
ছবি: সংগৃহীত
গ্রীষ্মকাল আসার আগেই রাজধানীতে বেড়েছে কিউলেক্স মশার উৎপাত। যখন ক্ষতিকর এই কীটে অতিষ্ঠ নগরবাসী তখন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) দাবি, মশা নিধনে তারা শতভাগ সফল। আর কীটতত্ববিদ বলছেন, বর্ষা আসার আগেই মশা নিধনে কার্যকরী পদক্ষেপ না নিলে মশাবাহিত রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকিতে পড়বে নগরবাসী।
স্বাস্থ্য অধিদফতরের তথ্য বলছে, ঢাকা এবং ঢাকার বাইরে মিলে চলতি বছর এখন পর্যন্ত ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ১ হাজার ৪৭৪ জন। এর মধ্যে মারা গেছেন ১৩ জন। ২০২৪ সালে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে ১ লাখ ১ হাজার ২১৪ জন হাসপাতালে ভর্তি হন। এর মধ্যে মারা যান ৫৭৫ জন। এক বছরে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তির এ সংখ্যা তৃতীয় সর্বোচ্চ। আর মৃত্যুর হিসাবে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ।
আগে শুধু বর্ষা মৌসুমে মশার উপদ্রব বাড়লেও এখন বছরজুড়েই মশায় অতিষ্ঠ নগরবাসী। রাজধানীর দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের বিভিন্ন এলাকায় সময় সংবাদের ক্যামেরায় ধরা পড়ে মশার বর্তমান চিত্র। রাজধানীর ডেমরারসহ আশপাশের বেশ কয়েকটি এলাকার বেশিরভাগ ড্রেন, কালভার্ট, পরিত্যক্ত ডোবা ও পুকুর যেন মশার অভয়ারণ্য। বেশিরভাগ প্লট ও ফাঁকা জায়গায় ময়লা আবর্জনায় পূর্ণ।
বাসিন্দারা বলছেন, মশার জন্য কোথাও বসা দায়। মশার কামড় ও সহ্য করা যায় না। কয়েল জ্বালালেও যায় না। দিন ও রাতের চিত্র একইরকম।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সিটি কর্পোরেশনের বিরুদ্ধে ব্যর্থতার অভিযোগ তুলে স্থানীয়রা বলছেন,ওষুধ ছিঁটানো ও ফগার মেশিনের ধোঁয়া কেবলই লোক দেখানো।
বাসিন্দাদের অভিযোগের বিষয়ে জানতে ঢাকা দক্ষিণ সিটির নগর ভবনে যায় সময় সংবাদ। প্রথমে দায়িত্বশীল কোনো কর্মকর্তা কথা বলতে রাজি হননি। অবশেষে অনেক নয়ছয়ের পর, এক জুনিয়র কর্মকর্তাকে পাঠানো হয় কথা বলতে।
নগরবাসীর অভিযোগকে বিচ্ছিন্ন উল্লেখ করে মশা নিধনে শতভাগ সফলতার গল্প শোনান ডিএসসিসির সহকারী স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. মো. নূর হোসেন।
তিনি বলেন, ‘মশার ওষুধ যথাযথ মানসম্মত কি না নিশ্চিত করার পর মাঠ পর্যায়ে প্রয়োগ করি। মশা নিধনে আমরা শতভাগ সফল।’
এদিকে এডিস মশা নিধনে এখনই কার্যকর ব্যবস্থা না নিলে বর্ষায় ডেঙ্গু পরিস্থিতি ভয়াবহ রূপ ধারণ করতে পারে বলে আশঙ্কা কীটতত্ববিদের।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রাণীবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক শেফালী বেগম বলেন, ‘যেহেতু শুষ্ক মৌসুম যত্রতত্র এডিশ মশা প্রজনন করতে পারে না। কিন্তু কনস্ট্রাকশন সাইডগুলোতে গেলে এডিশ মশার লার্ভা পাওয়া যাচ্ছে। এসব জায়গা লক্ষ্য করে যদি বার বার ওষুধ ছিঁটানো যায়, তাহলে রাজধানীবাসী বর্ষাকালে কিছুটা সুফল ভোগ করতে পারবেন বলে মনে হয়।’
সামনে বর্ষা মৌসুম এখন থেকে সবার সচেতন হওয়া উচিত এবং সরকারের গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নেয়া উচিত বলে মনে করছেন নগরবাসী।
ফয়সাল