সুইং সাধারণ এবং এটি আপনার দোষ নয়, এটি মনে রাখা সহায়ক। মেডিটেশন বা অন্য কোন মাইন্ডফুলনেস পদ্ধতি মুড সুইং পরিচালনায় সহায়ক হতে পারে। ক্যাফেইন, অ্যালকোহল এবং ধূমপান পরিহার করুন, যা লক্ষণগুলোকে আরও খারাপ করতে পারে। একটি নিয়মিত ঘুমের রুটিন মুড সুইং কমাতে সাহায্য করতে পারে। শারীরিক কার্যকলাপ মুড ঠিক রাখার জন্য হরমোনের উৎপাদন বাড়াতে সাহায্য করে। প্রকৃতিতে সময় কাটানো বা সৃজনশীল কাজে মনোযোগ দেওয়াও মনের উপর ইতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।
কখন চিকিৎসকের কাছে যাওয়ার প্রয়োজন?
যদি মুড সুইং দীর্ঘস্থায়ী বা তীব্র হয় এবং দৈনন্দিন জীবনে প্রভাব ফেলে, তবে চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করা প্রয়োজন। যদি মুড সুইং আত্মহত্যার চিন্তা সৃষ্টি করে, তবে অবিলম্বে একজন চিকিৎসক বা মানসিক স্বাস্থ্য পেশাদারের সঙ্গে কথা বলা উচিত।
আবীর