ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ২৯ মাঘ ১৪৩১

অনিয়মিত পিরিয়ড: সচেতনতা ও সমাধান

প্রকাশিত: ২১:২১, ১০ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

অনিয়মিত পিরিয়ড: সচেতনতা ও সমাধান

ছবিঃ সংগৃহীত।

প্রতি মাসে সঠিক সময় পিরিয়ড হওয়া অনেকের জন্য স্বাভাবিক ঘটনা হলেও, অনিয়মিত পিরিয়ড একটি গুরুতর স্বাস্থ্য সমস্যা হয়ে উঠতে পারে। এটি নারী স্বাস্থ্য সম্পর্কিত একটি সাধারণ সমস্যা, যা নানা কারণে হতে পারে। অনিয়মিত পিরিয়ডের সমস্যা অনেক সময় নারীদের শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যে প্রভাব ফেলে, এবং এর চিকিৎসা ও সচেতনতা অত্যন্ত জরুরি।

অনিয়মিত পিরিয়ডের কারণগুলোর মধ্যে অন্যতম হলো:

হরমোনাল অস্বাভাবিকতা: হরমোনের অসমতা, বিশেষ করে থাইরয়েডের সমস্যা বা পলিসিস্টিক ওভারি সিনড্রোম (PCOS) এর কারণে পিরিয়ডের সময় পরিবর্তিত হতে পারে।

স্ট্রেস: মানসিক চাপ এবং উদ্বেগের কারণে পিরিয়ডের সাইকেল ব্যাহত হতে পারে। দীর্ঘ সময় ধরে স্ট্রেস থাকার কারণে শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যের ওপর বিরূপ প্রভাব ফেলে।

অস্বাস্থ্যকর জীবনযাপন: অনিয়মিত খাদ্যাভ্যাস, পর্যাপ্ত বিশ্রামের অভাব এবং অতিরিক্ত শারীরিক পরিশ্রমও পিরিয়ডের সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে।

ওজনের পরিবর্তন: অতিরিক্ত ওজন অথবা অল্প ওজনের কারণে মাসিক চক্রের সময় পরিবর্তিত হতে পারে। বিশেষ করে অতিরিক্ত শারীরিক স্থূলতা বা অত্যধিক ক্ষুদ্রতা পিরিয়ডের সাইকেল প্রভাবিত করতে পারে।

গর্ভাবস্থা ও গর্ভপাত: গর্ভাবস্থা বা গর্ভপাতের কারণে পিরিয়ডে অনিয়ম দেখা দিতে পারে। এছাড়া, জন্মনিয়ন্ত্রণ পিল বা অন্যান্য হরমোনাল চিকিৎসাও পিরিয়ডের সাইকেল পরিবর্তন করতে পারে।


অনিয়মিত পিরিয়ডের সমাধান কী?

১. সঠিক চিকিৎসা: পিরিয়ডের অনিয়মের জন্য সঠিক চিকিৎসা নিতে হবে। বিশেষ করে হরমোনাল সমস্যার জন্য চিকিৎসকের পরামর্শ অত্যন্ত জরুরি।

২. স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন: নিয়মিত ব্যায়াম, সঠিক খাদ্যাভ্যাস, পর্যাপ্ত ঘুম ও মানসিক চাপ কমানোর চেষ্টা করা দরকার। অস্বাস্থ্যকর জীবনযাপন যেমন অতিরিক্ত তেল ও চিনি জাতীয় খাবার এড়িয়ে চলা উচিত।

৩. স্ট্রেস ম্যানেজমেন্ট: যোগব্যায়াম, ধ্যান বা অন্য কোন মানসিক শান্তির উপায় গ্রহণ করা উচিত। দৈনন্দিন জীবনে স্ট্রেস কমানোর জন্য কাজের চাপের সঠিক ব্যালান্স রাখা জরুরি।

৪. ওজন নিয়ন্ত্রণ: সঠিক শারীরিক ওজন বজায় রাখা পিরিয়ডের সঠিক সময়ের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। অতিরিক্ত বা কম ওজন উভয়ই পিরিয়ডের সমস্যার সৃষ্টি করতে পারে।

৫. চিকিৎসকের পরামর্শ: যদি পিরিয়ডে দীর্ঘস্থায়ী অস্বাভাবিকতা দেখা দেয়, তবে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত। প্রয়োজনে আল্ট্রাসোনোগ্রাফি বা হরমোনাল টেস্ট করা যেতে পারে।

অনিয়মিত পিরিয়ড শারীরিক স্বাস্থ্যের পাশাপাশি মানসিক স্বাস্থ্যেরও ওপর প্রভাব ফেলতে পারে। সঠিক সময় চিকিৎসা এবং জীবনযাপনের ক্ষেত্রে সচেতনতা বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। প্রাথমিকভাবে এসব সমস্যার সমাধান করা না হলে, তা আরও গুরুতর হতে পারে। তাই, এই সমস্যা অবহেলা না করে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়া উচিত।

মুহাম্মদ ওমর ফারুক

×