![কেন ফিরে আসে স্তন ক্যানসার, গবেষণায় চাঞ্চল্যকর তথ্য কেন ফিরে আসে স্তন ক্যানসার, গবেষণায় চাঞ্চল্যকর তথ্য](https://www.dailyjanakantha.com/media/imgAll/2024April/ee-71-2502120227.jpg)
ছবি সংগৃহীত
স্তন ক্যানসারের রোগীদের মধ্যে কিছু রোগী চিকিৎসা শেষেও কেন সুস্থ হন না এবং ক্যানসার কেন ফিরে আসে, তার রহস্য অনেক দিন ধরেই বিজ্ঞানীদের কাছে একটি জটিল প্রশ্ন ছিল।
এবার দীর্ঘ দুই বছর পর বাংলাদেশে কল্যাণীর ‘ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব বায়োমেডিক্যাল জিনোমিক্স’ (এনআইবিএমজি)-এর বিজ্ঞানীরা এর সমাধান করেছেন বলে দাবি করেছেন। তাঁদের গবেষণাপত্রটি প্রকাশিত হয়েছে ‘কমিউনিকেশন বায়োলজি’ জার্নালে।
গবেষণায় কী উঠে এল?
বিজ্ঞানীদের দলটি যাদের নেতৃত্ব দিয়েছেন এনআইবিএমজি-র অধ্যাপক নিধান বিশ্বাস এবং সুদীপ গুপ্ত, স্তন ক্যানসারের সবচাইতে পরিচিত ধরন ইআর/পিআর পজিটিভ এবং এইচইআর২ নেগেটিভ নিয়ে গবেষণা করেছেন। স্তন ক্যানসারের ক্ষেত্রে হরমোন থেরাপি, যেমন অ্যান্টি-ইস্ট্রোজেন বা অ্যারোমাটিজ় ইনহিবিটার বেশ কার্যকর হতে পারে। তবে কিছু রোগীর ক্ষেত্রে চিকিৎসা না দেওয়ার কারণ হিসেবে ‘ড্রাগ রেজিস্ট্যান্স’ বা ওষুধে প্রতিরোধ সৃষ্টির পেছনে জিনগত কারণ রয়েছে কি না, তা ছিল অস্পষ্ট।
গবেষণাটি সঠিকভাবে করার জন্য, গবেষকরা প্রথমে স্তন ক্যানসারে আক্রান্ত রোগীদের জিনোমিক সিকোয়েন্সিং করেছেন এবং দুটি গ্রুপের মধ্যে তুলনা করেছেন। এক দল ছিল যারা হরমোন থেরাপির পরে সুস্থ হয়েছেন এবং ক্যানসার ফিরে আসেনি, আরেক দল ছিল যারা খুব দ্রুত ক্যানসার ফিরে পেয়েছেন।
গবেষকরা জানতে পেরেছেন, যাদের ক্যানসার ফিরে এসেছে, তাদের মধ্যে ৩টি জিনে ‘রেজিস্ট্যান্স মিউটেশন’ পাওয়া গেছে:
- টিপি৫৩
- পিআইকে৩সিএ
- ইএসআর১
এছাড়া, এই রোগীদের ‘জিনোম ইনস্টেবিলিটি’ এবং টেলোমিয়ারের দৈর্ঘ্য কমে যাওয়াও লক্ষ্য করা গেছে। এর অর্থ হলো, তাদের টিউমার কোষের ডিএনএ অনেক বেশি পরিবর্তিত, এবং শরীরের ডিএনএ মেরামতের প্রক্রিয়া সঠিকভাবে কাজ করছে না।
নিধান বিশ্বাস জানিয়েছেন, “যদি স্তন ক্যানসার রোগীকে অপারেশন করার পর জেনেটিক পরীক্ষা করা হয় এবং যদি এই পরিবর্তনগুলো ধরা পড়ে, তবে রোগীকে নিয়মিত পর্যবেক্ষণে রাখা যেতে পারে। এর ফলে, সামান্য উপসর্গ দেখলেই দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া সম্ভব।”
ক্যানসার শল্যচিকিৎসক গৌতম মুখোপাধ্যায় বলেছেন, “যাঁরা চিকিৎসায় সুস্থ হচ্ছেন না, তাঁদের ক্ষেত্রে এই জিনগত পরিবর্তনগুলি দায়ী হতে পারে। ভবিষ্যতে এই তথ্য চিকিৎসার ক্ষেত্রে অনেক সাহায্য করবে।”
এই গবেষণা ক্যানসারের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে নতুন আশার সঞ্চার করেছে এবং রোগীদের আরও সঠিক ও কার্যকরী চিকিৎসা প্রদানে সহায়ক হবে বলে বিজ্ঞানীরা আশা প্রকাশ করেছেন।
আশিক